সদ্য বিদায়ী বছরে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় বেশ কয়েকটি হ ত্যা কা ণ্ড ও রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। যেগুলো ছিল বছরজুড়ে বহুল আলোচিত। বছরের শুরুতে এক নারীকে আ গু নে পু ড়ি য়ে হ ত্যা, শেষ দিকে সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালককে গ লা কে টে খু ন ও আগষ্টে যুবকের পায়ের রগ কে টে হত্যা কা ণ্ড এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। এছাড়াও ৭টি আ ত্ম হ ত্যা ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, গত বছরের ১৭ জানুয়ারী ভোরের দিকে পৌরশহরের ইকড়ছই আলিয়া মাদরাসার পিছনের চারা ক্ষেত থেকে আগুনে পোড়া অজ্ঞাত এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে একটি কেরোসিনের বোতল উদ্ধার করা হয়। নিহত পিয়ারা বেগম (৫০) উপজেলার টংগর গ্রামের চন্দন মিয়ার স্ত্রী। এব্যাপারে জগন্নাথপুর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামী করে একটি হ ত্যা মামলা হয়েছে।
২৬ জানুয়ারী রানীগঞ্জ ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামের ওয়াজ মাহফিল কে কেন্দ্রে করে সং ঘ র্ষে আহত হন ছমির আলী (৬৫)। ২ দিন পর সিলেট ওসমানি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
১১ অক্টোবর ইনাতগঞ্জ আশ্রায়ন প্রকল্পের বাসিন্দা আল আমিনের শিশুপুত্র সানজিদ আলমের (৯) এর মরদেহ এক মাছের ফিশারি থেকে উদ্ধার করা হয়। ৭ অক্টোবর ওই শিশুকে অপহরণের পর খু ন করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ হ ত্যায় জড়িত তিন অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করে।
৫ আগষ্ট পৌরসভার ইনাতনগরের মল্লিক আকমল হোসেনের ছেলে মল্লিক আফজল হোসেন কে (২৯) পূর্ব বিরোধের জের ধরে ধারালো অ স্ত্র দিয়ে পায়ের রগ কেটে হ ত্যা করে প্রতিপক্ষ। এঘটনায় তার মা বাদি হয়ে ১৮জনের নামে মামলা করেন।
৭ নভেম্বর উপজেলা চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়নের বাউধরন গ্রামের মৃত শাফিকুর রহমানের ছেলে কিশোর রায়হান মিয়া (১৬) হামলার ঘটনায় আহতাবস্থায় মারা যায়। এ ঘটনায় নিহতের মা রুবি বেগম ৬ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হ ত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ঘটনার মূলহোতাসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করে।
১২ নভেম্বর পাইলগাঁও ইউনিয়নের বাগময়না গ্রামে মসজিদের ভবন নির্মাণ নিয়ে সুজাত মিয়া ও আবুল কয়েছের পক্ষের লোকজনের মধ্যে সং ঘ র্ষের ঘটনায় সুজাত মিয়া (৮০) নিহত হন। আ হ ত হন আরো ৫০ জন। এ ঘটনায় ৫৭ জনের নাম উল্লেখ করে হ ত্যা মামলা দায়ের করা হয়। পুলিশ মাত্র ৫ জনকে গ্রেপ্তার করতে পেরেছে।
১৭ নভেম্বর রাত ৯টার দিকে সুজিত দাস (৩০) নামের এক অটোরিকশা চালককে ধারালো ছু রি দিয়ে গলা কে টে হ ত্যা করে লাশ রানীগঞ্জ সেতুর ওপর র ক্তা ক্ত অবস্থায় ফেলে দিয়ে অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যায় হ ত্যা কা রী রা। নি হ ত ওই চালক উপজেলার চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের গোপরাপুর গ্রামের সোহাগ দাসের ছেলে। আলোচিত এ খু নে র ঘটনায় পুলিশ র্যা বের সহযোগিতায় হ ত্যা কা ণ্ডে জড়িত মূলহোতা উপজেলার সালদিকা গ্রামের আলী হায়দারসহ তিন জনকে গ্রে প্তা র করে। উদ্ধার করা হয় ছিনতাই হওয়া অটোরিকশা ও হ ত্যা য় ব্যবহৃত একটি ছু রি।
১৯ ডিসেম্বর উপজেলার পাটলী ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামে অনলাইনে জুয়া খেলতে নিষেধ করায় স্বামীর চেয়ারের আঘাতে স্ত্রী নাজিয়া বেগম (২৬) নি হ ত হন। ঘটনার পর স্বামী আমজাদ হোসেন পালিয়ে গেলেও পরে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। এঘটনায় হ ত্যা মামলা হয়েছে।
১১ আগষ্ট জগন্নাথপুরের পাইলগাঁও ইউনিয়নের হাড়গ্রামে ঘরের তীরের সঙ্গে দলীয় ওড়না পেঁচানো ঝুলন্ত অবস্থায় রাজমিস্ত্রী আলামিন মিয়া (২৪) মরদেহ দেখতে পান স্বজনরা। এসময় তার কব্জিতে কাঁটা দাগ ও ঘরের বিভিন্নস্থানে রক্তের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এ মৃ ত্যু কে ঘিরে রহস্য সৃষ্টি হয়।
২২ জুন উপজেলার সমধল গ্রামে রিংকর বিশ্বাস (১৬) নামের এক কিশোর গাছ থেকে পড়ে মারা যায় বলে শুনা গেলেও এ মৃ ত্যু ঘিরে রহস্য দেখা দেয়। মৃত্যুর ৬ দিন পর আদালতের নির্দেশে মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়।
জগন্নাথপুর থানার ওসি রুহুল আমীন বলেন, আলোচিত হ ত্যা কা ণ্ডে জড়িত ঘাতকদের আমরা গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরন করেছি। অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।