আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ফ্রান্সের নতুন প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করা হবে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। এর আগে পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে হেরে বিদায় নেন মিশেল বার্নিয়ে।
বৃহস্পতিবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ১০ মিনিটের ভাষণে ম্যাক্রোঁ বিরোধী দলের চাপকে প্রত্যাখ্যান করে বলেন, ২০২৭ সালের মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি তার পদে সম্পূর্ণভাবে বহাল থাকবেন।
প্রধানমন্ত্রী পদে থাকার সংক্ষিপ্ত সময়ে বার্নিয়ের নিষ্ঠার জন্য তাকে ধন্যবাদ জানান প্রেসিডেন্ট। তিনি অভিযোগ করেন, ফরাসি উগ্র ডানপন্থী ও কঠোর বামপন্থীরা সরকারের পতন ঘটাতে অ্যান্টি-রিপাবলিকান ফ্রন্ট তৈরি করেছে।
বুধবার ফরাসি পার্লামেন্ট সদস্যরা তিন মাস আগে ম্যাক্রোঁর নিযুক্ত করা প্রধানমন্ত্রী বার্নিয়েকে অপসারণের পক্ষে ব্যাপকভাবে ভোট দেন।
৬০ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে এই প্রথম ফরাসি পার্লামেন্ট কোনো সরকারকে অনাস্থা ভোটে সরিয়ে দিল। ম্যাক্রোঁ এই পদক্ষেপকে নজিরবিহীন বলে আখ্যা দিয়েছেন।
জবাবে বিরোধী ডানপন্থী ন্যাশনাল র্যালির (আরএন) নেতা মেরিন লে পেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে বলেন, ম্যাক্রোঁকে ছোট করে মনে করিয়ে দিই, যিনি সংবিধানের রক্ষক। ক্ষমতাচ্যুত করা প্রজাতন্ত্রের বিরুদ্ধে নয়। সংবিধানে এটি উল্লেখ করা আছে।
বার্নিয়েকে পদচ্যুত করার জন্য যে অনাস্থা ভোট আনা হয়েছিল, তা উত্থাপন করে বামপন্থী জোট নিউ পপুলার ফ্রন্ট (এনএফপি) ও লে পেনের আরএন। প্রধানমন্ত্রী সামাজিক নিরাপত্তা বাজেট নিয়ে বিশেষ ক্ষমতা ব্যবহার করলে সরকারকে পদচ্যুত করতে দুই দল এক হয়ে যায়।
বার্নিয়ের বিরুদ্ধে প্রস্তাবের পক্ষে মোট ৩৩১ জন এমপি ভোট দেন, যা পাস করার জন্য প্রয়োজনীয় ২৮৮টি ভোটের চেয়ে অনেক বেশি। বৃহস্পতিবার তিনি পদত্যাগ করেন। বাজেটটিও আটকে যায়। নতুন সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত তিনি ও তার মন্ত্রীরা নামমাত্র দায়িত্বে থাকবেন। ম্যাক্রোঁর ভূমিকা অপরিবর্তিত থাকবে।
জুলাইয়ে তড়িঘড়ি করে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন ম্যাক্রোঁ। ফলে পার্লামেন্টে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয় এবং রাজনৈতিক সংকটকে আরও বাড়িয়ে দেয়।
তিনি স্বীকার করেন, অনেকেই আমাকে দোষারোপ করেছেন এবং আমি জানি, অনেকেই এখনও আমাকে দোষারোপ করছেন। এটি সত্য এবং এর দায় আমার।
ভোটারদের সরাসরি উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, তার কিছু রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দায়িত্বের পরিবর্তে বিশৃঙ্খলা বেছে নিয়েছে এবং তারা ভোটারদের সম্পর্কে ভাবছে না, বরং তাদের দৃষ্টি আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন।
পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, সে সম্পর্কে ম্যাক্রোঁ কোনো ইঙ্গিত দেননি, তবে তিনি বলেন যে তাদের তাৎক্ষণিক নজর থাকবে ২০২৫ সালের বাজেটে।
কে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন, তা নিয়ে জল্পনা চলছে, সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী সেবাস্তিয়েন লেকর্নু, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রিটেলো এবং কেন্দ্রীয় সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ফ্রাঁসোয়া বাইরু।