সিলেট সুরমা ডেস্ক : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় (৪ই আগস্ট) সিলেট কোর্ট পয়েন্টে ছাত্র-জনতার মিছিলে হামলা ও গুলির ঘটনায় সাবেক এক সংসদ সদস্য ও তিন পুলিশ কর্মকর্তার নামে মামলা করা হয়েছে।বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) সিলেটের অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন ফেঞ্জুগঞ্জ উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের আব্দুছ ছালামের ছেলে মো. আব্দুর রহমান।বাদী মামলায় ১০১ জনের নাম উল্লেখ করনে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ২৫০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। কোতোয়ালী সি্মিআর মামলা নং-৯৯৯/২০২৪ ,তারিখ ২৯/০৯/২০২৪ইং। মামলার আরজিতে আবদুর রহমান উল্লেখ করেন, ৪ আগস্ট বেলা সাড়ে তিনটার দিকে বন্দরবাজার এলাকায় মধুবন মার্কেটের সামনে আসামিরা দেশি-বিদেশি বন্দুক দিয়ে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার উদ্দেশে গুলি ছোড়েন। এ ছাড়া সাউন্ড গ্রেনেড ও ককটেল বিস্ফোরণ করে অনেককে গুরুতর আহত করেন। এ সময় বাদী মারধরের শিকার হন এবং তাঁর টাকা ছিনতাই হয়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। এ মামলায় এজারনামীয় অন্য আসামিরা হলেন- মামলায় সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, মহানগর পুলিশের তৎকালীন উপকমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ,মো: সাদেক দস্তগীর কাউছার,কল্লোল গোস্বামী, আফতাব হোসেন খান, শেখ শফিকুর রহমান, মুহিবুর রহমান উরফে বম কামাল , ফরহাদ বক্স, সুভ্রত পুরকায়স্ত, আব্দুল হাই মামুন, আশফাকুল ইসলাম সাব্বির, পান্না দাস, পলাশ দাস, মো. নুরুল ইসলাম খাঁন, দক্ষিণ কাজল শাহবাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাহিদ আহমদ বাবলু, শরিফ মিয়া, মুজিবুর রহমান মুজিব, জেলা ছাত্রলীগ নেতা মৃনাল কান্দি দাস, মো. ছায়েদ আলী, মো. আমীর আলী, তারেক, আব্দুল হাই মামুন, শেখ সুয়েব আহমদ মজনু, শেখ হেলাল আহমদ, আছমত আলী আমীর, আশফাকুল ইসলাম ছাব্বিরসহ ১০১ একজনের নাম উল্লেখ করে এ মামালা হয়ে । এর আগে ২ (সেপ্টেম্বন ) সিলেট সদর (কোতোয়ালী) থানাধীন পূর্ব লামাপাড়া এলাকার ফয়েজ উদ্দিনের ছেলে সেলিম আহমদ সিলেট কোতোয়ালী থানায় ৮৭ জনের নাম উল্লেখ করে আর ১০০/১৫০ জনকে অজ্ঞাত করে মামলা দায়ের করেন ।যাহা কোতোয়ালী থানার মামলা নং-২ , তারিখ ০২/০৯/২০২৪ইং। এজাহার নামীয় আসামী হলেন সাহেদ গাজী, সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন খান, আফছর আজিজ , জেলা যুবলীগের সভাপতি ভি.পি শামীম,আব্দুর রকিব বাবলু , সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের ত্রান ও সমাজ কল্যান সম্পাদক মোবাশ্বির আলী, রফিকুল ইসলাম ঝলক ,জকিগঞ্জ উপজেলা পরষিদের সাবেক চেয়ারম্যান লোকমান উদ্দিন চৌঃ, সিলেট জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রেজা , খুরশেদ আলী মেম্বার , মাজহারুল ইসলাম সুমন ,ইমন, হোসেন , সজীব , আফজল , সৈয়দ রেজাউল করিম জিহান, পিযুষ কান্তি দে , ২নং ওয়ার্ড, কাউন্সিলর সম্রাট কর , শেখ শফিকুর রহমান , এমদাদুল হক প্রমূখ । বাদী মামলায় উল্লেখ করেন , বিগত ১৯/০৭/২০২৪ইং তারিখ দুপুর অনুমান ২.৩০ ঘটিকার সময় স্থানীয় কোর্ট পয়েন্টে বৈষম্য বিরোধী ছাত্রজনতার উদ্যোগে আয়োজিত ছাত্র জনতার বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ চলাকালীন সময়ে দুষ্কৃতিকারী আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ ও ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীরা দেশী বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, দেশীয় অস্ত্র, ককটেল, রামদা, লোহার পাইপ, হকিষ্টিক, লোহার রড ও নাম না জানা বিভিন্ন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে বর্ণিত সমাবেশে হামলা করে। আসামীদের হাতে থাকা বন্দুক দিয়ে সমাবেশে ছাত্র জনতার উপর নির্বিচারে এলোপাতারী গুলি করিতে আরম্ভ করে। তখন সমাবেশের ছাত্র জনতা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়িলে অন্যান্য আসামীগনের হাতে থাকা কাটা বন্দুক, নাইন শুটার, পিস্তল দিয়ে সন্ত্রাসীরা গুলি চালাতে থাকলে আমিসহ (বাদী) অসংখ্য ছাত্র জনতাকে গুলিবিদ্ধ ও গুরুতর – আহত হয়।এদিকে সিলেটে সদ্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী-এমপিসহ প্রভাবশালী সব আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। সিলেটের বেশিরভাগ নেতারাই বাসাবাড়ি ছেড়ে চলে যান আত্মগোপনে। কিন্তু দেশের ভেতর গা ঢাকা দিয়ে থাকা নিরাপদ মনে না করে তারা পার্শ্ববর্তী ভারত, আমেরিকা, কানাডা লন্ডনসহ বিভিন্ন দেশে পাড়ি দিয়েছেন অনেকে।অন্যদিকে পুলিশ এসব পলাতক আসামিদের গ্রেফতার করার জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।