স্টাফ রিপোর্টার : আমি আপনাদের মধ্যে এসেছি কে কার বন্ধু, কে কার আত্মীয়, কে কার স্বজন এগুলো দেখার জন্য। মনে রাখবেন আমরা প্রথমে মানুষ তারপর ধর্মীয় পরিচয়। মানুষ মানুষের মধ্যে পার্থক্য থাকার কারণে সৃষ্টিকর্তাকে চিনতে পারে। পবিত্র কুরআনে একটি আয়াত আছে, আমি মানুষকে, জাতিকে, ভাষায়, গুষ্টিকে বিভাজন করেছি এইজন্য তারা যেন বুঝতে পারে আমার রহস্য কত কঠিন ও জটিল। তবে এইসব কিছুর মধ্যেও রাজনীতি হলো সামান্য একটা অংশ মাত্র। তবে অস্বাভাবিক ও অপ্রাকৃতিক রাজনীতি করা আমি মনে করি না। যে রাজনীতি ইজ্জত চলে যায় এই রাজনীতির আমার দরকার নেই। এখন রাজনীতি হচ্ছে ভাব দেখানো, বিত্তশালী, সম্পদশালী হওয়ার একটি অন্যতম হাতিয়ার। মনে রাখুন দুর্নীতির কোন ধর্ম নেই, কোন রাজনীতি নেই, শিক্ষার কোন ধর্ম নেই, স্বাস্থ্যের কোন ধর্ম নেই, উন্নয়নের কোন ধর্ম নেই। রাজনীতি কোন প্রভুত্ব না। যদি কারো সম্মান ও ভালোবাসা মানুষ মনে করে না, কাউকে পছন্দ না করে এ কোন ধরনের রাজনীতি। এই রাজনীতি আমাদের করার কোন প্রয়োজন নেই। আমরা দিরাই-শাল্লার মানুষ সবাই ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে মানুষের জীবন যাত্রার মান উন্নয়নে একত্রে কাজ করব এই প্রতিশ্রুতি আপনাদের দিতে চাই।
১৪ সেপ্টেম্বর (সোমবার) বেলা ১১টায় উপজেলা গণমিলনায়তনে সম্প্রীতি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যের তিনি একথা বলেন।
সম্প্রীতি সমাবেশ শাল্লা উপজেলার হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি ও বলরামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গঙ্গেঁশ চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং মাওলানা সুহেল আহমেদ, সাগর আহমেদ ও জগৎজ্যোতি রায়ের যৌথ সঞ্চালনায় এতে শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন সাংবাদিক ও সমাজকর্মী আমির হোসাইন।
আরো বক্তব্য রাখেন, ৪নং শাল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুস সাত্তার, ৩নং বাহাড়া ইউপি চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ চৌধুরী নান্টু, ২নং হবিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুবল চন্দ্র দাস,
পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক তরুণ কান্তি দাস, গোবিন্দ চন্দ্র সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহিপাল দাস মিল্টন, শ্যামসুন্দর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নীহার চৌধুরী, জামায়াত ইসলামের শাল্লা শাখার সভাপতি হাফেজ নূরে আলম সিদ্দিকি, খালিয়াজুরি উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা রুহুল আমিন, গোবিন্দ চন্দ্র সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক সজল চৌধুরী, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বিধান চন্দ্র চৌধুরী, থানা মসজিদের ইমাম মাওলানা আবুল কাশেম, শাল্লা উপজেলা প্রেসক্লাবের (ভারপ্রাপ্ত) সভাপতি বাদল চন্দ্র দাশ ও সাংবাদিক বকুল আহমদ প্রমুখ।
পরে বিকাল ৩টায় ডুমরা রামকৃষ্ণ আখড়া প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সুপ্রীম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী এডভোকেট শিশির মনির সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপানদের পূজো আপনি যেখানে সুবিধা সেখানেই করবেন। এখানে পাহারা অন্য কেউ দিতে হবে কেন ? তাহলে স্বাধীনতার থাকে কি ? পুলিশের পাহারা যেখানে লাগে সেখানে ধরে নিতে হবে মন স্বাধীন নয়। আমরা ধর্মীয় বিভেদের রুপরেখাকে ভেঙ্গে দিতে হবে। নতুন প্রজন্মকে এই ধরনের পরাধীনতা থেকে পরিপূর্ণভাবে মুক্তি দিতে হবে। আমরা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক এটাই মূল পরিচয় ধর্ম কোন পরিচয় না। কোন দুর্বলতা নিয়ে নয় অধিকার নিয়ে ওপেন করুন এটা আমার বাড়ি, আমার ঘর, আমার সম্পদ, আমার উপাসনালয়। কারো বাড়ি থেকে কাউকে ডিসপ্লেস করা যায় কি ? আপনি বিতাড়িত করবেন আবার ধর্মের কথা বলবেন আসলে তারাই বক ধার্মিক। আমরা আপনাদের বন্ধুর মতো থাকবো, প্রভুত্ত্ব ভুলে যাবেন। কোন মানুষ কোন মানুষের প্রভু হতে পারে না। প্রভুর ক্যাপাসিটি একমাত্র উপরওয়ালার। বাকি সব বন্ধু বান্ধবের ভিত্তিতে পারস্পরিক সহযোগিতা করা। আমি আশা করি আমার কথা শুধু কথায় থাকবে না, বাস্তবে রূপান্তরিত হবে ইনশাল্লাহ।
সম্প্রীতি সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন গণমাধ্যমকর্মী সহ শাল্লা উপজেলার সর্বস্তরের মানুষ।