মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে চারটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে থেকে পৌরসভার ময়লার ভাগাড় সরানোর দাবিতে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে থেকে ময়লার ভাগাড় অপসারণের দাবিতে ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বের হন। মিছিলটি কলেজ সড়ক হয়ে চৌমুহনা চত্বরে আসার পর শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।
শিক্ষকদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- শ্রীমঙ্গল সরকারী কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ও শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক মো. সাইফুল ইসলাম। এ সময় শিক্ষার্থীদের পক্ষে বক্তব্য দেন শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজের অনার্স শিক্ষার্থী নাফিসা, আরিফুল ইসলাম, মৌমিতা, রিমা, সাফিয়া বেগম প্রমুখ।
একই স্থানে পাশাপাশি চারটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও একটি আবাসিক জনবহুল এলাকায় প্রতিদিন ফেলা হচ্ছে পুরো উপজেলা শহরের সব ময়লা-আবর্জনা। এতে দুর্গন্ধে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন পথচারী ও শিক্ষার্থীসহ শহরবাসী। এতদিন ময়লার ভাগাড় সরানোর দাবি নিয়ে স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন সময়ে প্রতিবাদ জানিয়েও কোনো সমাধান হচ্ছে না। তবে দুর্ভোগ লাঘবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন শ্রীমঙ্গল পৌরসভার প্রশাসক (অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক) মোসা. শাহিনা আক্তার।
সরেজমিন দেখা গেছে, সরকারি কলেজ রোড এলাকার পাশেই গড়ে তোলা হয়েছে ময়লার ভাগাড়। শ্রীমঙ্গল পৌরসভার নির্দিষ্ট কোনো ডাম্পিং স্টেশন না থাকায় এখানেই পুরো উপজেলা শহরের সারা দিনের সব ময়লা ফেলেন পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। এতে প্রায় ৫৩ বছর ধরে এ এলাকায় জমে আছে ময়লা-আবর্জনার বিশাল স্তুপ। পশু-পাখির মাধ্যমে এসব ময়লা-আবর্জনা বিভিন্নভাবে ছড়িয়ে পড়ায় মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন পরিবেশ। ভাগাড়ের পাশেই রয়েছে শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজ, দি বার্ডস রেসিডেন্সিয়্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং গাউছিয়া শফিকিয়া সুন্নিয়া দাখিল মাদ্রাসা ও মসজিদসহ চার চারটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও আবাসিক এলাকা। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ময়লার দুর্গন্ধে পেটের পিড়াসহ রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন তারা। দুর্ভোগ লাঘবে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে প্রতিবাদ করেও কোনো সুরাহা হচ্ছে না।
শ্রীমঙ্গল পৌরসভার প্রকৌশলী মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘ময়লার ভাগাড় স্থানান্তরের জন্য আমরা শহরতলী জেটি রোড এলাকায় জমি অধিগ্রহণ করেছ। কিন্তু ওই এলাকার এক ব্যক্তি মামলা করে ভাগাড়ের কাজ করতে দিচ্ছেন না। মামলার জটিলতার কারণে আমরা ভাগাড় সরাতে পারছি না।’
শ্রীমঙ্গল পৌরসভার প্রশাসক মোসা. শাহিনা আক্তার বলেন, ‘ময়লার ভাগাড় সরাতে জটিলতা কোথায় তাই সরেজমিন পরিদর্শন করে দ্রুত ময়লার ভাগার স্থানান্তরের জন্য যেসব করণীয় তা আমরা করবো।’
এর আগে ২০১৮ সালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে থেকে ময়লার ভাগাড় অপসারণের দাবিতে ক্লাস বর্জন করে আন্দোলনে নেমেছিল স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার হাজারো শিক্ষার্থী। সে সময় জেলা প্রশাসকের আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করলেও শিক্ষার্থীদের দাবি ছয় বছরেও পূরণ হয়নি।