• ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

ড্রেনে কোটি টাকা ঢেলেও মিলছে না সুফল

sylhetsurma.com
প্রকাশিত মে ১৯, ২০২৪
ড্রেনে কোটি টাকা ঢেলেও মিলছে না সুফল

প্রধান প্রধান রাস্তা ও ড্রেন প্রশস্তকরণ কাজ ২০২০ সালে শুরু করে ২০২৩ সালের মধ্যে শেষ করে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)। এর মধ্যে রাস্তা প্রশস্তকরণে সুফল এলেও নতুন ড্রেনগুলো অতিবৃষ্টির সময় পানি নিষ্কাশনে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারছে না। যে কারণে বর্ষা মৌসুমে অনেক সময়ই জলাবদ্ধতার কবলে পড়তে হয় নগরবাসীকে। ফলে গত বছর কাজ শেষ হওয়ার পর আবার সম্প্রতি প্রধান প্রধান সড়কের কয়েকটি ড্রেনে পানির প্রবেশমুখ বড় করার কাজে নেমেছে সিসিক। দুই দিন ধরে নগরীর বিভিন্ন রাস্তায় ড্রেনে পানির প্রবেশমুখ কেটে বড় করা হচ্ছে। সুষ্ঠু পরিকল্পনার অভাবে এক ড্রেনের পেছনেই বারবার এভাবে অর্থ ব্যয়ের বিষয়টি নিয়ে হচ্ছে সমালোচনাও।

বৃহস্পতিবার নগরীর মীরের ময়দান সড়কে দেখা গেছে ড্রিল মেশিন দিয়ে ড্রেনের পানি প্রবেশের মুখ কেটে বড় করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য সড়কের ড্রেনেও একই কাজ করা হবে বলে শ্রমিকরা জানিয়েছেন।

২০২২ সালে দুই দফা বন্যায় নগরবাসী জলাবদ্ধতায় চরম ভোগান্তিতে পড়েন। অথচ আগের বছরই ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নে সিসিক ১২৯ কোটি টাকা ব্যয় করে। এ নিয়ে এক যুগে সিলেট শহরের খাল ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা সংস্কারে কম করে হলেও হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। তবু সুফল না মেলায় বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেয় সিসিক। গত মার্চে রিকাবীবাজার-চৌহাট্টা সড়কে কালভার্ট বড় করে এবং চৌহাট্টা-আম্বরখানা সড়কের সিভিল সার্জন অফিসের সামনে থেকে দরগা গেটের মূল ফটকের সামনে পর্যন্ত রাস্তার নিচে বড় ড্রেন করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হয়। একই সময়ে সোবহানীঘাট মোড় এলাকার রাস্তাও বড় করে ড্রেনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। এতে ব্যয় হয়েছে সাড়ে ৪০০ কোটি।

সিসিকের তথ্য বলছে, জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রতিবছরই নানা প্রকল্প বাস্তবায়ন করে আসছে নগর ভবন। সর্বশেষ ২০১৯ সালে নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নে ১ হাজার ২২৮ কোটি টাকা বরাদ্দ আসে। ওই প্রকল্পের আওতায় ২০১৯-২০ অর্থবছরে ২৬৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা, ২০২০-২১ অর্থবছরে ২৯৩ কোটি ৫৯ লাখ টাকা, ২০২১-২২ অর্থবছরে ২৯৮ কোটি ৪৬ লাখ ৮৭ হাজার টাকা ব্যয় হয়। চলতি অর্থবছরে ৩৬৬ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩২৭ কিলোমিটার ড্রেন, রাস্তা ও আট কিলোমিটার রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ কাজ করা হয়েছে। তারপরও অতিবৃষ্টির সময় নগরীর বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা কমছে না। রাস্তার পানি দ্রুত গিয়ে ড্রেনে পড়তে পারে না ছোট পকেটের কারণে। যদিও সিসিকের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান বলেছেন, ড্রেনের ভেতরে ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে সমস্যা সৃষ্টি হয়। তাই অনেক সময় ড্রেনের মুখের নেট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রাস্তায় জমা পানি নামতে পারে না।

অতীত অবস্থা পর্যালোচনা করে আবার ড্রেনের মুখ বড় করা হচ্ছে উল্লেখ করে সিসিকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আলী আকবর বলেন, পর্যাপ্ত গ্রেডিং না থাকায় সময়ের প্রয়োজনেই মূলত আবার কাজ করা হচ্ছে; যাতে দ্রুত পানি রাস্তা থেকে ড্রেনে পড়তে পারে। বারবার ব্যয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চাহিদা থাকলে ব্যয় করতে হবে। আগে মনে হয়েছিল যেসব পকেট রাখা হয়েছে, তা যথেষ্ট ছিল। এখন প্রয়োজনের কারণে বাড়ানো হচ্ছে।