• ২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৪শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

রাজনৈতিক প্রতিহিংসার নিষ্টুর থাবা : মামলা-হামলা, হুলিয়ায় বিপর্যস্ত তারেকের পরিবার

sylhetsurma.com
প্রকাশিত অক্টোবর ১০, ২০২১
রাজনৈতিক প্রতিহিংসার নিষ্টুর থাবা : মামলা-হামলা, হুলিয়ায় বিপর্যস্ত তারেকের পরিবার

স্টাফ রিপোর্টার: রাজনীতির রোষানলে পিতার পর বিদেশে থাকা পুত্রকেও হত্যা মামলার আসামী বানানো হয়েছে। আওয়ামী রাজনীতির হিং¯্র থাবায় বিপর্যস্থ জীবনে উপনীত হয়েছেন সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার ইসহাকপুর গ্রামের তারেক রহমানের পরিবার। জানা গেছে, গত ২৮-১০-২০১৯ ইংরেজি তারিখ জগন্নাথপুরের আছিম শাহ পীর সাহেবের মাজারে অনুষ্ঠিত উরস থেকে ফেরার পথে কে বা কারা জগন্নাথপুরের ইছহাকপুর গ্রামের সুন্দর আলীর ছেলে সারোয়ানকে নির্মমভাবে হত্যা করে লাশ ফেলে চলে যায়। পরদিন ২৯ অক্টোবর এ ঘটনায় ১৬জনকে এবং অজ্ঞাত আরো বেশ কয়েকজনকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়। মামলা নং ০২,তারিখ ২৯-১০-২০১৯। ঘটনার পর থেকে পুলিশ সত্য-মিথ্যা যাচাই না করে জামায়াতে ও বিএিনপির নেতাদের বিশেষ করে তারেক রহমানের পিতা সাজিদুর রহমানকে গেফতারে সাড়াশি অভিযান পরিচালিত করে। ঘটনার পর থেকে পুলিশী হয়রানীর ভয়ে তারেকের বাবা ফেরারী হয়ে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির একজন কর্মী হওয়ার অপরাধে রাজনৈতিক রোষানলে জর্জরিত হয়ে নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছেন উল্লেখিত পরিবারটি। মামলা,হামলা,হুমকি, হুলিয়ার মতো বিষয়গুলো তাদের জীবনে যেনো নিত্য সংগী হয়ে পড়েছে। পুলিশি হয়রানী, সরকার দলীয় বাহিীনীর অব্যাহত হুমকি, ধমকিতে চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন তারেকের পরিবারের পুরুষ ও মহিলা সদস্যরা।
জানা গেছে, তারেক আহমদ সিলেট শহরের মিরাবাজারস্থ শাহজালাল জামেয়ায় লেখাপড়াকালীন সময়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অংগ সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবিরের একজন রাজপথের চৌকশ কর্মী ছিল। জামায়াত শিবিরের মিছিল,মিটিং, সভায় তারেক ছিল একজন সক্রীয় কর্মী। রাজনীতিতে তার এমন সক্রীয় অংশগ্রহণে ক্ষমতাসীন আওয়ামী পরিবারে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। ২০২০ সালের ১০ সেপ্টেম্বর সিলেট মহানগরীর শিবগঞ্জ উপশহরে আওয়ামীলীগ ও জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে একটি মাহফিলকে কেন্দ্র করে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওইদিন উপশহরের ডি ব্লকে আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুস সবুরকে একদল দুর্বৃত্ত মোটরসাইকেল যোগে এসে একটি নির্জন স্থানে বেধড়ক মারপিট করে। মুমুর্ষ অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রেরণ করে। আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে জানানো হয় ওই হামলার নেতৃত্বে ছিল তারেক রহমান। ঘটনার পর থেকে মিরাবাজার, শিবগঞ্জ ও উপশহর এলকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছিল। আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগ ঘটনার পর থেকে তারেককে ঘায়েল করতে মরিয়া হয়ে উঠে। তারা সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর ও সিলেট শহরে হন্নে হয়ে খুঁজতে থাকে তারেককে। একটি সুত্র জানায়,রাজনীতির মাঠে যখন এমন অস্থির অবস্থা বিরাজ করছিল,ঠিক তখন জগন্নাথপুরের ইছহাকপুর গ্রামের সারোয়ান খুন হয়। তারেক রহমান ও তার পরিবারকে চরম শিক্ষা দিতে ওই খুনের আসামী বানানো হয় তারেকের বাবা ও তারেক রহমানকে- এমন অভিযোগ করেন ভিকটিম পরিবারের সদস্যরা। ঘটনার প্রায় দুই বছর পর গতকাল ০৯ অক্টোবর ২০২১ ইংরেজি তারিখ ওই হত্যা মামলার চার্জশীট আদালতে জমা দেয়ার সময় পুলিশ সাজিদুর রহমানের পুত্র মো: তারেক রহমানসহ আরো ৩জনের নাম আসামী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে।
সুনামগঞ্জ আদালতে ওই মামলার ধার্য্য তারিখে তারেক হাজির হতে না পারলে আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করে। ২০২১ সালের মার্চ মাসে উচ্চ শিক্ষা অর্জনের জন্য তারেক যুক্তরাজ্য পাড়ি জমায়। বিদেশ গিয়ে ও মামলা থেকে রেহাই পায়নি তারেক রহমান। বর্তমানে পুলিশ প্রতিদিনই তারেকের গ্রামের বাড়ি যাচ্ছে ওয়ারেন্ট কপি নিয়ে। তারেকের পারিবারিক সুত্র জানায়, বর্তমানের তারেক যুক্তরাজ্য থাকলেও তার বিরুদ্ধে পুলিশ ও আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে রঙ্গিন ব্যানারে হুলিয়া জারি করেছে। গ্রামগঞ্জ,কিংবা শহরের বিভিন্ন দেয়ালে, কিংবা ওলিগলিতে ফাঁিসর দাবীতে তারেক রহমানের ছবি টাংগিয়ে হুলিয়া জারি করেছে। জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, তারেককে ধরতে আমরা অভিযান পরিচালনা করছি। খুব শিঘ্রই তাকে আইনের আওতায় আনা হবে বলে তিনি জানান।