তিনদফা দাবিতে সিলেট মুরারি চাঁদ (এমসি) কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আবুল আনাম মো. রিয়াজকে পাঁচ ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে কলেজের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক সংকট, ছাত্রাবাসের বঙ্গবন্ধু হলের পানি সমস্যা ও ছাত্রী নিবাসের নাম বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব নামকরণের দাবিতে অধ্যক্ষকে অফিসে অবরুদ্ধ রেখে বাইরে তালা দেন শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘ পাঁচ ঘন্টা অবরুদ্ধ থাকার পর রাত নয়টার দিকে অধ্যক্ষের কার্যালয়ের তালা খুলে দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। বিকেল সাড়ে চারটার থেকে অধ্যক্ষের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে সামনে বসে পড়েন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এসময় অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নানা শ্লোগান দিতে থাকেন তারা। রাত সাড়ে ৮ টায় সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. নাজমুল ইসলামের মধ্যস্ততায় দাবি আদায়ে কলেজ প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে রাজি হন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।সাড়ে আটটার দিকে অধ্যক্ষের কার্যালয়ে প্রবেশ করেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সিলেট সরকারী কলেজ ছাত্রলীগ নেতা রুহেল আহমদ, সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. নাজমুল ইসলাম, এমসি কলেজ ছাত্রলীগ নেতা দিলোয়ার হোসেন রাহীসহ পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল। প্রায় ৪০ মিনিটের বৈঠক শেষে আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত করার জন্য সাধারণ শিক্ষার্থীদের আহবান জানান অধ্যক্ষ অধ্যাপক আবুল আনাম মো. রিয়াজ। এসময় তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্যেশে তিনি বলেন, তোমাদের (আন্দোলনরত শিক্ষার্থী) সমস্যা মানে আমাদের সমস্যা। শিক্ষক সংকটের বিষয়টি আগামী এক সপ্তাহের ভেতরে সমাধান করা হবে। এছাড়া ছাত্রী নিবাসের নাম বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব নামকরণের বিষয়টি লিখিতভাবে আবেদন করতে হবে। এসময় বঙ্গবন্ধু হলের পানি বিষয়টি আগামী রোববারের ভেতর সমাধান হবে বলে জানান তিনি। পরে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করা হয়। আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যুক্ত থাকা কলেজ ছাত্রলীগ নেতা দিলোয়ার হোসেন রাহী জানান, দীর্ঘদিন থেকে ইতিহাস বিভাগে শিক্ষক সংকট, হলের পানি সমস্যা নিরসন ও ছাত্রী নিবাসের নাম বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব নামকরণের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে আসছে। আমরা শিক্ষার্থীদের সব দাবির সঙ্গে একমত হয়ে কলেজ প্রশাসনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেছি। দ্রুত এ সংকট নিরসনে পদক্ষেপ নিতে প্রশাসন আমাদের আশ্বস্থ করেছেন। এরআগে অবরুদ্ধ থাকা অবস্থায় এমসি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আবুল আনাম মো. রিয়াজ বলেছিলেন, শিক্ষার্থীরা যেসব বিষয়ে আন্দোলন করছেন তার সমাধান দীর্ঘস্থায়ী। হুট করেই সম্ভব নয়। ছাত্রাবাসে পানি সংকট সমাধানের জন্য একটা লাইন অলরেডি দিয়েছি। আর শিক্ষক সংকট সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ইতোমধ্যেই আলাপ করেছি। আশাকরি দ্রুত সব সমাধান হবে। আন্দোলনে থাকা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কলেজের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক সংকট দীর্ঘদিনের। এই বিভাগে মাত্র চারজন শিক্ষক ছিলেন। গত কয়েক মাস থেকে একজন শিক্ষকও নেই বিভাগটিতে। আর ছাত্রাবাসের বঙ্গবন্ধু হলের পানি সমস্যা সমাধানের জন্য বারবার প্রশাসের দৃষ্টি আকর্ষণ করে কোন প্রতিকার হয়নি। এছাড়া ছাত্রী নিবাসের নাম বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব নামকরণের দাবিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে কলেজ প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন সাধারণ শিক্ষার্থী। বৈঠকে কোন সমাধান না আসায় অধ্যক্ষকে অফিসে রেখে বাইরে তালা দেয় আন্দোলনকারীরা।