পাউবোর নীতিমালা অনুযায়ী বাঁধের কাজ ১৫ ডিসেম্বর থেকে শুরু করে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ করার নির্দেশনা রয়েছে। হাওরের কৃষকদের উৎপাদিত একমাত্র এই ফসল অকাল বন্যার কবল থেকে রক্ষা করতে প্রতি বছরের মতো এবারও ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ করছে সরকার। কিন্তু সঠিক সময়ে বাঁধের কাজ না করায় উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় আছে হাওর পাড়ের কৃষকরা সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার নলুয়ার হাওরের কিছু কিছু প্রকল্পে এখনও মাটি পড়েনি। এর মধ্যে কিছু প্রকল্পের কাজ চলছে ধীরগতিতে। শুক্রবার হাওর ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। পাউবোর নীতিমালা অনুযায়ী কাজ শুরুর দেড়মাস পরও সব প্রকল্পের কাজ শুরু না হওয়ায় কৃষকরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
সরজমিন নলুয়ার হাওর ঘুরে দেখা যায়,হাওরের ৯ নম্বর প্রকল্পের ডুমাইখালী থেকে টংগর পর্যন্ত ও ১৯ নম্বর প্রকল্প জগদীশপুর বড়খাল বাঁধে কোন মাটি পড়েনি। খোজ নিয়ে জানা যায় ৮৩৫ কিলোমিটার বাঁধের জন্য ২০ লক্ষ ২১ হাজার টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হয়। প্রকল্প বাস্তবায় কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়ন সদস্য রুবেল মিয়া এবং ১৯ নম্বর প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সেক্রেটারীর দায়িত্ব পালন করেন কলকলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মাহবুবুল আলম মোহন।
চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়নের সদস্য রুবেল মিয়া মুঠোফোনে জানান,মাটির সুবিধা না থাকায় কাজ শুরু করতে বিলম্ব হচ্ছে। মাটি কাটার যন্ত্র প্রকল্প এলাকায় এনেছি নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ হবে। নলুয়ার হাওরের ৮ নম্বর প্রকল্প হালায়ার মুখ থেকে ভুরাখালী পর্যন্ত কাজ শুরু হয়েছে কয়দিন আগে। ১০, ১১, ১২ ও ১৩ নম্বর প্রকল্পে কাজ চললেও অধিকাংশ এলাকায় মাটি পড়েনি। ৫,৬ ও৭ নম্বর প্রকল্পে কাজ হচ্ছে ধীরগতিতে। ১৯ নম্বর প্রকল্পের জগদীশপুর বড়খালে বাঁধে আজ ২ ফেব্রুয়ারী মাটি ভরাট হচ্ছে ধীরগতিতে। ১৯ নম্বর প্রকল্পের সেক্রেটারী কলকলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মাহবুবুল আলম মোহন মুঠো ফোনে বলেন,নির্ধারিত সময় আছে এর মধ্যে কাজ শেষ হবে। ৬ নম্বর প্রকল্পের সভাপতি আহমেদ আলী জানান, আমার প্রকল্পের মাটির কাজ প্রায় শেষের দিকে নির্ধারিত সময়ের আগেই শতভাগ কাজ শেষ করব। কৃষক ও পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়,জগন্নাথপুর উপজেলায় হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ সংস্কার কাজ করার জন্য ৩৩ টি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৪ টি রয়েছে নলুয়ার হাওরে। বরাদ্ধ হয়েছে ৪ কোটি ৮ লক্ষ টাকা।
জগন্নাথপুর উপজেলার একাধিক কৃষক বলেন,হাওরের কাজ শুরুর সময় থেকে দেড় মাস পার হলেও সন্তোষজনক কাজ হয়নি। হাওরে যে কোন সময় অকাল বন্যা হতে পারে। এখনো অনেক প্রকল্পে কাজ না হওয়ায় ও সঠিক ভাবে কাজ না করায় আমরা দুশ্চিন্তায় আছি। জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল বশিরুল ইসলাম বলেন,২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি ৪০ শতাংশ ছিল। কাজের অগ্রগতি বাড়ানোর জন্য পিআইসির দায়িত্বশীলদের তাগিদ দিচ্ছি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারী প্রকৌশলী সবুজ কান্তি শীল বলেন, হাওরে সব প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। কাজের অগ্রগতি সন্তোষজনক। আমরা সব সময় খেয়াল রাখছি।