• ২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৩শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

ছাত্রলীগকর্মী আরিফ হত্যা: দুই মাসেও অধরা কাউন্সিলর নিপু

sylhetsurma.com
প্রকাশিত জানুয়ারি ২৭, ২০২৪
ছাত্রলীগকর্মী আরিফ হত্যা: দুই মাসেও অধরা কাউন্সিলর নিপু

সিলেটে ছাত্রলীগ কর্মী আরিফ আহমদ হত্যা মামলার দুই মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও ধরা পড়েনি আসামিরা। এই মামলার প্রধান আসামি সিলেট সিটি করপোরেশনের ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হিরণ মাহমুদ নিপু প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও তাকে ধরা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে পুলিশের ভাষ্য, প্রধান আসামি নিপুসহ বাকি আসামিরা পলাতক রয়েছেন। তাদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে। নিহত আরিফ নগরীর টিভি গেইট এলাকার ফটিক মিয়ার ছেলে। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম গ্রুপের সক্রিয় কর্মী ছিলেন তিনি। আরিফের বাবা ফটিক মিয়া অটোরিকশা চালান, তবে অসুস্থ থাকায় এখন বেকার। মা আঁখি বেগম বালুচর এলাকার রাজা মিয়ার কলোনিতে বাড়িতে বাড়িতে রান্নাবান্নার কাজ করে বর্তমানে সংসার চালাচ্ছেন। ২০২৩ সালের ২০ নভেম্বর রাত ১২টার দিকে নগরীর বালুচরের টিবি গেইট এলাকায় ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন আরিফ। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার পর রাত দেড়টার দিকে মারা যান তিনি। আরিফকে কুপিয়ে ফেলে যাওয়ার সময় দৌড়ে সেখানে গিয়েছিলেন মা আঁখি বেগম। সে সময় তিনি গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, ‘ঘটনার পরপরই আমি সেখানে গিয়ে দেখেছি, সাদা পাঞ্জাবি পরে হিরণ মাহমুদ নিপু মোটরসাইকেলে উঠে চলে যাচ্ছেন। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তায় আমি ছেলেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় নিয়ে হাসপাতালের পথে রওনা হই। যাওয়ার পথে ছেলে আমাকে বলে- হিরণ মাহমুদ, রনি, মামুন, হেলালসহ ১৫-২০ জন মিলে আমার ওপর হামলা চালিয়েছে।’সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হিরণ মাহমুদ নিপু গত বছর অনুষ্ঠিত সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। তার নেতৃত্বেই আরিফকে কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাত করে খুন করা হয়েছে বলে দাবি পরিবারের। আরিফ হত্যার পর ২২ নভেম্বর আঁখি বেগম বাদী হয়ে সিলেটের এয়ারপোর্ট থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় হিরণ মাহমুদসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় আরও ৫ জনকে। মামলার আগে ও পরে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হলেও বাকিরা এখনও রয়ে গেছে অধরা। এদিকে গত বছরের ২৮ নভেম্বর হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চ হিরণ মাহমুদ নিপুকে ৬ সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়ে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন, কিন্তু তিনি এখন পর্যন্ত আত্মসমর্পণ করেননি। প্রধান আসামি নিপুসহ এই মামলায় আরও ৬ আসামির মধ্যে এখনও কেউ গ্রেপ্তার না হওয়ায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসীর মধ্যে। আসামিদের গ্রেপ্তার দাবি মঙ্গলবার (২২ জানুয়ারি) বালুচর পয়েন্টে মানববন্ধন করেন তারা। মানবন্ধনে আঁখি বেগম অভিযোগ করে বলেন, ‘মামলার প্রধান আসামি নিপু প্রকাশ্যেই ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তবুও পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করছে না।’ তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করে সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘কাউন্সিলর হিরণ মাহমুদ নিপু পলাতক রয়েছেন। তাকে গ্রেপ্তার করতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’ তিনি বলেন, মামলাটি ইতোমধ্যে ডিবিতে স্থানান্তর করা হয়েছে। মেট্রোপলিটন ডিবি পুলিশের ইন্সপেক্টর মধুসুদন রায় মামলাটি তদন্ত করছেন।