পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে বৃহস্পতিবার ছিলো সরকারি ছুটি। এরপরের দিদিন শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি। ফলে টানা তিনদিন ছুটি পেয়েছেন চাকরিজীবীরা। এই ঘুরতে বেরিয়ে পড়েছেন কর্মজীবী মানুষেরা। সিলেটেও তাই ঢল নেমেছে পর্যটকদের।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পর্যটনকেন্দ্রগুলো সরব হয়ে ওঠে। সিলেটের হোটেল, মোটেল ও রিসোর্টগুলো আগে থেকেই অগ্রিম ভাড়া নিয়েছেন পর্যটকেরা। ফলে বিভিন্ন হোটেল-মোটেলে তিন দিন ছুটির মধ্যে কক্ষ ফাঁকা পাওয়া যাচ্ছে না।
সিলেটের হোটেল-মোটেল ও গেস্টহাউস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি সুমাত নুরী জুয়েল বলেন, করোনার ধাক্কা কাটিয়ে সিলেটে এবারই বেশি পর্যটক উপস্থিতি হবেন বলে আশা প্রকাশ করছেন। এরই মধ্যে সিলেটের সব কটি হোটেল-মোটেল বুকিং হয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, করোনাকাল কাটিয়ে এবারই প্রথম এত পর্যটক সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রগুলোয় ঘুরতে এসেছেন। এতে পর্যটন খাতের ব্যবসায়ীরা করোনার ধাক্কা কাটিয়ে উঠবেন বলে আশা করছেন।
সিলেটের আকাশে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে প্রখর রোদ। রোদ উপেক্ষা করেই পর্যটকেরা চা-বাগান, টিলা, পানি-পাথরসহ বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র ঘুরে দেখছেন।
সিলেটের রাতারগুল পর্যটনকেন্দ্রের মাঝের ঘাট এলাকার বাসিন্দা মো. ফজলু মিয়া বলেন, সকাল ৮টা থেকে পর্যটকেরা এখানে আসতে শুরু করেছেন। সাধারণ দিনে যেখানে ৩০ থেকে ৪০টি নৌকায় যাত্রীরা রাতারগুলে ঘুরে বেড়ান, সেখানে আজ সকাল ৮টা থেকে বেলা পৌনে ৩টা পর্যন্ত প্রায় ২০০ নৌকায় করে যাত্রীরা মাঝের ঘাট থেকে রাতারগুলে ঢুকেছেন। বিকেল ৫টার মধ্যে নৌকার সংখ্যা ৩০০ অতিক্রম করবে। রাতারগুল প্রবেশে আরও দুটি ঘাট রয়েছে। সেসব ঘাটেও পর্যটকদের সরব উপস্থিতি রয়েছে।
সিলেটের জাফলং পর্যটনকেন্দ্রে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পর্যটকেরা আসছেন বলে জানিয়েছেন ট্যুরিস্ট পুলিশ জাফলং সাবজোনের পরিদর্শক মো. রতন শেখ। তিনি বলেন, সকাল থেকে বেলা পৌনে তিনটা পর্যন্ত জাফলংয়ের পর্যটনকেন্দ্রগুলোয় লাখখানেক পর্যটক প্রবেশ করেছেন। যারা জাফলংয়ে বেড়াতে গিয়েছেন, তাঁদের অধিকাংশই সিলেটের বাইরের বিভিন্ন এলাকা থেকে এসেছেন। আগামী দুই দিনের ছুটিতে আরও বিপুল পরিমাণ পর্যটক আসার সম্ভাবনা আছে।
রতন শেখ আরও বলেন, সকাল থেকে প্রখর রোদ। এতে পরিবার-পরিজন নিয়ে বেড়াতে আসা পর্যটকেরা কষ্ট করছেন। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্বেচ্ছাসেবী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তৎপর রয়েছেন।
ভোলাগঞ্জের সাদা পাথর দেখতে আসা পর্যটকেরা সকাল থেকে ভিড় করছেন বলে জানিয়েছেন কোম্পানীগঞ্জের বাসিন্দা কবির আহমদ। তিনি বলেন, পর্যটক বেশি হওয়ায় সকাল থেকে ভোলাগঞ্জ নৌকার ঘাটে বিপুল পরিমাণ পর্যটককে সারি ধরে নৌকার জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লুসিকান্ত হাজং বলেন, তিন দিনের ছুটিতে সাদা পাথর পর্যটনকেন্দ্রে কয়েক লাখ পর্যটক আসবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। পর্যটকেরা যাতে হয়রানি কিংবা অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো পরিস্থিতির শিকার না হন, এ জন্য স্বেচ্ছাসেবীরা মাঠে কাজ করছেন। পাশাপাশি সাদা পাথর পর্যটনকেন্দ্রে সার্বক্ষণিক মাইকিং করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, পর্যটন এলাকায় ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও পর্যটকদের সহায়তা এবং নজরদারি করা হচ্ছে।