কানাইঘাট প্রতিনিধি : সিলেটের কানাইঘাটে দুর্বৃত্তদের উপর্যুপরি হামলায় আনিসুর রহমান (৫৩) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। নিহতের পরিবারের অভিযোগ, আওয়ামীলীগ নেতা ও স্থানীয় এমপি হাফিজ আহমদ মজুমদারের ক্যাডার বাহিনীর হামলায় ঘটনাস্থলেই তিনি মারা গেছেন। অন্যদিকে অভিযুক্ত এমপি বলেছেন, তার সঙ্গে ওই ব্যক্তির ব্যক্তিগত কোন পরিচয় নেই। তবে তার গ্রুপের কেউ যদি এমন কাজ করে তার দায়ভার তারই ব্যাক্তিগত।
বুধবার সন্ধ্যায় সিলেট জেলার কানাইঘাট থানার সড়কের বাজার এলাকায় দুর্বৃত্তদের উপর্যুপরি হামলায় তার মৃত্যু হয়। তিনি সিলেট জেলার কানাইঘাট থানার দিঘীরপার গ্রামের শিবির নেতা তারেক আহমেদের পিতা। তিনি স্থানীয় জামাত নেতা ও পেশায় মসজিদের ইমাম ছিলেন।
নিহতের দ্বিতীয় ছেলে ছিদ্দিক আহমদ বলেন, জায়গা জমি কিংবা টাকা পয়সা নয়, শুধুমাত্র রাজনৈতিক আদর্শের কারণে আমাদের পরিবারকে স্থানীয় এমপি ও আওয়ামী নেতা হাফিজ আহমদ মজুমদারের গুন্ডা বাহিনী দীর্ঘদিন থেকে নির্যাতন করে আসছে। আমাদের সোনার সংসার আজ টুকরো টুকরো হয়ে গেছে। এর আগে গেল বছরও হাফিজ মজুমদারের এই গুন্ডাবাহীনি তার উপর হামলা চালিয়ে তাকে আহত করা হয়। তিনি আরও জানান, ১০/১৫ দিন আগে সন্ধ্যায় ৫ জনের একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ হাফিজ মজুমদারের অনুসারী তাজিম উদ্দিন ও মোস্তাক আহমদ পলাশের নেতৃত্বে আমার বাড়িতে এসে আমার ছোট ভাই তারেক আহমদ খান সম্পর্কে বাবাকে জিজ্ঞেস করে। ভাই ইসলামি ছাত্র শিবিরের সাথে যুক্ত থাকায় তার সম্পর্কে অনেক তথ্য নেয় এবং বাবাকে অনেক শাসিয়ে যায়। যাওয়ার সময় তারা এমপির লোক তাও বলে যায়।
তিনি আরও বলেন, ছোট ভাই শিবির নেতা তারেক আহমেদ কে না পেয়ে তার সন্ধান দিতে এবং তার বাবা যেন আওয়ামী লীগে যোগদেয় সেজন্য প্রতিনিয়ত হাফিজ আহমদ মজুমদারের অনুসারী তাজিম উদ্দিন ও মস্তাক আহমদ তার বাবাকে মানসিক ও শারিরীক নির্যাতন করতো। গতকাল (বুধবার) আমার মায়ের ফোনে কল আসে বাবা হাসপাতালে ভর্তি। সেখানে গিয়ে দেখি বাবা আর বেচে নেই। তবে তার শরীরে উপর্যুপরি শারীরিক নির্যাতনের চিহ্ন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ধারালো ছুরা ও শক্ত কিছুর আঘাতে অধিক রক্তক্ষরনের কারণে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন।
এদিকে আনিসুর রহমানের মরদেহ তার গ্রামের বাড়িতে আনা হলে নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী বিক্ষোভ করে বিচার দাবি করেন।
মুঠোফোনে স্থানীয় এমপি ও আওয়ামী লীগ নেতা হাফিজ আহমদ মজুমদার বলেন, আনিসুর রহমানের সাথে তার ব্যাক্তিগত কোন পরিচয় নেই। তবে তার গ্রুপের কিংবা দলের নাম ভাংগিয়ে কিছু করলে সেটা একান্ত ব্যাক্তিগত। এর দায়ভার তিনি নেবেন না।
মৃতের পরিবার আরও জানায়, দলীয় ভিন্নতা ও রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে তারা প্রশাসনিক সাহায্যও পাচ্ছেন না। স্থানীয় কানাইঘাট থানায় এ বিষয়ে মামলা করতে গেলে নানা অজুহাত দেখিয়ে পুলিশ মামলা না নেয়ার অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী পরিবার।
এ বিষয়ে স্থানীয় কানাইঘাট থানা পুলিশের সাথে যোগাযোগ করা হলে অফিসার ইনচার্জ জানান, এ ব্যাপারে তিনি অবগত নন। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যাবস্থা নেয়া হবে।