গোলাপগঞ্জ প্রতিনিধি ::: দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর পালিয়ে থাকার পর অবশেষে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন গোলাগঞ্জের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও প্রবীন রাজনীতিবিদ গৌছ উদ্দিন । এক অজ্ঞাত যুবতীকে ধর্ষণ ও হত্যা ঘটনায় তার পূত্র আবু সুফিয়ান মিলু সহ তাকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়েছিল গোলাপগঞ্জ থানায়। পুলিশ গৌছ উদ্দিনকে গ্রেফতারে সমর্থ হলেও এখনো পলাতক তার পূত্র ও পরিবার। তবে এ ধর্ষন ও হত্যা ঘটনার মামলা নিয়ে চাঞ্চল্য ছিল সর্বত্র। রাজনীতিক প্রতিহিংসায় এহেন মামলায় তিনি ও তার পূত্রকে আসামী করা হয়েছিল বলে ধারনা করছেন স্থানীয়রা। এর নৈপথ্যে ছিলেন স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা ও গোলাপগঞ্জ পৌরসভার মেয়র জাকারিয়া আহমদ পাপলু। ইতিপূর্বে গউস উদ্দিনের বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধের অভিযোগে তোলা হয়েছিল। সূত্র জানায়, ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারী রাত সাড়ে ৩ টার দিকে ব্যবসায়ী গউস উদ্দিনের মালিকানাধীন রওশনআরা কমপ্লেক্সে ভবনের পেছনের নির্জন স্থান থেকে অর্ধগলিত অবস্থায় অজ্ঞাত এক যুবতীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। কিন্তু কোন রকম তদন্ত ছাড়াই তড়িঘড়ি করে প্রবীণ গৌছ উদ্দিন ও তার পূত্র আবু সুফিয়ান মিলুকে আসামী করে হত্যা ও নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করে গোলাপগঞ্জ থানা পুলিশ। যদিও উদ্ধারকৃত যুবতীকে পুলিশ আসামীদের ঘরের কাজের মেয়ে বললেও এই মেয়েটিকে সনাক্ত করতে ব্যর্থ হয় এলাকার মানুষ। এরপরও পুলিশী হয়রানী থেকে বাঁচতে পালিয়ে বেড়ান তিনি ও তার পরিবার অন্যান্য সদস্য। দীর্ঘ দেড় বছর পর অবশেষে গতকাল ৭ জুলাই গোয়াইনঘাট থানার জাফলং এলাকা থেকে গ্রেফতার করতে সমর্থ হয় পুলিশ। কিন্তু এখনো পলাতক তার পূত্র। যদিও গোলাপগঞ্জ থানা পুলিশের একটি সূত্র জানায়, গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে পলাতক আবু সুফিয়ান মিলুকে। গ্রেফতারের জন্য রাজনীতিক তদবির রয়েছে বলেও নিশ্চিত করেছে পুলিশ সূত্র। স্থানীয় নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্র জানায়, ব্যবসায়ী গৌছ উদ্দিন বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। পালন করেছেন স্থানীয় গোলাপগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের সিনিয়র সহ-সভাপতির দায়িত্ব। এছাড়া গোলাপগঞ্জ রানাপিং বাজার কমিটির সাবেক সেক্রেটারী ও এলাকার মসজিদ কমিটির সাবেক সভাপতি ছিলেন তিনি। তার ছিল একাধিক মূল্যবান ব্যবসা প্রতিষ্টান। বর্তমান শাসক দলের (আওয়ামীলীগের) স্থানীয় নেতা ও গোলাপগঞ্জ পৌরসভার মেয়র জাকারিয়া আহমদ পাপলু সাথে রাজনীতিক শক্রতা ছিল ব্যবসায়ী গৌছ উদ্দিনের। আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে নানাভাবে হয়রানী শুরু করেন পাপুল। একপর্যায়ে যুদ্ধাপরাধীর অভিযোগ তুলা হয় ব্যবসায়ী গউস উদ্দিনের বিরুদ্ধে। এই মামলার মাধ্যমে গউস উদ্দিনের মূল্যবান সহায় সম্পত্তি হাতিয়ে নেয়ার অপচেষ্টা শুরু আ’লীগ নেতা পাপলু সহ তার বাহিনী। এরই ধারাবাহিকতায় যুবতীকে ধর্ষণ ও হত্যা ঘটনায় ব্যবসায়ী গৌছ উদ্দিন ও তার পূত্রকে ফাঁসিয়ে দেয়া হয়েছিল বলে স্থানীয়দের ধারনা।