• ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

মহানবী (সা.) সমগ্র মানবতার জন্য শান্তির বার্তা নিয়ে এসেছিলেন

sylhetsurma.com
প্রকাশিত নভেম্বর ১০, ২০১৯
মহানবী (সা.) সমগ্র মানবতার জন্য শান্তির বার্তা নিয়ে এসেছিলেন

সিলেট সুরমা ডেস্ক : মহানবী (সা.) সমগ্র মানবতার জন্য শান্তির বার্তা নিয়ে এসেছিলেন। তার জন্মের সাল নিশ্চিত হলেও জন্ম তারিখ নিয়ে কিছুটা মতানৈক্য রয়েছে। তবে প্রসিদ্ধ অভিমত অনুযায়ী তিনি ১২ রবিউল আউয়াল জন্মগ্রহণ করেন।

আবার প্রখ্যাত ঐতিহাসিক ও হাদিসবিশারদদের কাছে সর্বাধিক নির্ভরযোগ্য অভিমত হলো, আবরাহার হস্তীবাহিনী ধ্বংস হওয়ার ৫০ থেকে ৫৫ দিন পর রাসুল (সা.) ৮ রবিউল আউয়াল সোমবার সুবহে সাদিকের সময় আবু তালিবের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন।

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.), জুবাইর ইবনে মুতঈম (রা.), আল্লামা ইবনুল জাওজি, কুতুবউদ্দিন কাসতালানি (রহ.)-সহ বেশির ভাগ মুহাদ্দিস ও জীবনী-লেখক এ বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করেছেন। (সিরাতে মুস্তফা’র বাংলা অনুবাদ : ১/৬৩-৬৪, ইদ্রিস কান্ধলভি, জুরকানি : ১/১৩০-৩১)

বিখ্যাত ঐতিহাসিক মাহমুদ পাশা ও ভারতের মুহাম্মদ সুলাইমান মানসুরপুরীর অনুসন্ধানি অভিমত হলো, রাসুল (সা.)-এর জন্ম তারিখ ৯ রবিউল আউয়াল। ইংরেজি পঞ্জিকা মতে, তারিখটি ছিল ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের ২০ অথবা ২২ এপ্রিল। (মাহমুদ পাশা, তারিখে খুজরি, প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা: ৬২; সুলাইমান মানসুরপুরী, রাহমাতুল্লিল আলামিন, প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা: ৩৮-৩৯)

মহানবী (সা.) যে যুগে এবং যে সময়ে জন্মগ্রহণ করেছেন, তখন জন্ম তারিখ লিখে রাখার প্রথা ছিল না। অভিজাত ও সম্ভ্রান্ত পরিবারগুলোতেও এ নিয়ম ছিল না। তাই রাসুল (সা.)-এর জন্ম তারিখও কোথাও লিখিত আকারে ছিল না। ফলে রাসুল (সা.)-এর জন্ম তারিখ ১২ রবিউল আউয়াল কি না—তা নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে।

তবে রাসুল (সা.)-এর মৃত্যু ১২ রবিউল আউয়াল হওয়ার ক্ষেত্রে কারো কোনো ধরনের মতবিরোধ নেই। কারণ বিশ্বনবী হিসেবে আবির্ভাবের পর গোটা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। পৃথিবীতে অনেক কিছু ঘটে গেছে। ফলে মানুষ গুরুত্বের সঙ্গে তার মৃতু-তারিখ স্মরণে রেখেছে। সুতরাং যদি মেনে নেওয়া হয় যে, ১২ তারিখ রাসুল (সা.)-এর জন্ম তারিখ—তাহলে দেখা যায় ওই দিনই তাঁর মৃত্যু দিবস। ফলে এই দিনটি আনন্দ ও বেদনার মিশ্র আবেশে মথিত।

রাসুল (সা.)-এর জন্মদিন হিসিবে ১২ তারিখ খুশির দিন। আবার ইন্তেকালের দিন হিসেবে ভীষণ দুঃখের দিন।

তাহলে এই দিনটি কীভাবে উদযাপন করা যায়? ইতিহাস ও হাদিসের কিতাবগুলোতে দেখা যায়, সাহাবায়ে কেরাম ও তাবেইরা এই দিনটিতে তারা খুশির দিন অথবা শোক দিবস—কোনোটাই পালন করেননি।

অন্যদিকে সিরাতের কিতাবগুলোতে দেখা যায়, প্রিয় নবী (সা.) জন্ম তারিখ বা জন্ম বার নয়, বরং জন্মের দিন উদযাপন করতেন। সে উদ্যাপনে উৎসব, মিছিল বা ভোজনরসিকতার কোনো আমেজ থাকতো না।

হাদিসের গ্রন্থগুলোতে আছে, মহানবী (সা.) তার জন্মের দিন সোমবার রোজা রাখতেন। মহানবী (সা.)-এর জন্মের কারণে প্রতি সোমবার রোজা রাখা মুস্তাহাব।

আবু কাতাদাহ আনসারি (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘মহানবী (সা.)-কে সোমবার রোজা রাখা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ওই দিন আমি জন্মগ্রহণ করেছি। ওই দিনই আমি নবুয়ত লাভ করেছি বা আমার ওপর (প্রথম) ওহি অবতীর্ণ হয়…।’ (মুসলিম, হাদিস নং: ১১৬২)

শুধু অনুষ্ঠান সর্বস্ব নয়, বরং মহানবী (সা.)-এর আদর্শ লালন ও তার পথ অনুসরণে আমাদের জীবন প্রদীপ্ত হয়ে ওঠুক।