সিলেট সুরমা ডেস্ক : গাড়ি ও মোটরসাইকেল চালকদের বৈধ কাগজপত্র থাকলে কুলাউড়া পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হচ্ছে এবং যাদের গাড়িসহ চালকের বৈধ কাগজপত্র নেই তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা এবং মামলা দেয়া হচ্ছে।
রোববার (২০ অক্টোবর) দুর্ঘটনা রোধে সচেতনতামূলক বিশেষ কর্মসূচি ও অভিযান পরিচালনা করে কুলাউড়া থানা পুলিশ ও ট্রাফিক বিভাগ
সম্প্রতি মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় ৭২ ঘণ্টার ব্যবধানে সড়কে দুর্ঘটনায় ২ শিশুসহ ৪ জনের প্রাণহানির ঘটার পর নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ ও ট্রাফিক বিভাগ। দুর্ঘটনা রোধে সচেতনতামূলক বিশেষ কর্মসূচি ও অভিযানে নেমেছে পুলিশ। মৌলভীবাজার- কুলাউড়া-বড়লেখা আঞ্চলিক সড়ক ব্যস্ততম প্রধান সড়কে প্রতিনিয়তই ঘটছে কোন না কোন দুর্ঘটনা। এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধকল্পে কুলাউড়া থানা পুলিশ ও ট্রাফিক বিভাগকে দেখা গেছে বিশেষ উদ্যোগ নিতে।
সরেজমিন দেখা যায়, কুলাউড়া শহরের উত্তরবাজারস্থ আউটার সিগন্যালে দিনভর গাড়ি আটকিয়ে অভিযান চালানো হচ্ছে। বিভিন্ন গাড়ির চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ অন্যান্য কাগজাদি যাচাই করে দেখা হচ্ছে। অভিযানে ড্রাইভিং লাইসেন্স বিহীন অর্ধশত সিএনজি অটোরিকশা ও মোটর সাইকেল চালকের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে। তাছাড়া যেসব সিএনজি অটোরিকশায় অতিরিক্ত যাত্রীবহন করছে তাদের নামিয়ে অন্য গাড়িতে তুলে দেয়া হচ্ছে। চালকদের নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে যাতে করে তাদের গাড়িতে আর কখনো অতিরিক্ত যাত্রী বহন না করা হয়। হেলমেট বিহীন মোটরসাইকেল চালকদেরও কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে ট্রাফিক আইন মেনে চলার জন্য। এছাড়া গাড়ির ইনস্যুরেন্স, ফিটনেস, রেজিস্টেশন নম্বরসহ অন্যান্য কাগজাদি ঠিক আছে কিনা তা যাচাই করে দেখা হচ্ছে। এসময় অভিযানকালে যাদের কাগজপত্র বৈধ ছিলো তাদেরকে ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানানো হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কুলাউড়া সার্কেল) সাদেক কাওছার দস্তগীর বলেন, দুর্ঘটনা রোধকল্পে যাদের গাড়ীর ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ কাগজপত্র ঠিক আছে তাদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হচ্ছে এবং যাদের কাগজপত্র ঠিক নাই তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। সচেতনতা বৃদ্ধিতে ট্রাফিক আইন মেনে চলার জন্য শহরে মাইকিং করা হচ্ছে। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। যাতে করে এই সড়কে দুর্ঘটনার প্রবণতা কমে যায়।
অভিযান ও কর্মসূচিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কুলাউড়া সার্কেল) সাদেক কাওছার দস্তগীর, কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ইয়ারদৌস হাসান, ওসি (তদন্ত) সঞ্জয় চক্রবর্তী ও ট্রাফিক বিভাগের সাব-ইন্সপেক্টর মো. আজাদ মিয়াসহ থানা পুলিশ ও ট্রাফিক বিভাগের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ১৭ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জুড়ী থেকে কুলাউড়ায় ফেরার পথে কুলাউড়া-বড়লেখা আঞ্চলিক সড়কে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় যাত্রীবাহী সিএনজি অটোরিকশা ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে কমলগঞ্জ উপজেলার হরিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর স্কুল ছাত্রী সোনালী পাল (৮) ও কুলাউড়া পৌর শহরের দক্ষিণবাজারের বাসিন্দা খায়রুল ইসলামের স্ত্রী নাসরিন আক্তার শামীমা (৪০) প্রাণ হারান এবং আরো ৫জন আহত হন। ১৯ অক্টোবর ভোরে মৌলভীবাজার থেকে চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফেরার পথে ব্রাহ্মণবাজার লুয়াইউনি সড়কে সিএনজি অটোরিকশা চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে সড়কের পাশে গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেলে উপজেলার ভূকশিমইল ইউনিয়নের বাসিন্দা ছমিরুন নেছা (৬০) নামে এক বৃদ্ধা নিহত হন এবং নিহত ছমিরুনের স্বজনসহ (ছেলে, মেয়ে, নাতনি) চালক আহত হন। এদিকে একই দিন রাতে বিদ্যুতের খুঁটিবোঝাই ট্রলির ধাক্কায় উপজেলার কালিটি চা-বাগানে জয় অলমিক (৮) নামক চা ‘শ্রমিক শিশুর মৃত্যু হয়।