• ৩রা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১লা জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

দুর্ঘটনা এড়াতে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহবান প্রধানমন্ত্রীর

sylhetsurma.com
প্রকাশিত অক্টোবর ১৭, ২০১৯
দুর্ঘটনা এড়াতে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহবান প্রধানমন্ত্রীর

সিলেট সুরমা ডেস্ক : সড়ক দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যানবাহন চালক, পথচারিসহ সকলকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, সকলকে রাস্তায় চলাচলে সতর্ক থাকতে হবে।
তিনি বলেন, ‘অহেতুক একটি প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটে। যানবাহন চালকদের ও একটি দায়িত্বশীল ভূমিকা নিতে হবে। তা না হলে দুর্ঘটনা ঘটবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৬ অক্টোবর সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভুলতায় ৪ লেন বিশিষ্ট ফ্লাইওভার, সেতু এবং বাইপাসসহ বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধনকালে প্রদত্ত ভাষণে একথা বলেন।
তাঁর সরকার সড়ক উন্নয়ন করছে তবে, সড়ক ব্যবহারের ক্ষেত্রে সকলকে যত্নবান হওয়ার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোন সড়ক কত বড় বা ভারী যানবাহন চলতে পারে সে বিষয়টা একটু খেয়াল রাখা দরকার। কারণ অনেক সময় অনেকে এই বিষয়টি মানতে চান না।’
তিনি বলেন, নিরাপদ সড়কের কথা আমরা বলছি। ইতোমধ্যে আমরা নিরাপদ সড়ক আইন প্রণয়ন করেছি। কাজেই যারা রাস্তায় চলাচল করেন তারা যখন রাস্তা পার হবেন তখন ডান এবং বাম এই দুইদিকে দেখে সচেতনভাবে পার হতে হবে। আবার রাস্তায় যারা যানবাহন গাড়ি বা মোটরসাইকেল চালাবেন তাদেরও সচেতন হতে হবে। বাস, ট্রাক চালকদেরও সচেতন হতে হবে।
উদ্বোধনকৃত অন্যান্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে- ময়মনসিংহ-গফরগাঁও-টোক সড়কের ৭২তম কিলোমিটারে বানার নদীর উপর ২৮২ দশমিক ৫৫৮ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতু, ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার জাতীয় মহাসড়কের ইন্দ্রপুল হতে চক্রশালা পর্যন্ত বাঁক সরলীকরণ, ভোমরা স্থল বন্দর সংযোগসহ সাতক্ষীরা শহর বাইপাস সড়ক এবং মুন্সীগঞ্জ সড়ক বিভাগধীন ঝুঁকিপূর্ণ সেতুসমূহ (১৩টি সেতু) স্থায়ী কংক্রিট সেতু দ্বারা প্রতিস্থাপন ।
স্থানীয় সংসদ সদস্যবৃন্দ এবং জেলা প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণের উপস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী এ সময় ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, সাতক্ষীরা, নারায়ণগঞ্জ এবং মুন্সীগঞ্জ এলাকার উপকারভোগী এবং বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গণভবন প্রান্তে উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো.নজরুল ইসলাম স্বাগত বক্তৃতা করেন।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো.নজিবুর রহমান অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ, পিএমও সচিব সাজ্জাদুল হাসানসহ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং গণভবনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ ও উর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে আমরা যোগাযোগ ব্যবস্থা করছি যাতে দিনে এসে মানুষ কাজ করে দিনেই নিজ গৃহে ফিরে যেতে পারে। রাজধানী থেকে বিভিন্ন জেলা, উপজেলা পর্যন্ত যেন সরাসরি যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হয় সে জন্য একটি সড়ক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। যার সুভফল পাচ্ছে দেশের জনগণ।
শেখ হাসিনা বলেন, একটা দুর্ঘটনা ঘটলে শুধুমাত্র চালককে দায়ী করলে চলবে না, বরং কি কারণে দুর্ঘটনা ঘটলো সেজন্য যে পথচারি এবং দুর্ঘটনা কবলিত যানের যে চালক তারও কি ভুল আছে সেটাও কিন্ত দেখা দরকার। সেজন্য আমি বলবো চালক থেকে শুরু করে যারা সড়ক ব্যবহারকারী সবারই সচেতনতা একান্তভাবে প্রয়োজন।
তিনি বলেন, একটি দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলো নানা দুঃখ কষ্টের শিকার হয়, কেউ মারা যায়, কেউ পঙ্গু হয়ে থাকে, বিভিন্নভাবে তাদের জীবন-মান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কাজেই এই দিকটা সকলকেই দেখতে হবে।
তিনি এজন্য স্কুল পর্যায় থেকেই সড়কে চলাচলের আইন প্রশিক্ষণ দেওয়ায় তাঁর আহবান পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ‘রাস্তার কোনদিক থেকে হাঁটতে হবে, সেটাও একটি শিক্ষণীয় বিষয়। কখন পার হতে হবে সেটাও শিক্ষণীয় বিষয়। আমি মনে করি, আমাদের প্রতিটি স্কুলে এবং প্রত্যেক শিক্ষার্থীকেই স্কুল জীবন থেকেই এই শিক্ষাটা প্রদান করা একান্তভাবে দরকার।’
প্রধানমন্ত্রী এ সময় তাঁর উদ্বোধন করা সড়ক, সেতু, ফ্লাইওভার এবং বাইপাস ব্যবহারে সকলকে যতœবান হওয়ার আহবান জানান।
তিনি বলেন, আমি তৈরি করে দিচ্ছি কিন্তু এটা দেখভালের দায়িত্ব এবং এটা যাতে নষ্ট না হয় সেজন্য যারা ব্যবহার করবেন এবং স্থানীয় জনগণ সকলেরই এ ব্যাপারে দায়িত্ব রয়েছে। সে দায়িত্ব আপনারা পালন করবেন বলেই আশাকরি।
এ সময় বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্র্য মুক্ত সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে তাঁর সরকার অবশ্যই সক্ষম হবে বলেও আশাবাদ পুনর্ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।