সিলেট সুরমা ডেস্ক : 28987বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদ কর্তৃক কেন্দ্রীয় ঘোষিত কর্মসূচী মোতাবেক সহকারী শিক্ষকের ১১তম গ্রেড ও প্রধান শিক্ষকের ১০ গ্রেডের দাবীতে আজ ২য় দিনের কর্ম বিরতি পালন করেছেন শিক্ষকরা।
মঙ্গলবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সারা দেশের মতো সিলেট জেলায় প্রতিটি বিদ্যালয়ে ধর্মঘট কর্মসূচি পালিত হয়।
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদের সিনিয়র সদস্য মো. শহীদুজ্জামান ঐক্য পরিষদের আহুত কর্মবিরতি কর্মসূচি ২য় দিনের মতো পালন করায় সিলেট জেলার প্রাথমিক নেতৃবৃন্দ ও সকল শিক্ষকবৃন্দকে শুভেচ্ছা জানান।
সিলেট জেলা প্রতিনিধি প্রতাপ কুমার চক্রবর্তী বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদ, কেন্দ্রীয় কমিটি কর্তৃক ঘোষিত কর্মসূচির আলোকে সারা দেশের ন্যায় সিলেট জেলায় কর্মবিরতি শান্তিপূর্ণ ভাবে পালিত হওয়ায় সিলেট জেলার সকল শিক্ষকদের আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান। এদিকে আগামীকাল বুধবার অর্ধ দিবস কর্মসূচী পালনের জন্য জেলার সকল শিক্ষকের প্রতি আহবান জানান।
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদের সিলেট জেলা প্রতিনিধি প্রমথেশ দত্ত বলেন, “আমরা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি না। সরকারী চাকুরী আচরণ বিধি লঙ্ঘন করছি না। আমাদের মর্যাদা রক্ষার জন্য বিধি মোতাবেক দাবী জানিয়ে যাচ্ছি। একইসাথে আগামীকাল অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালনের জন্য তিনি জেলার প্রতিটি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।”
তিনি বলেন, “আমরা দীর্ঘ ৬ বছর যাবত সহকারী শিক্ষকের ১১তম গ্রেডের বিষয়ে সরকারের নিকট বিভিন্নভাবে দাবী জানিয়ে আসছি। ১১তম গ্রেডের যুক্তি ধরে তিনি বলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের সমান গ্রেডে বেতন দিয়েছিলেন। আমরা বঙ্গবন্ধুর দেওয়া বেতনগ্রেড বাস্তবায়ন চাই।”
প্রমথেশ দত্ত বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর নিকট স্মারকলিপি প্রদান, খোলা চিঠি প্রদান, ২০১৫ সালের ১৫ অক্টোবর ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শিক্ষক সমাবেশ, ১ নভেম্বর ২০১৫ সালে অর্থ-মন্ত্রণালয়ে আনুষ্ঠানিক বৈঠকসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মহোদয়ের সাথে সাক্ষাত করেছি। সর্বোপরি বিগত ২৩-২৫ ডিসেম্বর-২০১৭ ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আমরণ অনশন করার পর তৎকালীন মন্ত্রী, সচিব ও ডিজি মহোদয়ের আশ্বাস থাকার পরও আজ অবধি দাবী বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না।”
তিনি বলেন, “আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে ১১তম না দিয়ে সহকারী শিক্ষকের ১২তম গ্রেড ও প্রধান শিক্ষকের ১০গ্রেডের প্রস্তাব দিয়ে অর্থ-মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু দেখা গেল সেটাও অর্থ-মন্ত্রণালয় নাকচ করে দিয়েছেন। আমি মনে করি সেটা বিধিসম্মত হয় নাই। আমাদের মন্ত্রণালয়কে অবজ্ঞা করা হয়েছে। উনারা আমাদের মন্ত্রণালয়কে ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি দিতে পারতেন। শিক্ষক নেতৃবৃন্দকে নিয়ে সভা করতে পারতেন।”
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে বৈষম্য নিরসনের কথা উল্লেখ আছে জানিয়ে তিনি বলেন, “নির্বাচনের পূর্বে প্রত্যেক শিক্ষককে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বৈষম্য নিরসনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভয়েস কল দেওয়া হয়েছিল। আওয়ামী লীগ সরকার বৈষম্য নিরসন করতে চাচ্ছেন। কিন্তু উনারা কেন এটি অবজ্ঞা করছেন, তা আমার বোধগম্য হচ্ছে না। আমার মনে হচ্ছে এখানে স্বাধীনতা বিরোধী কোন অপশক্তি কাজ করছে। এই অপশক্তিকে চিহ্নিত করতে হবে “
তিনি বলেন, “সহকারী শিক্ষকের ১১তম গ্রেড ও প্রধান শিক্ষকের ১০ম গ্রেডে বেতন নির্ধারণের দাবীতে আমরা বাধ্য হয়েছি কর্ম বিরতিতে যেতে। আজ আমরা সিলেট জেলায় কেন্দ্রীয় কর্মসূচি মোতাবেক সকাল ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত কর্ম বিরতি পালন করেছি। আগামীকাল অর্ধ দিবস এবং বৃহস্পতিবার পূর্ণ দিবস কর্মসূচী পালন করা হবে। তারপরও যদি দাবি আদায় না হয় তাহলে আগামী ২৩ অক্টোবর ঢাকায় মহা সমাবেশ করে পরবর্তী লাগাতার কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।”
শিক্ষক ঐক্য পরিষদের সিলেট জেলার এ নেতা বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কন্যা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট বিনীতভাবে আবেদন জানান দাবীটি মেনে নেওয়ার জন্য। একটি ঘোষণা আসলে আমরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিব। সামনে শিক্ষার্থীদের সমাপনী পরীক্ষা। আমরা কথা দিচ্ছি সমাপনী পরীক্ষায় বিগত বছর থেকে এ বছর আরও ভালো ফলাফল নিয়ে আসবো। আমরা মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা অর্জনে নিরলসভাবে কাজ করে আসছি। সরকারের বিভিন্ন সময়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ সফলভাবে বাস্তবায়ন করছি।”