সিলেট সুরমা ডেস্ক : সিলেটের দক্ষিণ সুরমার তেতলী (চেরাগী) গ্রামে বেড়াতে গিয়ে পপি নামের এক তরুণী গণধর্ষণের শিকার হয়ে আত্মহত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার রাতে পপির বাবা শুকুর আলী বাদী হয়ে জামাতাসহ ৪ জনের নাম উল্লেখ করে বিশ্বনাথ থানায় গণধর্ষণ ও আত্মহত্মার প্ররোচরনা আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন, (মামলা নং ৫)।
ওই মামলার এজাহার নামীয় আসামি পপির দুলাভাই ফয়জুল ইসলামকে (৩০) গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। এর আগে সোমবার রাতে বিশ্বনাথ ও দক্ষিণ সুরমা এলাকায় অভিযান চালিয়ে নিজ বসত ঘর থেকে থানা পুলিশের ওসি শামীম মুসা ও ওসি (তদন্ত) রাম প্রসাদ চক্রবর্তি তাকে গ্রেপ্তার করেন। সে দক্ষিণ সুরমা উপজেলার তেতলী চেরাগী গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে।
গণধর্ষণ মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে একই গ্রামের আজিজুল হকের ছেলে জাহাঙ্গীর আলমকে (৩৫)। মামলার অপর দুই আসামির হলেন- একই এলাকার বাসিন্দা আব্দুল মনাফের ছেলে বারিক মিয়া (৩৭) এবং মতছির আলীর ছেলে জাহেদ আহমদ (২২)।
এরআগে গত ১০ অক্টোবর পপি আত্মহত্যার ঘটনায় বিশ্বনাথ থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেন তার বাবা শুকুর আলী।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানাগেছে, গত বৃহস্পতিবার বড়বোনের বাড়ি সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার তেতলী চেরাগী গ্রাম থেকে বাড়ি ফিরেই আত্মহত্যা করে পপি বেগম (২১) নামের ওই তরুণী। ওইদিন দুপুরে বসত ঘরের তীরের সঙ্গে নিজের ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে সে। ময়না তদন্ত শেষে পরদিন শুক্রবার তাকে দাফনও করা হয়। কিন্তু দাফনের দুইদিন পর রোববার পপির হাতব্যাগে একটি চিরকুট পান তার মা জোৎস্না বেগম।
চিরকুটে লেখা, বুধবার রাত সাড়ে ১১টায় বোনের বাড়ি থেকে পপিকে উঠিয়ে নিয়ে যায় বোনজামাইর পাশের বাড়ির জাহাঙ্গীর আলম ও তার সহযোগীরা। পরে রাতভর গণর্ধষণের পাঁচ ঘন্টা পর বৃহস্পতিবার ভোরে পৌঁছে দিয়ে যায় জাহাঙ্গীর। পরে বোনজামাই ফয়জুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে সকালে বাড়ি ফিরেই দুপুরে আত্মহত্যা করেন পপি। পপি বিশ্বনাথের লালটেক গ্রামের হতদরিদ্র শুকুর আলীর মেয়ে। চিরকুট যাচাইয়ের পর বিশ্বনাথ ও দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশের টানাহেঁচড়ার পর অবশেষে বিশ্বনাথ থানা পুলিশ গণধর্ষণ মামলা গ্রহণ করেন।
বিশ্বনাথ থানার ওসি শামীম মুসা ও মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) রমা প্রসাদ চক্রবর্তি বলেন, গণধর্ষণের ঘটনা দক্ষিণ সুরমায় হলেও তারা (দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশ) মামলা নেননি। ফলে মানবিক কারণে বিশ্বনাথ থানায় তারা গণধর্ষণ মামলা নিয়েছেন। ওই মামলায় অভিযুক্ত অপর আসামিদের গ্রেপ্তার প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে বলেও জানিয়েছেন তারা।