সিলেট সুরমা ডেস্ক : সিলেটের দক্ষিণ সুরমা এলাকার কদমতলীতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গিয়েছিলো আগেই। এবার একেবারে নগরীর চৌহাট্টা এলাকায় মিলেছে এডিস মশার লার্ভা। তাও আবার ওই এলাকার শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের পাশেই মিলেছে এডিস মশা ও মশার লার্ভা।
এতো অভিযান, পরিচ্ছন্নতা নামে নানা কর্মসূচী সত্ত্বেও নগরীর একেবারে মধ্যবর্তী স্থানে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. হিমাংশু লাল রায় বলেন, সিলেট নগরে ২৭টি ওয়ার্ডের জমে থাকা পানির নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হচ্ছে। এই পরীক্ষায় প্রথমে নগরীর ২৬ নং ওয়ার্ডের কদমতলীতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গিয়েছিলো আগেই। এবার নগরীর চৌহাট্টার শহীদ ডা. শামসুদ্দিন হাসপাতাল এলাকায় এডিস মশা ও এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গিয়েছে।
সিভিল সার্জন বলেন, সিলেটে শুধুমাত্র এডিস মশার লার্ভা নয় এডিস মশাও পাওয়া গেছে। এডিস মশার এই বংশবৃদ্ধি অবশ্যই বিপদজনক। তাই এডিস মশার উৎপত্তিস্থল ধ্বংস করতে হবে। তা না হলে এই রোগ বৃহতাকারে ছড়িয়ে পরার শঙ্কা বেড়ে যাবে।
এদিকে, সিলেটে প্রতিদিনই নতুন নতুন রোগী আক্রান্ত হচ্ছেন ডেঙ্গুতে। গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেট বিভাগে ডেঙ্গুতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৬ জন।
সিলেট স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, রোববার সকাল ৮টা থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ২২ জন। এছাড়া ৪ জেলা ও নগরীর বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৪ জন।
সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ১৩১ জন রোগী সেবা নিয়েছেন। বর্তমানে ওসমানী মেডিকেলে ভর্তি আছেন ৪৭ জন ডেঙ্গু রোগী। গত ২৪ ঘণ্টায় ২২জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন।
সিলেট সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, এখন পর্যন্ত সিলেট জেলায় ১৯৮জন ডেঙ্গু রোগী সনাক্ত হয়েছেন।
সিলেট স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক ডা. দেবপদ রায় বলেন, এখন পর্যন্ত সিলেটে যারা ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন তার বেশিরভাগই ঢাকা থেকে আক্রান্ত হয়ে আসলেও ঝুঁকি থেকে যায়। কারণ সিলেট ইতোমধ্যে এডিস মশার অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছে। আমরা চিকিৎসকরা সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। তবে ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনসচেতনতার কোনো বিকল্প নেই।
তিনি আরও বলেন, মেয়র আর প্রশাসনের কর্মকর্তারা ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন বলে বসে থাকলে হবে না। নিজ নিজ জায়গা থেকে সকলকে সচেতন হতে হবে। বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখকে হবে। এডিস মশার উৎপত্তিস্থল ধ্বংস করতে হবে।
সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু কর্নারের দায়িত্বরত ডা. সুপার্থ ভট্টাচার্য বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ওসমানী মেডিকেলে ভর্তি হয়েছেন ২২ জন ডেঙ্গু রোগী। বর্তমানে ৪৭জন চিকিৎসাধীন আছেন এখানে। ওসমানী মেডিকেলে ভর্তিরত প্রায় সব রোগীই ঢাকা থেকে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এসেছেন। তারপরও সিলেটে এর প্রাদুর্ভাব বাড়তে পারে। কারণ সিলেট এডিস মশার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে বলে জানতে পেরেছি। তাছাড়া ঈদের ছুটিতে ঢাকা থেকে যখন মানুষজন আসবেন তখন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা আরও বেড়ে যেতে পারে।