সিলেট সুরমা ডেস্ক :বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ বাংলাদেশের প্রথম যুবব সংগঠন যা ১৯৭২ সালের ১১ই নভেম্বর শেখ ফজলুল হক মনি কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হয়। অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও শোষণমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে যুবসমাজকে সম্পৃত করার লক্ষ্য নিয়েই প্রতিষ্ঠিত হয় এই সংগঠন।
গত চার দশকের বেশি সময় ধরে দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রাম ও হাজারো নেতাকর্মীর আত্মত্যাগের মাধ্যমে যুবলীগ আজ দেশের সর্ববৃহৎ যুব সংগঠনে পরিণত হয়েছে। আর এই সর্ববৃহৎ যুব সংগঠনের বাংলাদেশের অন্যতম শাখা সিলেট জেলা যুবলীগের সম্মেলন আগামী ২৯ জুলাই। আর এই সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সিলেট যুবলীগে ফিরে এসেছে প্রাণ।
জেলা যুবলীগের সম্মেলনকে ঘিরে সিলেটে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। নগরীর বিভিন্ন স্থানে পদ প্রত্যাশীদের ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন ও বিভিন্ন বিলবোর্ড শোভা পাচ্ছে। পিছিয়ে নেই সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রার্থী ও প্রার্থী সমর্থকদের প্রচার-প্রচারণা। আর এবারের যুবলীগের কমিটিতে সাবেক ছাত্রলীগনেতাদের দৌড়ঝাঁপও চোখে পড়ার মতো।
ছাত্রলীগের নেতৃত্ব দিয়ে তারা পরিপক্কতা অর্জনের পর এবার সিলেট যুবলীগে নেতৃত্বে ভাগ বসাতে চান তারা। এ কারণে যুবলীগের সম্মেলনকে সামনে রেখে প্রতিদিনই চলছে শোডাউন-পাল্টা শোডাউন। সিলেট জেলা যুবলীগের সিনিয়র নেতারা জানিয়েছেন-২০০৩ সালে জেলা যুবলীগের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
ওই সম্মেলনে জগদীশ চন্দ্র দাসকে সভাপতি ও আজাদুর রহমান আজাদকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি গঠন করা হয়। নির্ধারিত সময় পেরিয়ে পাওয়ার প্রায় তিনবছর পর পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। সিটি নির্বাচনের সময় তৎকালীন সভাপতি জগদীশ ও সম্পাদক আজাদ দু’জনই দলীয় পদ ছেড়ে প্রার্থী হয়েছিলেন।
পরবর্তীতে ২০০৮ সালে আবু তাহের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান খন্দকার মহসিন কামরান। আবু তাহের কারান্তরীণ হলে জেলা যুবলীগের কমিটির সভাপতির পদ নিয়ে সংকট তৈরি হয়। ওই সময় সভাপতির দায়িত্ব দেয়া হয় ভিপি শামীমকে। দীর্ঘ ১১ বছর ধরে এই কমিটি নেতৃত্ব দিচ্ছে সিলেট জেলা যুবলীগকে। কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে গত ৩০ শে জুন সিলেট জেলা যুবলীগের বর্ধিত সভা হয়।
এ সভার পর আগামী ২৯শে জুলাই সিলেট জেলা যুবলীগের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়। এদিকে সম্মেলনকে কেন্দ্র করে যুবলীগের পদ প্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপেরশেষ নেই। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পদকে ঘিরে সরব হয়ে উঠেছেন নেতারা। সম্মেলনের শেষ মুহূর্তে কেউ কেউ আবার চালাচ্ছেন জোর লবিং। সভাপতি পদে এই মুহূর্তে আলোচনায় বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শামীম আহমদ (ভিপি) রয়েছেন।
তার সঙ্গে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলেছেন মহানগর যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম উদ্দিন। বালাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক ছাত্রনেতা সামস্ উদ্দিন সামস্। সাবেক ছাত্রনেতা ও বিশ্বনাথ উপজেলার রামপাশা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. আলমগীর। এছাড়া সভাপতি পদে লবিং চালাচ্ছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরীর ঘনিষ্ঠজন মহানগর যুবলীগের বর্তমান কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান আসাদ।
সাধারণ সম্পাদক পদে লড়াইয়ে রয়েছেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, জেলা পরিষদের সদস্য শামীম আহমদ, খাদিমপাড়ার ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আফসর আহমদ, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মো. জাহাঙ্গীর ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক বাবলা চৌধুরী। তবে সাধারণ সম্পাদক পদে ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের মধ্যে আলোচনার শীর্ষে রয়েছেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম।
জেলা ও মহানগর যুবলীগের সম্মেলনে ইতিমধ্যে সিলেট অবস্থান করছেন দলের শীর্ষ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। সিলেট পৌছে যুবলীগে চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী মাজার জিয়ার করেন। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম। একটি মুহুর্তে যুবলীগে চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী জড়িয়ে ধরেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমকে।
এখন সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবিটি আলোচনার শীর্ষে রয়েছে।
তৃণমূল ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে এখন আস্থা অর্জন করেছেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম।