• ২৯শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১৪ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৬শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

বাগবাড়িতে ব্যক্তি মালিকানাধীন ভূমি খাস খতিয়ানভূক্ত দেখিয়ে ইজারা গ্রহণের নামে ৫১ বছর যাবত জবরদখল

sylhetsurma.com
প্রকাশিত জুলাই ১, ২০১৯
বাগবাড়িতে ব্যক্তি মালিকানাধীন ভূমি খাস খতিয়ানভূক্ত দেখিয়ে ইজারা গ্রহণের নামে ৫১ বছর যাবত জবরদখল

নগরির বাগবাড়ি মৌজায় ব্যক্তি মালিকানাধীন ভূমি সরকারি খাস খতিয়ানভূক্ত দেখিয়ে ইজারা গ্রহণের নামে দীর্ঘ প্রায় ৫১ বছর যাবত জবরদখল করে রেখেছে একটি ভূমি দখলদার চক্র। সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) কার্যালয় থেকে ১৯৬৮ সালে কয়েক ব্যক্তির নামে এ ইজারা প্রদান করা হয়। কিন্তু ইজারা দলিল রেজিস্টারির যে ক্রমঃ দেখানো হয়েছে, কার্যতঃ সিলেট সদর সাব-রেজিস্টার অফিসের রেকর্ড ভলিয়মে এই নামে কোন দলিল নেই। জাল দলিল তৈরীর মাধ্যমে চক্রটি দীর্ঘদিন যাবত ভূমি দখলপূর্বক ভোগ করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
জাল কাগজপত্র তৈরী করে ভূয়া ইজারা গ্রহণকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং কথিত ইজারা বাতিল করে ভূমির প্রকৃত মালিকের ওয়ারিশানদের নিকট ইজারাকৃত ভূমি ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানিয়ে গত (১ জুলাই) সোমবার ভূমির প্রকৃত মালিকের ওয়ারিশান সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার বরইকান্দি গ্রামের মৃত আরব আলীর ছেলে দিলওয়ার আহমদ এবং নগরির ১০নং ওয়ার্ডস্থ ঘাসিটুলা নিবাসী রকিব উদ্দিনের ছেলে রুবেল আহমদ সিলেটের জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি আবেদন পেশ করেছেন। আবেদনের অনুলিপি ভূমিমন্ত্রী, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, ভূমি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এবং সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবরে দেয়া হয়েছে।
পেশকৃত আবেদনে অভিযোগ করে বলা হয়, ১৮৮০ সাল থেকে দরখাস্তকারীদ্বয়ের পূর্বসুরীরা কবুলিয়াত মূলে নগরির ৯০ নং জেএল-এর অন্তর্গত বাগবাড়ি মৌজার ২৩২১ নং দাগে প্রায় সাড়ে ৭ একর ভূমির মালিকানা লাভ করেন। কিন্তু পরবর্তীতে ১৯৫৬ সালে ভূমি জরিপকালে দরখাস্তকারীদ্বয়ের পূর্বসুরীগণের অজ্ঞাতে উপরোক্ত ভূমি সরকারের খাস খতিয়ানভূক্ত হিসেবে রেকর্ড হয়। পরবর্তীতে এ রেকর্ড বাতিলপূর্বক প্রকৃত মালিকের নামে ভূমি ফিরিয়ে দেয়ার লক্ষ্যে আদালতে মামলা হলে আদালত বাদীপক্ষের অনুকূলে রায় প্রদান করেন। কিন্তু এ রায়কে উপেক্ষা করে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) কার্যালয় থেকে ১৯৬৮ সালে পর পর ৩টি ইজারানামার বিপরীতে পৃথক ৩ ব্যক্তির নামে মোট ০.৭৩ শতক ভূমি কৃষিকাজের নিমিত্বে ১০ বছরের জন্য ইজারা প্রদান করা হয়। ইজারা প্রদানের জন্য সিলেট সদর সাব-রেজিস্টার অফিসে যে ৩টি পৃথক দলিল রেজিস্টারি করা হয়েছিল, তারও কোন হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ ইজারা দলিলে যে ক্রমঃ দেখানো হয়েছে, সে ক্রমিকের কোন দলিল সাব-রেজিস্টার অফিসের রেকর্ড ভলিয়মে নেই। এতেই প্রমাণিত হয়, জাল কাগজপত্র সৃষ্টির মাধ্যমে একটি ভূমিখেকো চক্র প্রতারণার মাধ্যমে ব্যক্তি মালিকানাধীন ভূমি খাস খতিয়ানভূক্ত দেখিয়ে জবরদখল করে রেখেছে।
আবেদনে আরো অভিযোগ করা হয়, কথিত ইজারা গ্রহিতারা কৃষিকাজের উদ্দেশ্যে ইজারা গ্রহণ করে পরবর্তীতে তথায় বহুতল বিশিষ্ট পাকা দালান ভবন তৈরী করে ব্যবসা-বাণিজ্য করছেন। যা ইজারার শর্তাবলীর লংঘন। একই ভাবে ১৯৬৮ সালে ১০ বছরের জন্য ইজারা নিয়ে ইজারা নবায়ন বা পুনঃইজারা না নিয়ে অদ্যাবধি পর্যন্ত ভূমি জবরদখল করে রেখেছেন। তাই মারাত্মকভাবে ইজারা বিধি লংঘন করায় ইজারা বাতিল করে প্রকৃত ভূমি মালিকের ওয়ারিশানদের বরাবরে ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানানো হয়।
জেলা প্রশাসক বরাবরে দরখাস্ত পেশকালে দরখাস্তকারীদ্বয় দিলওয়ার আহমদ ও রুবেল আহমদ ছাড়াও অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অত্র দাগের ভূমি মালিক মঈন উদ্দিন আহমদ, পংকী মিয়া, জাকারিয়া আহমদ প্রমুখ।-বিজ্ঞপ্তি