• ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২১শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

ছেলের জীবন বাঁচাতে কিডনি দিলেন মা

sylhetsurma.com
প্রকাশিত জুন ২২, ২০১৯
ছেলের জীবন বাঁচাতে কিডনি দিলেন মা

সিলেট সুরমা ডেস্ক : ‘মা’ শব্দের ব্যাপ্তি যে কতটা বিশাল তা একমাত্র সন্তানই জানে। একমাত্র সন্তানের মুখের হাসির জন্য মা পৃথিবীতে সব কিছু ত্যাগ করতে পারেন। নিজের জীবনের বিনিময়ে সন্তানের জীবন বাঁচিয়েছেন মা। এ ধরনের ঘটনার অনেক নজির রয়েছে পৃথিবীতে। সন্তানের জন্য ভালোবাসার এমই দৃষ্টান্ত গড়েছেন মৌলভীবাজারের বড়লেখার এক মা। ছেলের জীবন বাঁচাতে নিজের একটি কিডনি দিয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, নাড়িছেঁড়া ধনকে বাঁচাতে বাংলাদেশ থেকে তিনি ছুটে গিয়েছেন সংযুক্ত আরব-আমিরাতে।

ওই মায়ের নাম সালেহা বেগম (৪৪)। তিনি বড়লেখা পৌরসভার পাখিয়ালা গ্রামের প্রবাসী ফখর উদ্দিনের স্ত্রী। বুধবার (১৯ জুন) সন্ধ্যায় সংযুক্ত আরব আমিরাতে আবুধাবি শেখ খলিফা হাসপাতালে মায়ের দেওয়া কিডনি ছেলের দেহে সফলভাবে প্রতিস্থাপন করেছেন চিকিৎসকরা। বর্তমানে মা ও ছেলে দুজনেই সুস্থ রয়েছেন বলে জানা গেছে।

আমিরাত প্রবাসী বেলালের মামাতো ভাই মুহিবুর রহমান বৃহস্পতিবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করে মুঠোফোনে এ প্রতিবেদককে বলেন, বেলালের দুটি কিডনি নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। পরে ফুফু (বেলালের মা) তাঁকে একটি কিডনি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। বেলালকে কিডনি দিতে ফুফু কয়েক মাস আগে দেশ থেকে এখানে এসেছেন। বুধবার সন্ধ্যা আরব-আমিরাতের একটি হাসপাতালে অপারেশনের মাধ্যমে বেলালের দেহে কিডনি সফলভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। মা ও ছেলে দুইজনে সুস্থ আছেন।

তিনি বলেন, এই বয়সে নিজের কথা চিন্তা না করে একজন মা ছেলেকে বাঁচাতে নিজের একটি কিডনি দিয়েছেন। মায়ের ভালবাসার একটি অনন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে এই ঘটনা।

বেলালের স্বজন ও প্রতিবেশী সূত্রে জানা গেছে, বেলাল আহমদ (২৮) প্রায় ৬ বছর আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতে পাড়ি জমান। সেখানে তিনি তাঁর বাবার সাথে থাকেন। বেলাল সেখানে একটি কোম্পানিতে চাকরি করেন। কিন্তু বেলাল দীর্ঘদিন ধরে কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন। কিডনি ডায়ালাইসিস করেও তার অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। সম্প্রতি চিকিৎসকরা বেলালকে জানান তাঁর দুটো কিডনি একেবারে অকেজো হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় চিকিৎসকরা তাকে কিডনি প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেন।

এদিকে বেলালের দুটো কিডনি নষ্ট হওয়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন তার মা সালেহা বেগম। এই অবস্থায় নিজের কথা চিন্তা না করে একটি কিডনি ছেলেকে দেওয়ায় সিদ্ধান্ত নেন তিনি। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ছেলের কিডনি সাথে মিলে যাওয়ায় সম্প্রতি সালেহা বেগম সংযুক্ত আরব-আমিরাতে যান। গত (১৯ জুন) বুধবার আমিরাতে আবুধাবি শেখ খলিফা হাসপাতালের চিকিৎসকরা মায়ের দেওয়া একটি কিডনি ছেলের দেহে সফলভাবে প্রতিস্থাপন করতে সক্ষম হন।