সিলেট জেলার কানাইঘাট উপজেলায় অবস্থিত শেওতচূরা জলমহাল ১৪২৬-১৪২৮ বাংলা সন মেয়াদে ইজারা প্রাপ্তির আবেদন জানিয়ে সিলেট জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদন জানিয়েছেন ঝিঙ্গারখাল মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিমিটেডের পক্ষে সভাপতি সুনা উল্যা। গত ১৩ মে সিলেট জেলা প্রশাসক বরাবর ঝিঙ্গারখাল মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির প্রকৃত মৎস্যজীবিরা এ আবেদনপত্র প্রদান করেন। লিখিত আবেদনে তারা উল্লেখ করেন, কানাইঘাট উপজেলায় অবস্থিত শেওতচূরা জলমহাল বিগত ১৪২৩-১৪২৫ বাংলা সন পর্যন্ত ৩ বৎসর মেয়াদে শাহজালাল মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি ইজারা প্রাপ্ত হয়ে ভোগদখল করার পর ১৪২৬-১৪২৮ বাংলা পর্যন্ত মেয়াদের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার কানাইঘাট কার্যালয় হইতে স্মারক নং- ০৫.৪৬.৯২৫৯.০০০.০০.০০০.১৯.১৫৭(৭০), তারিখ: ৩০ মাঘ/১৪২৫ বাংলা, ১২/০২/২০১৯খ্রি: তারিখে ২০.০০ একর পর্যন্ত জলমহাল সমূহের ইজারা প্রদানের লক্ষ্যে আহ্বান বিজ্ঞপ্তি জলমহাল ব্যবস্থাপনা নীতিমালা ২০০৯ এর আলোকে ১৪২৬-১৪২৮ বাংলা মেয়াদে বন্দোবস্ত গ্রহনে ইচ্ছুক মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি সমূহের কাছ হতে আবেদন আহ্বান করা হয়। এর প্রেক্ষিতে শেওতচুরা জলমহাল বন্দোবস্ত গ্রহণের জন্য ১নং ঝিঙ্গারখাল মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিঃ, কানাইঘাট, সিলেট, ২নং বেতকান্দি মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লি: কানাইঘাট, সিলেট, ৩নং কালাগুল মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লি:, কানাইঘাট, সিলেট, ৪নং শাহজালাল মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিঃ, কানাইঘাট, সিলেট টেন্ডার অংশগ্রহন করেন। ঝিঙ্গারখাল মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিঃ এর সদস্য সবাই প্রকৃত মৎস্যজীবি এবং তাদের অবস্থান ‘শেওতচুরা’ জলমহালের তীরে। আর এজন্য তারা ইজারা পাওয়ার যোগ্য। এ ছাড়া পাশাপাশি কিছু অমৎস্যজীবি আরোও দুইটি সমবায় সমিতি নব্য সৃষ্টি করে যার নাম কালাগুল মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিঃ। যার সভাপতি ইছমাইল আলী ও তার ছেলে প্রবাসী হয়েও সে সদস্য, অপর দুইজন সদস্য আনছার ভি.ডি.পিতে চাকুরী করে, তারা ও সদস্য। শাহজালাল মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিঃ এর সভাপতি ফখর উদ্দিন তিনি নিজেও একজন অমৎস্যজীবি। প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকলের চোখে ধুলো দিয়ে একজন অমৎস্যজীবি শাহজালাল মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিঃ এর সভাপতি হয়ে রহস্যজনকভাবে শেওতচুরা জলমহাল বন্দোবস্ত নিয়ে ভোগদখল করে, তারা কারো বোধগম্য নয়। তাছাড়া মামলাবাজ ফখর উদ্দিন শাহজালাল মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিঃ বর্তমানে ১৪২৬-১৪২৮ বাংলা সনের জন্য টেন্ডারে অংশগ্রহন করেন এবং মহামান্য হাইকোর্টে মামলাও দায়ের করেন। আরেকদিকে সরকারি ভাবে সরেজমিনে মাপ যোগও হয়। সরেজমিন মাপ যোগ কালে তার সমিতির অবস্থান হয় চৌদ্দ হাজার একশত দশ ফুট দুরত্বে ও ঝিঙ্গারখাল মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিমিটেডের অবস্থান দশ হাজার আটশত চৌচাল্লিশ ফুট দুরত্বে। এতে বুঝা যায়, ঝিঙ্গারখাল মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিঃ জলমহালের তীরবর্তী ও নিকটবর্তী স্থানে অবস্থিত। অমৎস্যজীবি ফখর উদ্দিন দুইটি সমিতি সৃষ্টি করে সরকারি সম্পত্তি ও সরকারি জলমহালে ক্ষতিসাধন করে যাচ্ছেন বলে লিখিত আবেদনে উল্লেখ করেন ঝিঙ্গারখাল মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিমিটেডের প্রকৃত মৎস্যজীবিরা।
১৪২৩ বাংলা সনে যখন শাহজালাল মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিঃ ‘শেওতচুরা’ জলমহাল ইজারা গ্রহন করেন, ইজারা গ্রহন করার পর দেখা যায় উক্ত জলমহাল নিয়া মহামান্য হাইকোর্টে ০৩ (তিন) টি রিট মামলা যথাক্রমে রিট পিটিশন নং-৩১০/২০১৪, নং-১১২/১৪ এবং ৫৩৩৬/১৬ পেন্ডিং অবস্থায় ছিল। সে কারণে দখল বুঝিয়ে দেওয়া যথা সময়ে সম্ভবপর হয়নি। উল্লেখ্য, টেন্ডার নোটিশে বর্ণনা আছে যদি কোন মামলা মোকদ্দমা বা এই জাতীয় অন্য কোন কারণে যথাসময়ে দখল প্রদানে বিঘœ ঘটে তা হলে কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকিবেন না এবং এই কারণে কোন ক্ষতিপূরণ দাবী করা যাবে না। ইজারা গ্রহীতার ইজারা মেয়াদ শেষ হওয়ার প্রাক্কালে ফখর উদ্দিন ‘শেওতচুরা’ জলমহাল পররবর্তী ইজারা দেওয়ার কালে জটিলতা সৃষ্টি করার জন্য বিগত ৩০/১০/২০১৮খ্রি: তারিখে ও ০৩/০২/২০১৯খ্রি: তারিখে দুইটি আবেদন দাখিল করেন এর প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসের ০৩/০২/২০১৯ইং তারিখের এবং ১২/০২/২০১৯ইং তারিখের স্মারক নং-১২৮ ও ১৫৮নং স্মারকদ্বয় মাধ্যমে নিষ্পত্তি করে দরখাস্তকারীকে অবহিত করা হয় এবং জেলা প্রশাসক, সিলেট মহোদয়কে রিট পিটিশন নং-১৬৭৫/২০১৯ এর দফাওয়ারী জবাব ২২/০৩/২০১৯ইং তারিখে ৩৩৬নং স্মারকে প্রেরন করা হয়। মহামান্য হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার প্রচেষ্টা করেছেন এই ফখর উদ্দিন।
এই সম্পর্কে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কানাইঘাট অত্যন্ত যথাযথ একটি প্রতিবেদন দিয়াছেন (অনুলিপি সংযুক্ত), জেলা প্রশাসক, সিলেট বরাবরে এবং এই রিপোর্টটি সম্ভবত: জেলা প্রশাসক মহোদয় সিলেটের নির্দেশে বিজ্ঞ সরকারী কৌসুলী খাদেমুল মিল্লাত মোঃ জালাল সাহেব বরাবরে মতামতের জন্য প্রেরন করা হয়, তিনি হাইকোর্টের আদেশ
“Therefore, we direct the Respondent No. 2, Upazila Nirbahi Office, Kanaighat, Sylhet to dispose of the representations of the petitioner’s dated 31.10.2018 and 03.02.2019 (Annexure-J and J-I) within 2 (two) weeks on receipt of this order without any fail and to grant whether lease of Õ†kIZPzivÕ, fishery measuring an area of 15.63 acres can be extended from 1426-1428 B.S after accepting the lease money from the petitioner. The parties are also directed to maintain status-quo from leasing the said fishery till disposal of those applications as directed.”
বিস্তারিত আলোচনার পর ‘শেওতচুরা’ জলমহালের ইজারা প্রদান কার্যক্রমের উপর মহামান্য আদালতের আদেশের আলোকে বিধি মোতাবেক পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহনের নিমিত্ত্বে জেলা প্রশাসক, সিলেট মহোদয়ের মাধ্যমে বিজ্ঞ সরকারী কৌসুলীর মতামত চাওয়ার জন্য সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয় বলে জেলা প্রশাসক মহোদয় বরাবরে প্রতিবেদন প্রেরন করা হয়।
এমতাবস্থায় মহামান্য সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের ০৪/০৪/২০১৯খ্রি: তারিখের আদেশের প্রেক্ষিতে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রম সম্পর্কে মতামত প্রেরনের জন্য বিনীত অনুরোধ করা হইল।
রিট পিটিশনার ফখর উদ্দিন কর্তৃক দাখিলকৃত যে দুইটি আবেদন ০৩/০২/২০১৯খ্রি: তারিখে নিষ্পত্তি করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কানাইঘাট আবেদনকারীকে স্মারক নং-১২৮ এবং ১৫৮নং স্মারকে দরখাস্তকারীকে জানাচ্ছেন। স্বা/অপাঠ্য: (তানিয়া সুলতানা), উপজেলা নির্বাহী অফিসার, কানাইঘাট, সিলেট।
মহামান্য হাইকোর্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসার কানাইঘাটকে রিট দায়েরকারীর দুইটি আবেদন ৩১/১০/২০১৮ এবং ০৩/০২/২০১৯ অবশ্য দুই সপ্তাহের মধ্যে নিষ্পত্তি করার জন্য আদেশ দিয়াছেন এবং শেওতচুরা জলমহালের আয়তন ১৫.৬৩ একর এর ১৪২৬-১৪২৮ পর্যন্ত লিজ মানি গ্রহন করে লিজ বর্ধিত করা যায় কিনা মর্মে দেখার জন্য এখানে বন্দোবস্ত প্রদানের আদেশ দেওয়া হয় নাই। যে দুইটি আবেদন ফখর উদ্দিন কর্তৃক দাখিলকৃত এইগুলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জলমহালটির ইজারা প্রদানে স্থগিতাদেশ দেন।
বিজ্ঞ সরকারী কৌসুলীর মতামত উপজেলা নির্বাহী অফিসার কানাইঘাট এর প্রতিবেদনের ১ম পৃষ্ঠায় দেয়া হয়েছে, মতামতটি যাচাই করা যাইতে পারে। অথবা বিজ্ঞ সলিসিটার উইং মহোদয়ের মতামতের জন্য প্রেরণ করা যেতে পারে।
শেওতচুরা জলমহাল ঝিঙ্গারখাল মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিঃ বরাবরে ১৪২৬-১৪২৮ বাংলা মেয়াদ বন্দোবস্ত প্রদানের আদেশ দানে জেলা প্রশাসনসহ প্রশাসনিক উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন ঝিঙ্গারখাল মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিমিটেড । প্রেস-বিজ্ঞপ্তি।