সিলেট সুরমা ডেস্ক : ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র মোকাবিলায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে সিলেট জেলা প্রশাসন। জেলার সব উপজেলাগুলোতে খোলা হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্র। এছাড়া হাওরাঞ্চলের মানুষদের নিরাপদ স্থানে থাকতে প্রতিটি উপজেলায় মাইকিং করা হয়েছে।
পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে সিলেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে খোলা হয়েছে মনিটরিং সেল। পাশাপাশি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) তত্ত্বাবধানে উপজেলাগুলোতে মনিটরিং সেল খোলা করা হয়েছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র প্রভাবে জেলাটিতে শুক্রবার (৩ মে) দুপুর থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে ।
সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সন্দ্বীপ সিংহ বলেন, আশ্রয় কেন্দ্রের পাশাপাশি প্রয়োজনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকেও আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে কাজে লাগাতে ইউএনওদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
দুর্যোগ মোকাবিলায় সিলেট জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জরুরি সভা হয়েছে। জেলা এবং উপজেলার সব ত্রাণ ও দুর্যোগ পুনর্বাসন কমিটিকে কাজে লাগাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দুযোর্গ মোকাবিলায় সরকারের সব সেক্টর হাতে হাত রেখে কাজ করবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। এজন্য সারাদেশের ন্যায় সিলেটের মাঠ পর্যায়ের সরকারি সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রস্তুত রাখা হয়েছে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের।
সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. হিমাংশু লাল রায় বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রতিটি উপজেলার মেডিকেল অফিসারদের তত্ত্বাবধানে টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যে কোনো দুর্যোগে রুটিন ওয়ার্ক হিসেবেই চিকিৎসক প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
সিলেটের আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ সিলেটের ওপর দিয়ে বয়ে যাবে, তবে বাতাসের গতিবেগ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকলেও ক্ষতির আশঙ্কা দেখছেন না তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (২ মে) দিনভর ও শুক্রবার সকালে সিলেটের বিভিন্ন উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ মোকাবিলায় সাধারণ মানুষকে সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে নদী ও হাওরাঞ্চলের মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে। নদ-নদীতে নৌকা চলাচল বন্ধ রাখতেও উপজেলা প্রশাসনের তরফ থেকে মাইকিং করছেন স্বেচ্ছাসেবীরা।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র প্রভাবে সকাল থেকে সিলেটের আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ছিল।
ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র তাণ্ডব এরই মধ্যে ভারতের উড়িষ্যায় শুরু হয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন উপকূলে এর প্রভাবে ২০০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বইছে। সকাল থেকেই শুরু হয়েছে বৃষ্টি।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (০৩ মে) সকাল ৯টা নাগাদ রাজ্যের পুরী জেলায় এটি আঘাত হানতে শুরু করে। এ সময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৭৫ কিলোমিটার। আর ঘূর্ণিঝড়টির চোখ ২৮ কিলোমিটার বিস্তৃত। ঝড়ে পুরীসহ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় ভেঙে পড়েছে গাছ ও ঘরবাড়ি।
ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ বিকেল নাগাদ উড়িষ্যা উপকূল অতিক্রম করে কিছুটা দুর্ভল হয়ে পশ্চিমবঙ্গ হয়ে মধ্যরাতে বাংলাদেশের খুলনা অঞ্চলে আঘাত হানতে পারে। ইতোমধ্যে ফণীর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্নস্থানে বৃষ্টিপাত ও ঝড়ো বাতাস বয়ে যাচ্ছে। তবে খুলনার দিকে আসতে আসতে প্রলয়ঙ্কারী ফণী’র তেজ অনেকটাই কমে যাবে বলে মনে করছেন ভারতের আবহাওয়া অধিদফতর।