সিলেট সুরমা ডেস্ক : সিলেটের স্থানীয় দৈনিক শুভ প্রতিদিনের নিজস্ব আলোকচিত্রী (ফটো সাংবাদিক) ও সিলেট প্রেসক্লাবের সদস্য করিম মিয়ার উপর সন্ত্রাসী হামলা ঘটনায় এজহার নামীয় ২ নম্বর আসামি আলম উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গতকাল শনিবার বিকেলে দক্ষিণ সুরমা জিঞ্জর শাহের মাজারের পেছন থেকে মাদক সেবনকালে তাকে গ্রেপ্তার করেন মামলার তদন্তকারী কর্মমর্তা দক্ষিণ সুরমা ফাঁড়ির এসআই শাহজাহান। গ্রেপ্তারকৃত আলম দক্ষিণ সুরমা টেকনিক্যাল সড়কের আলোচিত শাহিন হত্যামামলারও আসামী।
গত বৃহস্পতিবার বিকেল ৩ টায় একই এলাকার মাদক ব্যবসায়ী গিয়াস, ডালিম ও শাহীন হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভূক্ত আসামী আলমসহ অজ্ঞাত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা পূর্ব শত্রুতার জেরে সাংবাদিক করিম মিয়ার নিজ বাড়িতে হামলা চালায়।
হামলাকারীরা করিমের শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাত করে গুরুতর আহত করে। হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার পর করিম মিয়া দক্ষিণ সুরমা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর (২৪৩)।
তিনি গত শুক্রবার দিবাগত রাত প্রায় ১২টার দিকে দক্ষিণ সুরমা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। দক্ষিণ সুরমা বরইকান্দি সুনামপুর এলাকার মৃত জয়নুল মিয়ার ছেলে গিয়াস উদ্দিনকে প্রধান আসামী ও তার দুই সহোদর আলম উদ্দিন, ডালিম উদ্দিনকে আসামী করে মামলা রজ্জু হয়।
মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, আসামীরা অত্যন্ত দাঙ্গাবাজ, পরধনলোভী, সন্ত্রাসী ও খুনি প্রকৃতির লোক। ২ নম্বর আসামী আলম উদ্দিন বরইকান্দি এলাকার বাসিন্দা। আলোচিত শাহিন হত্যা মামলার এজাহার নামীয় আসামী ও তাঁর বিরুদ্ধে আদালতের গ্রেফতারি পরওয়ানা জারি রয়েছে। মামলার প্রধান আসামী গিয়াস উদ্দিন মাদক ও অসামাজিক কর্মকান্ড-চালিয়ে আসছে। ৩ নং আসামী ডালিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে দক্ষিণ সুরমা থানার বেশ কয়েকটি চুরি ও ছিনতাই মামলার আসামী ছিলো। ডালিম উদ্দিন একজন মাদকাসক্ত।
ঘটনার দিন গত বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় আসামীরা আমার বসতঘর ও পৈত্রিক ভুমি জোরপূর্বক দখল করার জন্য দেশিয় অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জ্বিত হয়ে আচমকা হামলা চালায়। ১ নং আসামী গিয়াস উদ্দিনের নেতৃর্ত্বে ২ নং আসামী আলম উদ্দিন ও ৩ নং আসামী ডালিম আমাকে হত্যা করার জন্য আমার উপর দেশীয় অস্ত্র ও গ্যাসের পাইপ দিয়ে মাথায় আঘাত করতে চাইলে আমি বাম হাত দিয়ে তা প্রতিরোধ করলে আমার বাম হাতের কনুইয়ের উপর ফুলাজখম প্রাপ্ত হয়।
১ নং আসামী গিয়াস উদ্দিন আমাকে মাটিতে ফেলে ডান পায়ের হাটুর নীচে উপর্যুপরি লাঠি দিয়ে আঘাত করে। আসামীরা মারপিট করার পাশাপাশি হুমকি দিয়ে বলে ‘তুই তো তর বাপের ঘরে একা, তকে মেরে ফেললে তর সম্পত্তি আমাদের হয়ে যাবে, ওরে মেরে ফেল’ এই বলে বিবাদীরা বার বার আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিট করার পাশাপাশি আমার বসতঘরে প্রবেশ করে আমার অসুস্থ পিতা মো. শাহাব উদ্দিন ও মাতাকে শারিরীকভাবে লাঞ্ছিত করে ঘর থেকে বাহিরে নিয়ে আসে।
এ সময় বিবাদীরা আমার বসতঘরে ঢুকে লুটপাট চালায়। বিবাদীরা আমার বসতঘরের ভেতরে টেবিলের উপরে থাকা আমার ব্যবহৃত ডিএসএলআর ক্যামেরা, যার মূল্য ৫৫ হাজার টাকা ও ক্যামেরার ল্যান্স, যার মূল্য ১৬ হাজার টাকা ও আলমীরা থেকে আমার স্ত্রীর ৪ তুলা গহনা যার মূল্য ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা এবং নগদ ৭ হাজার ৫৯০ টাকা লুটে নিয়ে আমাকে আহতাবস্থায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। আমার স্বজনরা আমাকে নিয়ে যান সিলেট ওসমানী হাসপাতালে।
আলম উদ্দিনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে মহানগর পুলিশের দক্ষিণ সুরমার ফাঁড়ির এসআই শাহজাহান বলেন, অপরাধীদের ধরতে আমরা পিছু হঠবোনা। যে যত বড় অপরাধী হউক না কেন। একজনকে গ্রেপ্তার করেছি। অন্য পলাতক আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।