• ২৮শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১৩ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৬শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

অন্ত:স্বত্তা গৃহবধূকে নির্যাতনের অভিযোগে এসআইয়ের বিরুদ্ধে মামলা

sylhetsurma.com
প্রকাশিত জানুয়ারি ২৩, ২০১৯
অন্ত:স্বত্তা গৃহবধূকে নির্যাতনের অভিযোগে এসআইয়ের বিরুদ্ধে মামলা

অন্ত:স্বত্তা গৃহবধূকে নির্যাতনের অভিযোগে এসআইয়ের বিরুদ্ধে মামলা

সিলেট সুরমা ডেস্ক : মেহেরপুর শহরের দিঘিরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মেহেদী হাসান বাকের নামের এক যুবককে ধরতে গিয়ে তাকে না পেয়ে তার অন্ত:স্বত্তা স্ত্রীর ওপর নির্যাতন, বাড়ির আসবাবপত্র ভাঙচুর, নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও মোটরসাইকেল লুটের অভিযোগে লস্কর লাজুল ইসলাম ওরফে জিয়া নামের এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা জিয়া মেহেরপুর সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

বুধবার দুপুরে বাকের হোসেনের স্ত্রী মারিয়া খাতুন বাদি হয়ে মেহেরপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ২য় আদালতের বিচারক হাদিউজ্জামানের আদালতে এসআই জিয়ার বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন। যার পিটিশন নম্বর -৮/১৯। মামলাটি আমলে নিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

অপরদিকে, মেহেরপুরের পুলিশ সুপার এ ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। তদন্ত কমিটিকে ৩ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি ওবাইদুর রহমান, ডিআইও ওয়ান ফারুক হোসেন।

মামলার বিবরণে বাকেরের অন্ত:সত্ত্বা স্ত্রী মারিয়া খাতুন বলেন, গত মঙ্গলবার দুপুরে বাদি বাড়িতে একা ছিলেন এবং দুপুরের রান্না করছিলাম। এমন সময় এসআই জিয়া আরও দুই জন পুলিশ কনস্টেবল নিয়ে বাড়ির দরজায় ডাকাডাকি শুরু করেন। বাড়িতে কেউ নাই- এ কথা বলাতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে টিনের দরজায় লাথি মারলে দরজা খুলে যায়। তখন তিনি ভিতরে প্রবেশ করেন। এ সময় গালিগালাজ করতে করতে ঘরের মধ্যে ঢুকে ঘরের আসবাবপত্র তছনছ করা শুরু করে। চেয়ার টেবিলসহ বিভিন্ন জিনিস ভাঙচুর করে এবং আলামারিতে থাকা নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে। পরে রান্না ঘরে মোটরসাইকেল দেখে চাবি চায়। চাবি দিতে না চাইলে তখন তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় এবং বিভিন্ন হুমকি দেয়। এক পর্যায়ে চাবি দিলে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা মূল্যের এ্যাপাচি আরটিআর ব্রান্ডের মোটরসাইকেল টি নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান এবং বলেন টাকা নিয়ে গিয়ে মোটরসাইকেল ফেরত নিয়ে আসতে। এজাহারে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ারে থাকা নগদ ৮৫ হাজার টাকা, ৯১ হাজার টাকা মূল্যে স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে গেছেন।
মেহেদী হাসান বাকের বলেন, সোহেল নামের এক অটোচালকের সঙ্গে পূর্বের একটি বিরোধ থেকে সে থানায় আমার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করে। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে এসআই জিয়া আটক করতে আসেন।

তিনি অভিযোগ করে জানান, অপরাধ করলে আমি করেছি। আমার স্ত্রী কোন অপরাধ করেনি। আমার বাড়ি- ঘর কোন অপরাধ করেনি। আমার বাবাও একজন পুলিশ কর্মচারী। পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে এ ধরণের ব্যবহার তিনি করতে পারেন না। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।

প্রতিবেশী আনজিরা খাতুন জানান, তিনটি পুলিশ এসে বাড়ির ভিতরে সবকিছু ভেঙ্গে চুরে মোটরসাইকেলটি নিয়ে চলে গেলো। যাওয়ার সময় আজে বাজে গালিগালাজ করেছে। বাকেরের পোয়াতি (অন্ত:সত্ত্বা) বউকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে।

এদিকে অভিযুক্ত এসআই লস্কর লাজুল ইসলাম জিয়া বলেন, তার বিরুদ্ধে করা সকল অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। তবে স্বীকার করে তিনি বলেন, বাড়িতে একটি অনটেষ্ট (লাইসেন্স বিহীন) মোটরসাইকেল ছিল সেটি নিয়ে এসেছি। মোটরসাইকেল কোন অপরাধে নিয়ে আসলেন এমন প্রশ্নে তিনি কোন জবাব দেননি।

মেহেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও পুলিশ প্রশাসনের তদন্ত কমিটির প্রধান শেখ জাহিদুল ইসলাম জানান, তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

তথ্য সূত্র, মানবজমিন লিংক সংযুক্ত