সিলেট সুরমা ডেস্ক : আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীসহ প্রার্থীদের নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত ভোট কেন্দ্রে অবস্থান করার আহবান জানিয়ে বলেছেন, যদি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বা বিএনপি নির্বাচন বয়কটের ঘোষণাও দেয় তবুও আপনারা বিভ্রান্ত হবেন না।
তিনি বলেন, ‘আমি সবাইকে সাবধান করে দিচ্ছি বিএনপি-জামাতের একটি চরিত্রই রয়েছে নির্বাচনের মাঝপথেই তারা ঘোষণা দিতে পারে নির্বাচনে আমরা অংশ নিব না এবং আমরা নির্বাচন বয়কট করলাম। সেক্ষেত্রে আমি আমাদের প্রার্থী এবং অন্যদলের যারা রয়েছেন তাদেরকে বলবো নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত ভোট চালিয়ে যেতে।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) দিনাজপুরের আওয়ামী লীগ নেতা ডা. মাহবুবুর রহমাকে দেখতে গিয়ে একথা বলেন। ডা. মাহাবুব বিএনপি-জামাতের সন্ত্রাসি হামলায় গুরুতর আহতাবস্থায় সিএমএইচ-এ চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
শেখ হাসিনা সকলের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমি বলতে চাই, বিএনপি নির্বাচনের মাঝামাঝি সময়েই হয়তো বলে বসবে আমরা নির্বাচন থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিচ্ছি এবং আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবো না, এটা বিশ্বাস করবেন না। এটা তাদের আরেকটি গেম।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি এসময় দলের প্রতিনিধি এবং নির্বাচনী এজেন্টদের প্রত্যেকটি ভোট কেন্দ্রে নির্বাচনের ফল ঘোষণার আগ পর্যন্ত অবস্থান করারও আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা নির্বাচনে আমাদের প্রার্থী, মহাজোটের প্রার্থী এবং এজেন্টবৃন্দ রয়েছেন তাদেরকে আমি বলতে চাই নির্বাচনের শেষ অবদি আপনারা ভোট কেন্দ্রে থাকবেন এবং রিটার্নিং অফিসার এবং প্রিসাইডিং অফিসারদের স্বাক্ষর করা ভোটের ফলাফল নিয়ে তবেই বাড়িতে ফিরবেন।’
আগামীকালের নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠানের দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে- এটাই আমাদের প্রত্যাশা।’
‘যদি আমরা শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন করতে পারি, আমি আপনাদের একুটু নিশ্চয়তা দিতে পারি স্থানীয় এবং বিদেশী বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে এবং দেশের অর্থনীতি আরো শক্তিশালী হবে, ’যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা এ সময় জাতির পিতার স্বপ্নের উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ায় তাঁর দৃঢ় আস্থা পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ‘কাজেই আমরা চাইব নির্বাচনটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হোক।’ তিনি বলেন, ‘আমার বিশ্বাস জনগণ আমাদের ভোট দিলে আমরা ক্ষমতায় থাকেবো, নচেৎ নয়,আমি এটা জনগণের ওপরই ছেড়ে দিলাম।’
শেখ হাসিনা এ সময় ৬ জন আওয়ামী লীগ নেতাকে হত্যা এবং ৪৫০ জনের অধিক নেতা-কর্মীকে সহিংস ঘটনা ঘটিয়ে আহত করার কঠোর সমালোচনা করেন।
নির্বাচনের আগে সারাদেশে বিএনপি-জামায়াত পরিকল্পিতভাবে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ওপর গোপন হামলা চালাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তারা একদিকে বিদেশে আমাদের নামে নালিশ করছে অন্যদিকে আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করছে।’
তিনি দলের নেতা-কর্মীদের ধৈর্য্য ধারনের আহবান জানিয়ে বলেন, আমরা ক্ষমতায় থাকলেও বিএনপি-জামায়াত আমাদের দলের অনেক নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছে কিন্তু আমাদের দলের সবাইকে ধৈর্য্য ধারণ করতে হবে। কেননা আমরা জানি জনগণ আমাদেরকেই ভোট দেবে।
দেশের জনগণ আগামীকাল একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রত্যাশা করে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, কাজেই আমাদের খেয়াল রাখতে হবে কেউ যেন নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে না পারে এবং আওয়ামী লীগ এবং মহাজোটের প্রার্থী এবং নেতা-কর্মীদের এ বিষয়ে ধৈর্য্য ধারণ করতে হবে।
ঢাকা, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৮ (বাসস)