সিলেট সুরমা ডেস্ক : ভারতের চেন্নাইয়ে আদাম্বাক্কাম। সেখানে একটি হোস্টেলে লুকানো অনেক ক্যামেরা। সকেটের ভিতর ক্যামেরা। বাল্বের ভিতর ক্যামেরা। হ্যাঙ্গারে ক্যামেরা। এমন কি হোটেল মালিকের হাতঘড়িতে ক্যামেরা। এসব ক্যামেরা ব্যবহার করে ওই হোস্টেলে আশ্রয় নেয়া যুবতীদের গোপনে ভিডিও ধারণ করা হতো। এমন গুরুত্বর ঘটনা ফাঁস হয়ে পড়ে বাথরুমের একটি প্লাগ-সকেট খুলে মেঝেতে পড়ার পর।
সংশ্লিষ্ট যুবতীরা দেখতে পান তার ভিতর থেকে বেরিয়ে আসছে একটি ক্যামেরা। অমনি শুরু হয়ে যায় গা শিউরানো এক আতঙ্ক। আদাম্বাক্কামে এ কাজটি করেছেন সম্পদ রাজ নামে এক ব্যক্তি। তার আসল বাড়ি ত্রিছিতে। একজন ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রাজুয়েট তিনি। রিয়েল এস্টেটের ব্যবসা করে বড় ব্যবসায়ী হতে ছুটে গিয়েছেন চেন্নাইয়ে। কিন্তু ওই ব্যবসায় ভাল করতে পারেন নি। বেশ বড় অংকের লোকসান খান। ২০১১ সালে কেন্দ্রীয় অপরাধ বিভাগ তার বিরুদ্ধে ভূমি দখলের অভিযোগে একটি মামলা করে। এরপরই তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেন। তাতে বলা হয়, তার নিজের বাড়ি তিনি ভাড়া দেবেন নারীদের কাছে। অল্প সময়ের মধ্যে একজন নারী তার দ্বারস্থ হলেন। ফলে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তিন ওই বাড়ির তিনটি রুম ভাড়া নেন ৬ যুবতী। দুই তলাবিশিষ্ট ওই বাড়ির তিনটি রুম ভাড়া দেয়া হয় ৭০০০ রুপি। এখানে উল্লেখ্য, প্রকৃতপক্ষে ওই বাড়িটির মালিক তিনি নন। আন্না নগরের এক ব্যক্তির কাছ থেকে তিনি তা ভাড়া নিয়েছিলেন। বাড়ির মালিককে বলেছিলেন, পরিবার নিয়ে তিনি বসবাস করবেন সেখানে।
বাড়িওয়ালা রাজি হয়ে যান। ব্যস, ওই যুবতীরা বাড়িতে উঠার আগেই প্রতিটি ২৫০০ রুপি দামের অনেক ক্যামেরা বসিয়ে দেন বিভিন্ন স্থানে। এগুলো গোপন রাখা হয়। অন্যদিকে সম্পদ রাজ তার স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে বসবাস করতে থাকেন হাসথিনাপুরামে। কিন্তু যে ভবন ভাড়া নিয়ে তিনি যুবতীদের কাছে আবার ভাড়া দিয়েছেন, সেখানে চালু করেন নিজের জন্য একটি ছোট্ট অফিস। আদাম্বাক্কামের পুলিশ ইন্সপেক্টর মুরালি বলেছেন, সম্পদ রাজ নিজে ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রাজুয়েট হওয়ার কারণে নিজেই ওই ক্যামেরাগুলো প্রতিস্থাপন করেন, যাতে অন্য কেউ এ সম্পর্কে জানতে না পারেন। তিনি বাথরুমে প্রতিস্থাপন করেন সাউন্ড-এক্টিভেটেড ক্যামেরা। এর ফলে বাথরুমে দরজা খোলার বা পানি ছাড়ার শব্দ হলেই ওই ক্যামেরা একা একা সক্রিয় হয়ে পড়তো। এই ক্যামেরা ৫০০ ঘন্টা পর্যন্ত স্ট্যান্ডবাই থাকে। তবে শব্দ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা সক্রিয় হয় এবং ভিডিও রেকর্ডিং শুরু করে। একটানা ৪ ঘন্টা পর্যন্ত ভিডিও ফুটেজ রেকর্ড করতে পারে তা। আবার কিছুক্ষণ কোনো শব্দ না থাকলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তা স্ট্যান্ডবাই অবস্থানে চলে যেত। পুলিশ বলেছে, বাথরুমে ক্যামেরাগুলো সক্রিয় থাকতো। তিনটি বাথরুমে এমন ক্যামেরা সক্রিয় রেখেছিলেন। সেখানে সকেট, বাল্ব ও হ্যাঙ্গারে বসিয়েছিলেন এসব ক্যামেরা। যতক্ষণ পর্যন্ত ক্যামেরাগুলো যথাযথভাবে কাজ করছিল না, ততক্ষণ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার ওই ভবন পরিদর্শন করেছেন সম্পদ রাজ। এ জন্য তিনি বিকল্প চাবির ব্যবস্থা করেছিলেন। এরপরই তিনি ভিডিও ফুটেজ কালেক্ট করতেন। তারপর তা স্থানান্তর করতেন নিজের মোবাইল ফোন বা ল্যাপটপে।
তথ্য সূত্র, মানবজমিন লিংক সংযুক্ত