সিলেট সুরমা ডেস্ক : শ্রীমঙ্গল উপজেলার আশিদ্রোন ইউনিয়নের পৃর্ব জামসী গ্রামে রুনা হক নামে এক গৃহবধু তার স্বামী ও শাশুড়ীর দাবীকৃত যৌতুক এনে দিতে অস্বীকার করায় প্রায় একমাস যাবৎ শাশুড়ী কর্তৃক ঘরে প্রবেশে বাঁধা প্রদান এবং প্রবাসী স্বামীর নির্দেশে বাড়ীতে ডুকতে না দেওয়ায় গৃহবধু বাহিরে অবস্হান করছেন।
এ খবর পেয়ে ২৬ নভেম্বর সোমবার বিকাল ৪ ঘঠিকায় আশিদ্রোন ইউনিয়নের পূর্ব জামসী গ্রামে ঘঠনাস্থলে ছুটে যান শ্রীমঙ্গল উপজেলা শাখার আইন সহায়তা কেন্দ্র আসক ফাউন্ডেশন এর সাধারন সম্পাদক মোঃ আমজাদ হোসেন বাচ্চুর নেতৃত্বে ৬ সদস্য বিশিষ্ট অনুসন্ধান টিম।
মানবাধিকার সংস্থার অনুসন্ধান টিম সরেজমিনে ঘঠনাস্হলে গিয়ে অনুসন্ধানকালে নববধু রুনা হক বলেন, গৃহ নির্মানের জন্য শশুড় বাড়ী থেকে চাপ দেন তার শাশুড়ী ও স্বামী আব্দুল হক পিত্রালয় থেকে তিন লক্ষ টাকা এনে দিতে।
স্রী রুনা পিত্রালয় থেকে যৌতুক দিতে অস্বিকার করায় কৌশলে গৃহবধু রুনা হককে তার বাবার বাড়ী বরিশাল মুলাদিতে কিছু দিনের জন্য বেড়াতে পাটিয়ে দেয়া হয়।
নববধু রুনা মাস খানেক পিএালয়ে থাকার পর সে তার শশুড় বাড়ীতে ফিরে আসতে চাইলে যৌতুকের তিন লক্ষ টাকা ছাড়া ফিরে আসতে নিষেধ করেন শাশুড়ী ও তার প্রবাসী স্বামী আব্দুল হক।
শশুড় বাড়ীর বাঁধা থাকা সত্ত্বেও গৃহবধু রুনা হক তার স্বামীর বাড়ীতে যথা সময়ে ফিরে আসলেও শাশুড়ি পুত্রবধুকে ঘরে ডুকতে না দিয়ে দরজা জানালা বন্ধ করে বাসার গেইটে তালা দিয়ে রাখেন। অনেক চেষ্টা তদবির করেও নববধু তার স্বামীর ঘরে ডুকতে পারছেননা। এলাকার মুরব্বি ও সচেতন মহল একাধিকবার গ্রাম্য বৈঠক করে বিষয়টি মিমাংসা করে গৃহবধুকে তার স্বামীর ঘরে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করে ব্যার্থ হয়েছেন। নববধু রুনা কে বর্তমানে চাচা শশুরের বাড়ীতে আশ্রয় দেয়া হয়েছে। রুনা এব্যাপারে শ্রীমঙ্গল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এছাড়া গ্রামের সর্দার মুরব্বী এমনকি আশিদ্রোন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, মেম্বার, ও এলাকার সচেতন মহল বার বার উদ্যোগ নিয়ে নববধুকে তার স্বামীর ঘরে তুলে দিতে চাইলে যৌতুক লোভী স্বামী ও তার পরিবার কারো কথাই আমলে নিচ্ছে না।
রুনা হক আরো জানান, বিয়ের সময় আমাকে পাঁচলক্ষ টাকার মোহরানা (কাবিন) ধার্য্য করে আমাদের বিবাহ সম্পন্ন হলেও বর্তমানে শুনতেছি তারা বলা বলি করছে আমাকে না কি ৫০ হাজার টাকা কাবিন দিয়ে বিয়ে করেছে। এতে আমার সন্দেহ হচ্ছে আমার স্বামী আমার সাথে হয়তো প্রতারনা করার চেষ্টা করছে।
এদিকে নববধু রুনার অভিযোগের তদন্তকারী অফিসার এ এস এই নজরুল এ প্রতিবেদককে জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বিষয়টি মিমাংসা করার চেষ্টা করা হয়েছে, রুনার শাশুড়ী পুলিশকে জানান, ছেলে আব্দুল হক প্রবাস থেকে বলেছে মা, বাবা যে কেউ তার বউকে ঘরে উঠালে তাদের কে টাকা পয়সা দেয়া বন্ধ করে দেবে সে কারনে তারা ঘরের তালা খুলছেন না।
এব্যাপারে আসক ফাউন্ডেশন এর সাধারন সম্পাদক মোঃ আমজাদ হোসেন বাচ্চু জানান, আমরা এমন অমানবিক আচরনের ঘটনাটি জেনে সাথে সাথে মানবিক দিক চিন্তা করে আমি মানবাধিকার কর্মীদেরকে নিয়ে ঘটনাস্হলে যাই। সরেজমিনে ঘটনার সত্যতা যাচাই বাঁচাই করে দেখা যায়, রুনা হক নামে এক গৃহবধুকে স্বামীর গৃহে ডুকতে না দিয়ে দীর্ঘ ১ মাস যাবত শশুড় বাড়ীর দরজা জানালা বন্ধ করে কেচি গেটে তালা দিয়ে রাখা হয়েছে,। এছাড়া গৃহ বধুর খাবার দাবার ঔষধ পাতি না দেয়ায় তিনি মানুষিক ভাবে বিপর্যস্ত বর্তমানে গৃহবধু অসুস্থ্য হয়ে পড়ছেন এটা মানবাধিকার লংঘন করা হচ্ছে।
মনবাধিকারকর্মী আমজাদ হোসেন বাচ্ছু আরো জানান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকার মুরব্বীদের সাথে কথা বলেছি মেয়েটি যাতে ন্যায্য অধিকার পায় সে ব্যাপারে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করবো।
এছাড়া অনুসন্ধান টিমে ছিলেন সহ সাধারন সম্পাদক আব্দুল জব্বার আজাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক লুৎফুল হক লোকমান, প্রচার সম্পাদক ফারুক আহমেদ, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মুহিবুর রহমান, অর্থ সম্পাদক মোঃ শাহাদাত হোসাইন, সাপ্তাহিক হলি সিলেট পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক জহুরুল ইসলাম, সাংবাদিক রজত শুভ্র চক্রবর্তী, , সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী অজয় সিং।
শ্রীমঙ্গল উপজেলায় এ ঘটনা নিয়ে বেশ তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এলাকার সচেতন মহল চান এর সুষ্ট সমাধান। এলাকার মানুষের দাবী এ মেয়েকে যেহেতু আব্দুল হক বিয়ে করে ঘরে রেখে প্রবাসে চলে গেছে সে হেতু নববধু রুনা নিয়মানুযায়ী তার শশুর বাড়ীতেই থাকবে। এলাকাবাসী ন্যায় বিচারের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। ঘটনার সত্যতা জানতে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপারের সাথে হলি সিলেট পএিকা অফিস থেকে যোগাযোগ করা হলে, তিনি জানান আইনসম্মত নববধুকে তার স্বামীর ঘরে তুলে দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে।