এম এ মালেক
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন যতো ঘনিয়ে আসছে, প্রাথীদের মধ্যে প্রচার প্রচারণা ততই বাড়ছে। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ২৭ টি ওয়ার্ডের প্রার্থীরা কেউ বসে নেই। প্রতিদিন পাড়া মহল্লাসহ আনাচে কানাচে চালাচ্ছেন প্রচারনা। কেউ করছেন উঠান বৈঠক কেউবা করছেন মতবিনিময়। ভোটারদের দিচ্ছেন প্রতিশ্রুতি। সিলেট শহরের ২৭ টি ওয়র্ডের মধ্যে ২৫,২৬ ও ২৭ নং ওয়ার্ডের পুরুষ কিংবা মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীরা প্রতিযোগিতা করে চালাচ্ছেন প্রচার প্রচারনা। ব্যানার ফেস্টুন ভিজিটিং কার্ডসহ স্যোসাল মিডিয়া ফেসবুকে শুভেচ্ছা প্রদানে কমতি নেই। সিটি কর্পোরেশনের ২৭ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৭ নং ওয়ার্ডটি গুরুতপূর্ণ ওয়ার্ড হিসেবে পরিচিত। বিভাগীয় সদর দপ্তর, ডিআইজি কার্যালয়, জোনাল সেটেলমেন্ট,পরিবেশ অধিদপ্তর,মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরসহ সরকারী বিভিন্ন কার্যালয় অবস্থান করছে এখানে। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার মানুষ ২৭ নং ওয়ার্ডে পা রাখেন। কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিস ও রয়েছে ২৭ নং ওয়ার্ডে। কলকারখানা বেষ্টিত বিসিক শিল্পনগরী গোটাটিকরে হাজার হাজার শ্রমিক জীবিকা নির্বাহ করছে। রয়েছে ঘণবসতি। ওয়ার্ডের বেশিরভাগ এলাকাতে ড্রেনেজ সমস্যার পাশাপাশি বিভিন্ন সড়কের অবস্থা ভাংঙ্গাচুরা। সিটি কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকে দায়ি করে অনেক বাসিন্দা ক্ষোভের সাথে বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এ ওয়ার্ডের পরিকল্পিত উন্নয়ন আজও হয়নি। নেই বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা। একই সমস্যা ২৫ ও ২৬ নং ওয়ার্ডে বিরাজ করছে। তিনটি ওয়ার্ডের বিভিন্ন সমস্যা ও তার সঠিক সমাধানের অঙ্গিকার নিয়ে বেশ কয়েকজন মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহন করছেন। তাদের মধ্যে একজন, সাবেক মহিলা কাউন্সিলর আছমা বেগম। ২৭ নং ওয়ার্ডের আলমপুরে নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন তিনি। সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য ও মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আছমা বেগম রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। তিনির বাবা প্রয়াত মো.ইসহাক মিয়া (ইছাক মিয়া) ছিলেন দেশ স্বাধীনের পূর্বে সিলেট মহকুমার আওয়ামী লীগের একজন দক্ষ সংগঠক। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করার পাশাপাশি অসমান্য অবদান রেখেছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি সংগঠকের দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীনতার পর ১২ নং কুচাই ইউনিয়নের একজন সফল চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি ছিলেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। পিতার অবদানকে ধরে রাখতে মেয়ে হিসেবে ২০০৮ সালে সিটি নির্বাচনে আছমা বেগম বিপুল ভোটে মহিলা কাউন্সিলর হিসেবে জয়লাভ করেন। কাউন্সিলর থাকাবস্থায় তিনি বিসিক শিল্পনগরী গোটাটিকরের প্রধান সড়কগুলোর কাজ সম্পন্ন করেন। এ ছাড়া ২৫ নং ওয়ার্ডের কায়স্থরাইল এলাকার অনেক রাস্তা ও ড্রেনের কাজ তিনি সম্পন্ন করেন। বান্দরঘাটের কালিমন্দিরের যাতায়াতের রাস্তা প্রশস্তকরণের কাজও তার হাত দিয়ে তৈরি। পিতার রেখে যাওয়া স্মৃতি শহীদ মিনারের আধুনিকায়নও করেন তিনি। গোটাটিকর পূর্বপাড়ার রাস্তা ও ড্রেনের কাজের প্লানসহ অর্ধেক কাজ বাস্তবায়ন করেন তিনি। ২৫ নং ওয়ার্ডের রতœার খাল উদ্ধার ও অনেক কাজের টেন্ডার অর্ডার করান তিনি। এ ছাড়া ২৬ নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন রাস্তা সংস্কারের কাজ ও করেন তিনি। আগামী নির্বাচনে তিনি আবারো প্রার্থী হচ্ছেন। নির্বাচনে প্রার্থীতা নিয়ে দৈনিক সিলেটের দিনকালের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, তিনি নির্বাচিত হলে নাগরিক সূযোগ সুবিধা বঞ্চিত ২৫,২৬ ও ২৭ নং ওয়ার্ডের মধ্যে যে সকল সমস্যা বিদ্যমান তা চিহ্নিত করে দলমত নির্বিশেষে সবার মতামতের ভিত্তিতে সঠিক বাস্তবায়ন ও পরিকল্পিত উন্নয়ন করবেন। তিনটি ওয়ার্ডের অসম্পূর্ন রাস্তা মেরামতসহ ওয়ার্ডকে বসবাসযোগ্য নিরাপদ আবাসস্থল , সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন ওয়ার্ড হিসেবে গড়ে তুলতে তিনি আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাবেন। ওয়ার্ডগুলোর ভেতরে শান্তি শৃংখলা রক্ষা ও উন্নয়নমুখি কাজের মাধ্যমে নিরাপদ আবাস হিসেবে গড়ে তুলতে চান তিনি। ওয়ার্ডের ভেতরে নিরক্ষরতা দুরিকরণ, ড্রেনেজ সমস্যার সমাধানসহ অসহায় মানুষের পাশে থেকে তিনি তাদের কল্যাণে কাজ করার অঙ্গিকার ব্যক্ত করেন ।