সিলেট সুরমা ডেস্ক : ২০১৮ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাময়িকী ‘টাইমে’র করা বিশ্বের ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় স্থান পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার টাইমের প্রকাশিত হয়। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রয়েছেন লিডার্স ক্যাটাগরিতে।প্রতিবারের মতো এবার ক্রমানুসারে তালিকা দেয়া হয়নি। পাঁচটি ক্যাটাগরিতে প্রভাবশালীদের নাম বিন্যাস করা হয়েছে। এগুলো হলো- পাইওনিয়ার্স, আর্টিস্টস, লিডার্স, আইকনস ও টাইটানস। তার মধ্যে লিডার্স ক্যাটাগরিতে স্থান পাওয়া ২৭ জনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী ২১তম স্থানে রয়েছে।এ তালিকায় অন্যদের মধ্যে আছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবে, উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উনও এ তালিকায় রয়েছেন। এ ছাড়া তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন ব্রিটিশ রাজপুত্র প্রিন্স হ্যারি ও রাজবধু মেঘান মের্কেলও। তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন জিম্বাবুয়ের স্বৈরশাসক এমারসন নানগাওয়াও।চলতি বছর নিয়ে টাইম ১৫ বারের মতো বিশ্বের একশ প্রভাবশালীর তালিকা তৈরি করেছে। প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কার্যকলাপ, উদ্ভাবন ও সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘টাইম’ প্রত্যেক বছর একশ জনকে সবচেয়ে প্রভাবশালী হিসেবে বেছে নেয়।এ তালিকার ব্যাপারে টাইমের সম্পাদক বলেছেন, ‘এই একশজন বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী নারী এবং পুরুষ। তবে তারা সবেচেয়ে ক্ষমতাবান নন।টাইমের তালিকায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রোফাইল লিখেছেন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক পরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলি।তিনি লিখেছেন, ‘৯০ এর দশকে সর্বপ্রথম শেখ হাসিনার সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল। তখন তিনি বাংলাদেশে সামরিক শাসন বন্ধের দাবিতে জোরদার প্রচারণা চালাচ্ছিলে। সর্বশেষ আমাদের দেখা হয় ২০০৮ সালে, যখন তিনি প্রচারণা চালাচ্ছিলেন আরেক সামরিক শাষকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। এর পরের বছর নির্বাচনে ভূমিধ্বস বিজয়ের মধ্য দিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী হন।বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের নেতৃত্ব দেয়া তার পিতার লেগ্যাসি বহনকারী হাসিনা কখনই লড়াইকে ভয় পাননি। কাজেই, গত আগস্টে যখন হাজার হাজার জাতিগত রোহিঙ্গা শরণার্থী মিয়ানমার আর্মির নৃশংসতা থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে প্রবেশ করা শুরু করলো, তখন তিনি এই মানবিক চ্যালেঞ্জটা গ্রহণ করলেন। দরিদ্র দেশ হিসেবে বাংলাদেশ অতীতে শরণার্থীদের বিরাট ঢলকে স্বাগত জানায় নি। কিন্তু তিনি জাতিগত নিধনযজ্ঞের শিকার হওয়া বিপর্যস্ত ভুক্তোভোগীদের ফিরিয়ে দিতে পারেননি। এজন্য তিনি প্রশংসার দাবিদার, কিন্তু তিনি মানবাধিকার নিয়ে বাজেভাবে হোচট খাচ্ছেন। তার সরকারের শাসনের অধীনে বিচারবহির্বুত হত্যাকাণ্ড ও বলপূর্বক গুমের ঘটনা ঘটেছে। এ সরকার সমালোচনা বা ভীন্নমত বরদাশত করে না। ক্ষমতার বাইরে থাকা অবস্থায় যিনি অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন, সেই শেখ হাসিনাকে এই কর্তৃত্বপরায়নতার দিকে যাওয়ার প্রবণতাকে নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। মিয়ানমার ও অন্যদের জন্য তাকে উদাহরণ হওয়া প্রয়োজন; এটা দেখানো প্রয়োজন যে, গণতন্ত্র ভীন্নমত ও বৈচিত্রকে আপন করে নেয়।’তালিকায় অন্য নারীদের মধ্যে আছেন, কার্লেন উইলিয়ান ক্রোজ, ন্যান্সি প্যালোজি, জেসিনা আরডারনও।প্রভাবশালীদের মধ্যে ‘পাইনিয়ার্স’ ক্যাটাগরিতে রয়েছেন, অলিম্পিকে সর্বকনিষ্ঠ স্বর্ণজয়ী নারী ক্লোয়ি কিম, জনপ্রিয় কমেডি উপস্থাপক ট্রেভর নোয়াহ, চীনের কোয়ান্টাম পদার্থবিদ প্যান জিয়ানওয়েই প্রমুখ। ‘আর্টিস্টস’ ক্যাটাগরিতে রয়েছেন খ্যাতনামা অভিনেত্রী নিকোল কিডম্যান, জনপ্রিয় এক্স-ম্যান চরিত্র ওলভারিনখ্যাত হিউ জ্যাকম্যান, ওয়ান্ডার ওম্যান চরিত্রে বিশ্ব মাতানো গ্যাল গ্যাডট, বলিউড তারকা দিপীকা পাডুকোন প্রমুখ।‘আইকনস’ ক্যাটাগরিতে অন্যদের মধ্যে আছেন খ্যাতনামা অভিনেত্রী, সঙ্গিতশিল্পী জেনিফার লোপেজ, রিহানা ও ব্ল্যাক প্যান্থার চরিত্রে বক্স অফিস মাতানো চ্যাডউইক বোসম্যান।আর সর্বশেষ ক্যাটাগরি ‘টাইটানস’-এ অন্যদের মধ্যে আছেন রজার ফেদেরার, অপরাহ উইনফ্রে, জেফ বেজস ও বিরাট কোহলি।