সিলেট সুরমা ডেস্ক : সৌদি আরবের বিভিন্ন স্কুলে মিসরভিত্তিক রাজনৈতিক আন্দোলন মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রভাব রয়েছে। মুসলিম ব্রাদারহুডের ওই প্রভাব থেকে সৌদিকে মুক্ত করতে দেশটির স্কুল থেকে সংগঠনটির অস্তিত্ব মুছে ফেলার ঘোষণা দিয়েছেন যুবরাজ বিন সালমান। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক টিভি চ্যানেল সিবিএসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সালমান এ ঘোষণা দিয়েছেন।সাক্ষাৎকারে সালমান বলেছেন, সৌদি আরবকে সব ধরনের উগ্রপন্থী উপাদান থেকে মুক্ত করবেন তিনি মুসলিম ব্রাদারহুডের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘সৌদি আরবের স্কুলগুলোতে দীর্ঘ সময় ধরে মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রভাব ছিল। এখনও একেবারে শেষ হয়ে যায়নি। তবে খুব অল্প সময়ের সেটাকে মুছে ফেলব।’নিজের কথিত সংস্কার আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে দৃঢ়তা প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘লক্ষ্য পূরণে কাজ চালিয়ে যাবই। একমাত্র মৃত্যু ছাড়া কোনো কিছুই আমাকে থামাতে পারবে না।’সিবিএসের উপস্থাপিকা নোরাহ ও’ডনেলকে দেয়া সাক্ষাৎকারে সৌদি আরবে চলমান দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের পক্ষে ব্যাপক সাফাই গান যুবরাজ। এমন সময় উপস্থাপিকা প্রশ্ন করেন, ‘আপনি তো দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছেন, কিন্তু আপনার নিজের সম্পদ নিয়েও তো অনেক প্রশ্ন রয়েছে। সম্প্রতি নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, ফ্রান্স উপকূলে আপনি অর্ধ-বিলিয়ন ডলার খরচ করে একটি বিলাসবহুল ইয়োট কিনেছেন।’হুট করে এমন প্রশ্নে বিপাকে পড়ে যান সৌদি যুবরাজ। সরাসরি জবাব না দিয়ে পিছুটান দেন তিনি। বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আমি অন্যদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পছন্দ করি না। কোনো পত্রিকা যদি এ ব্যাপারে কিছু বলতে চায় এটা তাদের ব্যাপার। আর ব্যক্তিগত খরচের বিষয়ে বলব, আমি গরিব কেউ নই, আমি অনেক ধনী মানুষ। আমি গান্ধী কিংবা ম্যান্ডেলা নই। সৌদি আরবের জন্মেরও আগে থেকে থাকা একটি রাজপরিবারের সদস্য আমি। আমাদের বিশাল জায়গাজমি আছে। এখন থেকে ১০-২০ বছর আগে আমার ব্যক্তিগত জীবন যেমন ছিল, এখনও তেমনই আছে। তবে আমার দৈনন্দিন ব্যয়ের একটা বড় অংশ আমি দান করি। সম্পদের ৫১ শতাংশ ব্যয় করি মানুষের জন্য, আর বাকি ৪৯ শতাংশ ব্যয় করি আমার জন্য।’যুবরাজ জানান, সম্প্রতি রিয়াদের রিটজ কার্লটন হোটেলে রাজপরিবারে সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী-আমলা-ব্যবসায়ীদের আটক রেখে তাদের কাছ থেকে ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি আদায় করা হয়েছে।সৌদি নারীদের অবাধ স্বাধীনতা দেয়ার ব্যাপারেও অনেক কথা বলেছেন বিন সালমান। এছাড়া সৌদি আরবের পররাষ্ট্রনীতি, যুগের পর যুগ ধরে চলা আসা রাষ্ট্রীয় নানা নিয়মের পরিবর্তন, ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক এবং পরমাণু ইস্যুতে কথা বলেন যুবরাজ।আদৌ কি সৌদি আরবের নারীরা পুরুষের সমান সম্মান পাবেন? – এই প্রশ্নের উত্তরে সালমান জানান- সবাই সৃষ্টিকর্তার তৈরি মানুষ, কিন্তু স্বার্থান্বেষী কিছু মহল নারী-পুরুষে ভেদাভেদ টেনেছে। তিনি আরও বলেন, ইসলাম ধর্মেই স্পষ্টভাবে নারীর পোশাক কি হবে, সেই বর্ণনা দেয়া আছে। এর জন্য সমাজের আলাদা নীতিমালা প্রণয়নের প্রয়োজন নেই।