• ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

৭ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে: কয়েস

প্রকাশিত মার্চ ৬, ২০১৮
৭ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে: কয়েস

সিলেট সুরমা :: সিলেট-৩ (দক্ষিণ সুরমা-ফেঞ্চুগঞ্জ-বালাগঞ্জের একাংশ) সংসদ সদস্য মাহমুদ উস-সামাদ চৌধুরী কয়েস জানিয়েছেন গত ৯ বছরে নিজ আসনের ১৮টি ইউনিয়নে তার মাধ্যমে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ হয়েছে। এর মধ্যে শাহজালাল সারকারখানা স্থাপনেই ব্যায় হয়েছে ৫ হাজার ৭শ’ ৯ কোটি টাকা।

মঙ্গলবার দুুপুরে নগরীর একটি অভিজাত রেস্টুরেন্টে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি নিজ এলাকার উন্নয়ন তৎপরতা তুলে ধরতে গিয়ে এসব কথা বলেন। মতবিনিময়ের শুরুতেই তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, শহীদ জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজ উদ্দিন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী, এইচএম কামরুজ্জামানকে স্মরণ করেন। স্মরণ করেন জাতীয় পর্যায়ে অবদান রাখা সিলেটের দলীয় নেতৃবৃন্দকে। তুলে ধরেন নিজের রাজনৈতিক জীবনের গল্পও।

তিনি বলেন, ১৯৬৮ সাল থেকেই আওয়ামী রাজনীতির সাথে তার সংশ্লিষ্টতা। ঐ বছর তিনি ফেঞ্চুগেঞ্জের এনজিএফ হাইস্কুল ছাত্রলীগের সহ সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি বলেন, ছাত্রলীগ কর্মী হিসাবে ১৯৬৯ সালে আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন ও ৭০ সালে নৌকার পক্ষে সক্রিয় ছিলাম। ১৯৭২ সালে আমি যুক্তরাজ্য চলে যাই। তিনি বলেন, ১৯৮৬ সালে দেশে ফিরে আসি এবং নিজ এলাকায় আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করতে কাজ করি। ১৯৮৯ সাল থেকে শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদের মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করছি।

তিনি বলেন, দল থেকে আমাকে ৪ বার নিজ আসনে প্রার্থী দেওয়া হলে একবার খুব কম ভোটে আরেকবার কারসাজির কাছে পরাজিত হই। আর ২ বার সংসদ সদস্য হিসাবে আমার নির্বাচনী এলাকার প্রায় ১৮টি ইউনিয়নের জনগনের সেবা করার সুযোগ পাই। এই সুযোগ আমি ভালোভাবে কাজে লাগাই। আমার আসনের ১৮টি ইউনিয়নের সুষম উন্নয়ন হয়েছে। প্রয়োজনীয় রাস্তাঘাট, স্কুল কলেজসহ অন্যান্য উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছি। এসব প্রকল্পে আমার মাধ্যমে ব্যায় হয়েছে ৬ হাজার ৯শ’ ৫০ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। এরমধ্যে ৫ হাজার ৭০৯ কোটি টাকা ব্যায়ে স্থাপন করা হয়েছে শাহজালাল সারকারখানা। আরও বিভিন্ন পরিকল্পনায় আরও বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মাহমুদ উস-সামাদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক সিলেট সফরকে কেন্দ্র করে ফেঞ্চুগঞ্জে প্রস্তুতিমূলক সভায় যে অনাকাংখিত ঘটনা ঘটেছে, তা মূল সভার বাইরে ঘটেছে। সেটা প্রস্তুতি সভায় নয় এবং হতে পারে তা গ্রামের অন্যকোন বিরোধকে কেন্দ্র করে সংগঠিত হয়েছে।

অপর এক প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে তিনি দুর্বৃত্তের হামলায় আহত অধ্যাপক ড. জাফর ইকবালকে জাতির শ্রেষ্ঠ সম্পদ বলে অভিহিত করে বলেন, তিনি কখনোই তাকে কোর্ট পয়েন্টে নিয়ে মারধোরের কথা বলেন নি। এ ব্যাপারে তিনি মনোপলির শিকার। তার বক্তব্যের মধ্যে কিছু শব্দ সুক্ষèভাবে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী তা বিশেষ সংস্থার মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করেছেন।

মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে তার পিতার অবস্থান সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে মাহমুদ উস-সামাদ বলেন, আমার পিতা ৭০ এর নির্বাচনে নৌকার পক্ষে কাজ করেছেন। একাত্তরে তিনি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিলেন যে কারণে ৭২ সালে তিনি রিলিফ কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। একজন রাজাকারকে নিশ্চয় তখন সরকার এমন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব প্রদান করতেন না। নির্বাচন এলেই এমন ধরণের কথাবার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হয় যা মিথ্যা বানোয়াট এবং উদ্দেশ্য প্রণোদীত।

তিনি আরও জানান, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার লক্ষে তিনি কাজ করছেন। দল থেকে তাকে মনোনয়ন দেওয়া হলে অবশ্য তিনি সফল হবেন বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট লুৎফুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদ, সিলেট সদর উজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগ সহ সভাপতি আশফাক আহমদ, যুগ্ম সম্পাদক সুজাত আলী রফিক, দফতর সম্পাদক সাইফুল আলম রুহেল, প্রচার সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহফুজুর রহমানসহ সিলেট জেলা, দক্ষিণ সুরমা-ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ উপজেলা ও বিভিন্ন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।