সিলেটসুরমা ডেস্ক :: একাদশ সংসদ, পাঁচ সিটি করপোরেশন ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচনী সামগ্রী কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
এ লক্ষ্যে কেবল কাগজ কেনার জন্যই নির্বাচন কমিশন সচিবের কাছে প্রায় ৩৫ কোটি টাকা চেয়ে সোমবার চিঠি পাঠিয়েছেন মুদ্রণ ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের বাংলাদেশ স্টেশনারি অফিসের উপ পরিচালক ছরোয়ার হোসেন।
ইসির প্রস্তুতিমূলক এক চিঠিতে সম্প্রতি অধিদপ্তরকে বলা হয়, ২০১৭-১৮ ও ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে এসব নির্বাচন হলেও তিন ভোট সামনে রেখে এ বছরের এপ্রিল থেকে নভেম্বরের মধ্যে সব কাগজ সংগ্রহ করে রাখতে হবে। এ পরিপ্রেক্ষিতে অধিদপ্তর সোমবার জানায়, অর্থ পেলে সব কার্যক্রম নেওয়া হবে।
সিটি নির্বাচন: গাজীপুর, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট ও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় ৮ মার্চ থেকে ২৩ অক্টোবর। এক্ষেত্রে এপ্রিল মাসের মধ্যে কাগজ সংগ্রহ করতে বলে জানিয়েছে মুদ্রণ ও প্রকাশনা অধিদপ্তর।
সংসদ: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে হবে এ বছরের ৩০ অক্টোবর থেকে ২০১৯ সালের ২৯ জানুয়ারির মধ্যে। অর্থাৎ আগামী ৮ থেকে ১১ মাসের মধ্যে হবে সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচনের জন্য প্রায় ১ লাখ ৯০ হাজার রিম কাগজ প্রয়োজন হবে, যা জুন মাসের মধ্যে সংগ্রহ করতে হবে।
পিপিআর মেনে মালামাল সংগ্রহে কয়েক মাস সময় লাগে জানিয়ে অধিদপ্তর থেকে ইসিকে জানানো হয়েছে, নির্বাচন শুরুর ৫-৬ মাস আগেই কাগজ সংগ্রহের যাবতীয় কার্যক্রম নিতে হবে। সে লক্ষে একাদশ সংসদের মুদ্রণ কাজ শুরুর অন্তত তিন মাস আগে কাগজের মজুদ নিশ্চিত করতে হবে।
মুদ্রণ ও প্রকাশনা অধিদপ্তর বলেছে, ইসি ২০১৮ সালের জুনের মধ্যে কাগজ সংগ্রহের সময় নির্ধারণ করেছে। কিন্তু অর্থ না পাওয়া পর্যন্ত অধিদপ্তর টেন্ডারে যেতে পারে না। এ অবস্থায় জরুরি ভিত্তিতে অর্থ বরাদ্দ করা প্রয়োজন।
উপজেলা পরিষদ: পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হবে আগামী বছরের মার্চ থেকে জুলাইয়ের মধ্যে। এ বছরের ডিসেম্বর থেকে মুদ্রণ কাজ শুরুর সম্ভাব্য সময় ঠিক করেছে ইসি। এ নির্বাচনে ১ লাখ ২০ হাজার রিম কাগজ দরকার হবে। সেক্ষেত্রে নভেম্বরের মধ্যে মজুদ নিশ্চিত করতে চায় অধিদপ্তর। আইন শৃঙ্খলা ও নির্বাচন পরিচালনা- এ দুই খাতে ব্যয় বরাদ্দ করে নির্বাচন কমিশন।
ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তারা জানান, নির্বাচন পরিচালনা খাতে বরাদ্দের উল্লেখযোগ্য অংশ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্টদের পারিশ্রমিক, নির্বাচনী মালামাল (স্ট্যাম্প প্যাড, অফিসিয়াল সিল, মার্কিং সিল, ব্রাস সিল, লাল গালা, আম কাঠের প্যাকিং বাক্স, অমোচনীয় কালি ইত্যাদি) কেনায় ব্যয় হবে।
এছাড়া ব্যালট পেপার, বিভিন্ন ফরম, প্যাকেট, নির্দেশিকা, ম্যানুয়াল, মনিটরিং সেল, প্রচারণা, ভোটকেন্দ্র-ভোটকক্ষ নির্মাণ, কক্ষ সংস্কার, ভোটকেন্দ্রের বেষ্টনি নির্মাণ, ভোটকেন্দ্রের মনোহারী দ্রব্য কেনা, পরিবহন খরচ, কর্মকর্তাদের ডাক, তার, বার্তাবাহক, জ্বালানিসহ বিভিন্ন নির্বাচনী সামগ্রী কেনায় অর্থ ব্যয় হবে।
রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে নির্বাচনী ফলাফল আদান-প্রদান, নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল ও মামলা পরিচালনা, বিচারিক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের জ্বালানী খরচ, সহকারী রিটার্নিং অফিসারদের যাতায়াত ব্যয় যোগ হবে এর সঙ্গে।
অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি সিইসির বৈঠকের পর ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ জানান, কমিশনের ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নের কাজ চলছে। এজন্য অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় ইসির প্রস্তাব নিয়ে কথা হয়েছে। সংসদ, উপজেলা, সিটি নির্বাচন ও অন্যান্য উপ নির্বাচনসহ আনুষাঙ্গিক বিষয়েও বাজেটে বরাদ্দ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, “জাতীয় নির্বাচনে বিশাল অর্থের প্রয়োজন হয়। সে কারণে অর্থ দ্রুত ছাড়ের বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে আগে থেকে বলে রাখতে হয়। চাহিদা অনুযায়ী যেন দ্রুত অর্থ পাই, সে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”