• ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

এ যেনো নীল আকাশের একঝাঁক তাঁরা

sylhetsurma.com
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৮

এম এ মালেক :
কবি গোলাম মোস্তফা তাঁর একটি কবিতার একটি লাইনে লিখেছিলেন,‘‘রাঁধুনিদের শখের রাঁধার পড়ে গেছে ধুম, এই দুপুরে নাইকো কারো ঘুম,বসে গেছে সবাই আজি বিপুল আয়োজনে,ব্যস্ত সবাই আজকে তারা ভোজের নিমন্ত্রণে’’ কবির কবিতার সঙ্গে মিল রেখে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার ঐতিহ্যবাহী সামাজিক সংগঠন কদমতলী স্বর্ণশিখা সমাজকল্যাণ সমিতি আয়োজন করে বনভোজনের। সমিতির নবীণ প্রবীণদের মিলন মেলা আর পড়নে নীল পোশাকের মাধুর্য্যতায় এ যেনো নীল আকাশের একঝাঁক তাঁরার উপস্থিতি। হাতে হাত, মমতা আর ভালবাসার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো সংগঠনটি। সংগঠনের সভাপতি রেজাউল ইসলাম রেজা ও সাধারণ সম্পাদক এপেক্স সুমন হোসেনসহ সমিতির সকল নেতৃবৃন্দরা বেশ কয়েকদিন ধরে বনভোজনে যাওয়ার জন্য রাতদিন পরিশ্রম করে আসছিলেন। সর্বশেষ সোমবার সকালে সমিতির নতুন ও পুরাতন সকল সদস্যসহ এলাকার বিশিষ্ট সালিশ ব্যক্তিত্ব ও বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট রফিকুল হক ও রোটারী ক্লাব অব মেট্রোপলিটন সিলেট এর সভাপতি,২৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর,সমিতির সাবেক সফল সভাপতি হাজী তৌফিক বকস্ লিপনসহ এলাকার দেড় শতাধিক যুবক তিনটি বাসযোগে রওয়ানা দেন শ্রীমঙ্গলের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের উদ্দেশ্যে। সাথে নিয়ে যাওয়া হয় বনভোজনের সকল খাদ্য সামগ্রী। দুপরের দিকে নেতৃবৃন্দরা শ্রীমঙ্গলের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে উপস্থিত হন। সেখানে আনন্দে মেতে উঠেন তারা। নেই ভেদাভেদ,শুধু আনন্দ,সবকিছুতে যেনো ছন্দ। খুশি আর আনন্দে ভরপুর দুপুরে সবাই বেড়ানোর পাশাপাশি ছিলেন ভোজনে ব্যস্ত। কদমতলী বাসীর ইতিহাসে চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে এ বনভোজন। আর এ জন্য সবাই যার যার মুঠোফোনে স্থির চিত্র ধারণ করার পাশাপাশি কেউ কেউ ভিডিও করে রাখেন। সোস্যাল মিডিয়া ফেসবুকে সবাই নিজ নিজ আইডিতে ছবি পোস্ট করে আনন্দকে ছড়িয়ে দেন ইন্টারনেট দুনিয়ায়। কাউন্সিলর হাজী তৌফিক বকস্ লিপন বলেন,ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় স্বর্ণশিখা সমাজকল্যাণ সমিতি ধরে রেখেছে তার ঐতিহ্য। যদিও সেই ২০০৪ ইং সালে সরকারীভাবে নিবন্ধিত হয় স্বর্ণশিখা সমাজকল্যাণ সমিতি। এর আগে থেকেই এই সামজিক সংগঠন এলাকার ঐক্য ও উন্নয়ণে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে আসছে। সংগঠনের সাবেক সভাপতি প্রয়াত বেলাল উদ্দিন আহমদের কথা স্মরণ করে কাউন্সিলর তৌফিক বকস্ লিপন বলেন,বেলাল উদ্দিন আহমদ আজ আমাদের মাঝে নেই,কিন্তু অতিত ইতিহাসে তাঁর অবদান আমাদের প্রেরণার পদ দেখাচ্ছে। স্বর্ণশিখার এই বনভোজনের আয়োজন অতিতে ও করা হয়েছিল। সেই সময়কার অনেক সদস্য আজ দেশ বিদেশে অবস্থানের পাশাপাশি বাঙ্গালী কমিউনিটিতে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করছেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট রফিকুল হক বলেন, স্বর্ণশিখা একটি নাম নয়, এটি একটি পরিবার,প্রতি বছর স্বর্ণশিখা সমাজকল্যাণ সমিতি এ ধরণের বনভোজনের আয়োজন করলে তরুণ ও যুব-সমাজের মন উৎফুল্ল থাকার পাশাপাশি অনেক অজানাকে জানতে পারবে। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবহনকারী অনেক দর্শনীয় স্থান দেশের বিভিন্ন স্থানে বিদ্যমান। সেই সব দর্শণীয় স্থানগুলো দেখার পাশাপাশি বনভোজনের আনন্দঘণ মুহুর্ত উপভোগ করা যায়। তিনি প্রতিবছর এ রকম আয়োজনের জন্য সংগঠনের নেতৃবৃন্দদের প্রতি আহবান জানান। বনভোজনে উপস্থিত থাকা যুক্তরাজ্য প্রবাসী কদমতলী বড় বাড়ির বাসিন্দা মঈন উদ্দিন বলেন,প্রবাসে বেড়ানোর সময় নেই,কিন্তু মাতৃভুমি বাংলায় প্রাণখোলে আনন্দ করার মজাই আলাদা। সবার সাথে সুন্দর মুহুর্ত কাটানোর ভাগ্য আমার হয়েছে। তিনি স্বর্ণশিখা সমাজকল্যাণ সমিতির আরো সাফল্য কামনা করেন।স্বর্ণশিখা সমাজকল্যাণ সমিতির সাবেক সফল সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমান সহ-সভাপতি আলমগীর হোসেন বলেন,”আমরা ২০০৪ ইং সালে এরকম আরেকবার স্বর্ণশিখার উদ্যোগে বনভোজন করেছিলাম। তবে এবারের বনভোজন ব্যতিক্রমী। কারণ এবারের বনভোজনে কদমতলীর ছোট বড় নবীণ প্রবীণসহ সবাই এক সাথে গিয়েছি। আমি মনে করি কদমতলীর ইতিহাসে আজকের দিনটি ঐতিহাসিক দিন হয়ে থাকবে।