সিলেট সুরমা ডেস্ক : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি তাদের গঠনতন্ত্র সংশোধন করে রায় দিয়েছে বেগম খালেদা জিয়া দুর্নীতিপরায়ন।
তিনি বলেন, ‘বিএনপির গঠনতন্ত্রের ৭ ধারা পরিবর্তন করে আদালতের রায়ের আগেই তারা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় দিয়েছে।
কাদের বলেন, বিএনপির গঠনতন্ত্রের এই ধারা অনুযায়ী কোন দুর্নীতিগ্রস্ত ও কুখ্যাত সন্ত্রাসী দলটির সদস্য হতে পারে না। খালেদা জিয়া আদালতে দন্ডিত হলে তিনিও বিএনপির সদস্য থাকতে পারবেন না।
ওবায়দুল কাদের শনিবার বিকেলে রাজধানীর শ্যামলীতে ঢাকা-১৩ আসনের উদ্যোগে শীতার্তদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
আদাবর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আব্দুল মান্নানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক এমপি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নিজেরাই নিজেদের তৈরি খাদে পড়েছে। কারণ বেগম খালেদা জিয়ার দুর্নীতি মামলার রায় এখনও হয় নি। এ মামলার রায়ের আগেই তারা কিভাবে জানলেন খালেদা জিয়ার শাস্তি হবে?
এ বিষয়ে তিনি আরো বলেন, বিএনপি তাদের গঠনতন্ত্রের ৭ ধারা পরিবর্তনের মাধ্যমে আত্মস্বীকৃত দুর্নীতিবাজ রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে।
বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় দলটির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেওয়া বক্তব্যের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নেতা তারেক রহমান মানিলন্ডারিংয়ের মামলায় দন্ডপ্রাপ্ত একজন ফেরারী আসামী। তিনি একজন পালাতক আসামী হিসেবে এভাবে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য দিতে পারেন না।
তিনি বলেন, ‘তারেক রহমান তার বক্তব্যে আদালতকে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এবং বিচারপতিদের ঠিকাদার হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি এ ধরনের মন্তব্য করে দেশের বিচার ব্যবস্থাকে জঘন্যভাবে অপমান করেছেন।’
বিএনপি নেতা-কর্মীদের জেল-জুলুম উপেক্ষা করে আন্দোলন করার নির্দেশ সে দলের নেতা-কর্মীরা মানবে না উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, তারেক রহমানের সৎ সাহস থাকলে জেল-জুলুমের ভয় না করে দেশে এসে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া উচিত।
তিনি বলেন, একজন পলাতক ফেরারী নেতার নির্দেশে দলের নেতা-কর্মীরা কখনো আন্দোলন করে না। আর যে দলের নেতা লন্ডনে বসে বিলাসবহুল জীবন যাপন করে সে দলের নেতারা কখনও রাজপথে থাকবে না।
বিএনপির গণগ্রেফতারের অভিযোগ সম্পর্কে কাদের বলেন, বাছ বিচার ছাড়া কাউকে গ্রেফতার না করার জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময় হাজার হাজার লোককে গ্রেফতার করেছিল। সে ধরনের ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেজন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘কিন্তু প্রকাশ্য দিবালোকে যারা পুলিশের প্রিজন ভ্যানে হামলা চালিয়ে আসামী ছিনতাই করেছে এবং পুলিশের অস্ত্র কেড়ে নিয়ে তা ভাংচুর করেছে তারা আইনের আওতার বাইরে থাকতে পারে না।’
কাদের বলেন, যারা পুলিশ ভ্যানে হামলা চালিয়েছে তারা অনুপ্রবেশকারী নয়। তাদের ভিডিও ফুটেজ রয়েছে। তারা চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তাদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনতেই হবে।
আওয়ামী লীগ বিচারহীনতার সংস্কৃতিতে বিশ্বাস করে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকারের বেশ কয়েকজন মন্ত্রী রয়েছেন যারা আদালতে নিয়মিত হাজিরা দিচ্ছেন। সরকার দলীয় সংসদ সদস্য হয়েও কারাগারে রয়েছেন। বিএনপির সময় এমন কোন নজির কেউ দেখাতে পারবে না।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, এলাকার উন্নয়ন ও সমৃদ্ধিকে অব্যাহত রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের কোন বিকল্প নেই।
সভা শেষে শীতার্ত মানুষের মধ্যে দু’হাজার শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়। ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ (বাসস)