• ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২২শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

কোচিং বাণিজ্য বন্ধে ৯৭ শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুদকের ব্যবস্থা গ্রহণ

sylhetsurma.com
প্রকাশিত ডিসেম্বর ৫, ২০১৭

রাজধানী ঢাকায় কোচিং বাণিজ্য বন্ধে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
কোচিং বাণিজ্যে জড়িত থাকার অভিযোগে ঢাকা মহানগরের স্বনামধন্য আটটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৯৭ জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে চিঠি পাঠিয়েছে দুদক।
দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) প্রবণ কুমার ভট্টাচার্য চিঠির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, একই ধরনের চিঠি রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ও পরিচালনা পর্ষদের সভাপতিকে দেয়া হয়েছে।
সোমবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে এ চিঠি পাঠানো হয়। গতকাল রোববার চিঠিটি স্বাক্ষরিত হয় বলে দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বাসসকে জানান।
স্কুলগুলোর মধ্যে বেসরকারি চারটি ও সরকারি চারটি স্কুল রয়েছে।
বেসরকারি স্কুলগুলোর মধ্যে রাজধানীর আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৩৬ জন শিক্ষক, মতিঝিল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ২৪ জন, ঢাকা ভিকারুননিসা নূন স্কুল এ্যান্ড কলেজের ৭ জন, রাজউক স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৫ জন রয়েছেন। আর সরকারি চারটি স্কুলের মধ্যে মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের ১২ জন, মতিঝিল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪ জন, খিলগাঁও সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ১ জন এবং ধানমন্ডি গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুলের ৮ জন শিক্ষক রয়েছেন।
সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী বিধিমালা অনুযায়ী অসদাচরণ হিসেবে গণ্য করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যায় বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
চিঠিতে বলা হয়, কোচিং বন্ধে কোনো আইন না থাকায় সাধারণত কোচিং বা টিউশনি থেকে উপার্জিত আয়ের ওপর কোনো ভ্যাট বা ট্যাক্স দেওয়া হয় না। ফলে এভাবে উপার্জিত আয় অনুপার্জিত আয়ে পরিণত হয়। কোচিং বাণিজ্যের ফলে যেভাবে অনৈতিক আয় ভোগ করার সুযোগ তৈরি হয়েছে, তেমনি এটি বুদ্ধিবৃত্তিমূলক মেধা সৃষ্টির প্রয়াসের পরিবর্তে অবৈধ অর্থ উপার্জনের হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। এ ছাড়া কোচিং এর কারণে শিক্ষার্থীরা বিশেষ সাজেশন অনুসারে স্বল্প সংখ্যক প্রশ্ন পড়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। ফলে পূর্ণাঙ্গ বই সম্পর্কে তারা ধারণা পাচ্ছে না।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ঢাকা মহানগরের স্কুল অথবা কলেজের কোচিং বাণিজ্যের সাথে জড়িত শিক্ষক -শিক্ষিকাদের বিষয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত অভিযোগের ভিত্তিতে কমিশন অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনা করে। সম্প্রতি ৬ সদস্য বিশিষ্ট অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়। অনুসন্ধান টিমের দাখিলকৃত কোচিং বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত ৮টি বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের তালিকাও পঠানো হয়।
অনুসন্ধান টিম কোচিং বাণিজ্যের সাথে জড়িত শিক্ষকদের বিষয়ে বিভিন্ন শাস্তির সুপারিশ করেছে। এ টিম আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকার ৩৬ জন শিক্ষক, মতিঝিল মডেল স্কুল এন্ড কলেজ, ঢাকার ২৪ জন শিক্ষক,ভিকারুন নেছা নুন স্কুল এন্ড কলেজ, ঢাকার ৭ জন ও রাজউক উত্তরা মডেল স্কুল এন্ড কলেজের ৫ জনসহ মোট ৭২ জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে “শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য বন্ধ নীতিমালা-২০১২” অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সভাপতি, পরিচালনা পর্ষদকে অনুরোধ করেছে।
এছাড়া ৪টি সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের ১২ জন শিক্ষক, মতিঝিল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ৪ জন শিক্ষক, খিলগাঁও সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ১ জন এবং ধানমন্ডির গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুলের ৮ জনসহ ২৫ জন শিক্ষকদের এ অনৈতিক ও অবৈধ কার্যক্রম কোচিং বাণিজ্য বন্ধ নীতিমালা-২০১২ অনুযায়ী সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপীল) বিধিমালা’ ১৯৮৫ এর অধীনে অসদাচরণ হিসেবে গণ্য করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। (বাসস)