• ২৯শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১৪ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৬শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

প্রায় ৪ মাস ধরে আসাদুজ্জামান নিখোঁজ : পিতার দাবি গুম

sylhetsurma.com
প্রকাশিত অক্টোবর ২৩, ২০১৭

সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন
নগরীর বন্দরবাজারস্থ করিম উল্লাহ মার্কেটের ব্যবসায়ী মো. আসাদুজ্জামান বাপ্পী (২৬)- কে প্রায় ৪ মাস ধরে খোঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। গত ৯ জুলাই সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টা শহরতলির সুরমা গেইট এলাকা থেকে থেকে করিম উল্লাহ মার্কেটে আসার পথে তিনি নিখোঁজ হন। এরপর তার কোন সন্ধান মিলেনি। তার দু’টি সেলফোন নাম্বারও (০১৭৩৩৬৯২২৬৮ ও ০১৬১৩৬৯২২৬৮) তখন থেকে বন্ধ। এ বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি, র‌্যাব-৯ এর অধিনায়ক ও সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনারের (উত্তর) কাছে লিখিত অভিযোগসহ পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হকের সাথে সরাসরি দেখা করেও অভিযোগ জানানো হয়েছে। কিন্তুবাপ্পীর কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেছেন জকিগঞ্জের কসকনকপুর ইউনিয়নের নিয়াগোল গ্রামের বদর উদ্দীন। তিনি বর্তমানে নগরীর মিরাবাজারের খারপাড়ায় ৩০ নং মিতালী বাসাতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করছেন। বাপ্পী তার বড় ছেলে।

সোমবার বেলা ৩ টায় সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এসব কথা তুলে ধরেন বদর উদ্দীন। এসময় তিনি জানান- ‘ছেলের জন্য তারা চরম দু:শ্চিন্তা আর অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন। ছেলেকে ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, বিরোধী দলীয় হুইপ ও সংসদ সদস্য সেলিম উদ্দিনের সহযোগিতা চেয়েছেন।

নিখোঁজ ছেলের সাথে কারোর কোন বিরোধ বা ঝগড়া নাই দাবি করে বদর উদ্দীন জানান- তার ছেলে বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা জেলা শাখার সাবেক সদস্য ও জকিগঞ্জ উপজেলার যুগ্ম আহবায়ক। তার সাথে কারোও কোন রাজনৈতিক বিরোধ নাই। বাপ্পীর সাথে কারোর শত্রুতা বা ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বও নাই। তিনি অভিযোগ করে বলেন- ‘নিয়াগোল গ্রামে আমার নিজের অর্থে কেনা ২৬ শতক জমি নিয়ে ভাইদের মধ্যে সবার বড় ভাই আবুল কালাম আজাদ ও সবার ছোট ভাই সাব্বির আহমদের সাথে আমার ব্যক্তিগত বিরোধ রয়েছে। ছেলে নিখোঁজ হওয়ার কিছুদিন আগে ওই জমি বিক্রি করা নিয়ে ভাইদের সাথে ঝগড়া ও কথা কাটাকাটি হয়েছে। তারা চেয়েছেন ওই জমি নামমাত্রমূল্যে তাদেরকে দিয়ে দিতে। এসময় তারা আমাকে জমি বিক্রি করতে বাঁধা দেন। জমি অন্য কারোর কাছে বিক্রি করলে হত্যার হুমকিও দেয়া হয় তখন। পাশাপাশি আমার পরিবারের সদস্যদেরও ক্ষতি করার নানারকম হুমকি দেন তারা। এরপর থেকে আমি চরম আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ি।’

বদর উদ্দীন উল্লেখ করেন- ‘তিনি ধারণা করছেন তার ছেলের নিখোঁজের পিছনে তার উল্লেখিত দুই ভাইয়ের যোগসাজশ থাকতে পারে। তিনি বলেন- ‘আমি আশাকরি তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে ছেলের সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যাবে। আমি চিন্তাতেই আনিনি যে আমার আপন ভাইয়েরা এমন কান্ড করতে পারেন। পরে যখন আমি প্রায় ৪ মাস ধরে খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাচ্ছিলাম না। তখন ভাইদের বিগত দিনের কর্মকান্ড ও জমির বিরোধ নিয়ে অব্যাহত হুমকির কারণে সন্দেহ করছি যে তারা এর পিছনে জড়িত থাকতে পারেন। এমনকি ছেলে নিখোঁজ হওয়ার ২/৩ দিন আগেও তারা আমাকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন।’

বদর উদ্দীন বলেন- ‘আমি বিভিন্ন দফতরে ঘুরেছি, অভিযোগ দিয়েছি। নিরুপায় হয়ে সাংবাদিকদের মাধ্যমে বিষয়টি সরকারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরছি। আমার ছেলে নিখোঁজের রাতে কোতোয়ালি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (নং-৬৩৬) জমা দিয়েছি। পরের দিন র‌্যাব-৯ এর কাছে পৃথক আরেকটি অভিযোগ (নং-১৮১) দিয়েছি। ঢাকার কুর্মিটুলাস্থ র‌্যাব সদর দপ্তরে মহাপরিচালকের কাছেও ১৫ জুলাই লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। এর কিছুদিন পরে পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হকের সাথেও সরাসরি দেখা করে বিষয়টি অবগত করেছি। গত ৫ আগস্ট সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনারের (উত্তর) কাছে আবেদন জমা দিয়েছি। কিন্তু ছেলের কোন সন্ধান পাইনি।’ প্রেস-বিজ্ঞপ্তি।