• ২৯শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১৪ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৬শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

তাজমহল রেস্টুরেন্ট দখলে রেখেছে কালাম-ফলিক চক্র : আদালতের রায়কে বৃদ্ধাঙ্গুলি

sylhetsurma.com
প্রকাশিত অক্টোবর ২৩, ২০১৭

সিলেট সুরমা ডেস্ক : উচ্চ আদালতের রায়কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কদমতলী বাস টার্মিনাল এলাকার তাজমহল রেস্টুরেন্ট দখলে রেখেছে কালাম-ফলিক চক্র। এই চক্র বাস টার্মিনাল এলাকায় অপরাধ চক্র গড়ে তুলেছে। টার্মিনালে অবৈধ ব্যবসা করে এরা এখন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ। প্রকৃত ইজারাদার তাজমহল রেস্টুরেন্টের ভাড়া চাইতে গেলে কালাম-ফলিক চক্রের সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে।  সোমবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেছেন সিলেট জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক খোন্দকার মহসিন কামরান।

লিখিত বক্তব্যে কামরান বলেন, গত ১৭ অক্টোবর তাজমহল রেস্টুরেন্টকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনা ঘটে। ২০১৫-১৬ অর্থ বছরের জন্য বাস টার্মিনাল লিজ নেন কামরান। এরপর থেকেই সিলেট জেলা বাস মালিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম ও সিলেট জেলা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সেলিম আহমদ ফলিকের গাত্রদাহ শুরু হয়। কারণ পূর্বের ইজারাদার হিসেবে এ চক্র টার্মিনাল এলাকায় ইচ্ছামতো অবৈধ ব্যবসা, মাদক সিন্ডিকেট ও লুটপাট চালিয়েছে। তিনি লিজ নেওয়ার পর টার্মিনালের অফিসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সাটান।

এটাও তারা মেনে নিতে পারেনি।  খোন্দকার মহসিন কামরান অভিযোগ করে বলেন, ওই অর্থ বছরে কালাম-ফলিক চক্র ৬টি রোডের পাওনা টাকা বন্ধ করে দিয়ে প্রায় নয় লক্ষ টাকা আত্মসাত করে। এ বিষয়ে ৬টি রোডের ম্যানেজারকে উকিল নোটিশ পাঠালেও কোনো কাজ হয়নি। তিনি বলেন, সিটি করপোরেশন থেকে ইজারা নেওয়ার পর টার্মিনাল এলাকায় সব ধরনের অপরাধ কর্মকান্ড নির্মূল করেন এবং সিটি করপোরেশনের মাধ্যমে টার্মিনালের উন্নয়ন কাজ করান। এর পূর্বে কালাম-ফলিক চক্র টার্মিনালের বিদ্যুৎ বিল চুরি করে খাস কালেকশনের নামে নামমাত্র রাজস্ব দিয়ে ব্যাপক লুটপাট করে।

তিনি আরো বলেন, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরেও তিনি এবং তার ব্যবসায়িক পার্টনার মিসবাহ উদ্দিন তালুকদার টার্মিনাল লিজ নেন। উচ্চ আদালতের রায় পক্ষে থাকায় গত ৬ জুন থেকে তাজমহল রেস্টুরেন্টের বকেয়া ভাড়া আদায় করতে ইজারাদার মিসবাহ উদ্দিন তালুকদারের ১৭ অক্টোবর রেস্টুরেন্টে যান। এ সময় রেস্টুরেন্টে থাকা ম্যানেজারসহ অন্যান্য লোকদের সাথে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে হঠাৎ করেই আবুল কালামের নেতৃত্বে তার লোকজন আগ্নেয়াস্ত্র, দেশিয় অস্ত্র ও বন্ধুকসহ হামলা চালায়। তাদের এলোপাতাড়ি গুলিতে টার্মিনাল এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সন্ত্রাসীদের হামলায় ছাত্রলীগ নেতা শাহীনূর রহমান শাহিন গুরুতর আহত হন। বর্তমানে তিনি ঢাকায় অ্যাপলো হাসপতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন।

খোন্দকার মহসিন কামরান অভিযোগ করেন, কালাম-ফলিক চক্র সিলেটের পরিবহণ সেক্টরকে জিম্মি করে রেখেছে। কোনো কিছু হলেই এরা ধর্মঘটের ডাক দিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করে। এটা তাদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের একটি রূপ। তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে পদ কেড়ে নিয়ে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করে। বিতর্কিত তাজমহল রেস্টুরেন্টটি নামমাত্র মূল্য দিয়ে পাঁচ বছরের জন্য ইজারা নিয়ে বিভিন্ন টালবাহানায় এখনো দখলে রেখেছে। এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনও রহস্যজনক ভূমিকা পালন করছে। বর্তমানে এই রেস্টুরেন্টের সামনে সন্ত্রাসী বাহিনী বসিয়ে পাহারা দেওয়া হচ্ছে।

কালাম-ফলিকের বিরুদ্ধে মামলা হলেও পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে না। আইনের তোয়াক্কা না করে ফলিক কাগজপত্র বিহীন জীপ গাড়ির সামনে বিভাগীয় সভাপতি লিখে অবৈধভাবে চলাফেরা করছে।

সংবাদ সম্মেলনে মহসিন কামরান বলেন, তিনি সৈরাচার বিরোধী আন্দোলনসহ সিলেটের সকল দাবি-দাওয়ার আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। সিলেট জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তার বিরুদ্ধে ন্যূনতম অভিযোগ না থাকলেও কালাম-ফলিক চক্র তাজমহল রেস্টুরেন্টের ঘটনায় তাকে প্রধান আসামি করেছে। তিনি এই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা যুবলীগের সভাপতি শামীম আহমদ, সিনিয়র সহ-সভাপতি প্রভাষক আবু তাহের, জেলা শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি আব্দুস সাত্তার, জেলা যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক দবির আলী, অর্থ সম্পাদক আবু তাহের, সহ সম্পাদক এস এম শায়েস্তা তালুকদার, যুবলীগ নেতা মনোজ কপালী মিন্টু, মাশুক আহমদ, সুহেল খান, মোসাদ্দেক হোসেন মুসা, সাজলু লস্কর, হাবিবুর রহমান খান, উস্তার আলী, এস এম রাসেল, রাজু আহমদ, কামরান আহমদ, মিনহাজ হোসেন, জামাল আহমদ, খোকন বেগ, ফরহাদ আহমদ জীবন, আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।