• ২৮শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১৩ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৬শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

মামলা ও অপপ্রচার চালিয়ে অশান্তির সৃষ্টি করছেন প্রবাসী আব্দুন নূর

sylhetsurma.com
প্রকাশিত জুলাই ৮, ২০১৭

যুক্তরাজ্য প্রবাসী আব্দুন নূর মিথ্যা অভিযোগে মামলা ও অপপ্রচার চালিয়ে এলাকার মানুষকে বিপর্যস্থ করতে চাইছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিশ্বনাথের মিরগাও গ্রামের মসজিদের মোতাওয়াল্লী মাওলানা আক্তার হোসেন। শনিবার দুপুরে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আব্দু নূর আমাদের গ্রাম তথা গোটা এলাকার শান্তি নষ্ট করে চলেছেন। তিনি নিরীহ ও শান্তি প্রিয় গ্রামবাসী তথা এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দিচ্ছেন। তার কারনে মিরগাওয়ে অশান্তির সৃষ্টি করেছে। সংবাদ সম্মেলনে তার অভিযোগ, প্রবাসী আব্দুন নূর ও তার সহযোগি হাবিবুর রহমান একই গ্রামের ইন্তাজ আলীর ছেলে। আব্দুন নূর দীর্ঘদিন ধরে লন্ডনে বসবাস করছেন। ছুটি কাটাতে তিনি প্রায় সময় লন্ডন থেকে বাড়ি আসেন। সম্প্রতি আব্দুর নূরের একটি ‘নব্য মতবাদ’ এই অশান্তির সৃষ্টি করে। ১১ মে মসজিদে জোহরের নামাজ পড়তে গিয়ে আব্দুন নূর মিরগাও মসজিদের ইমামকে ডেকে বলেন- ‘নামাজ শেষে কোনো দোয়া করা যাবে না। এটা ধর্মের নিষেধ আছে। যদি নামাজের পর দোয়া করো তাহলে মসজিদ থেকে জুতাপেটা দিয়ে বের করে দেবো।’ তার এই হুমকিতে হতবাক হয়ে পড়েন মসজিদের ইমাম। নামাজ শেষে আব্দুন নূর ইমাম সাহেবকে বলেন- ‘নামাজ শেষে মিলাদ মাহফিল হতে পারবে না।’ তিনি বলেন, প্রথমে তার এসব কথাবার্তায় কেউ কান দেয়নি। কিন্তু ২৫ জুন জোরপূর্বক আমার কাছ থেকে মসজিদের চাবি নিয়ে চলে যায়। শেষে ইমামকেও মসজিদ থেকে তাড়িয়ে মসজিদ বন্ধ করে দেয়। এ কারণে গ্রামের মানুষ ওই দিন মসজিদে চার ওয়াক্ত নামাজ পড়তে পারেননি।এঘটনায় মানুষ বিক্ষুব্দ হয়ে পুলিশের আশ্রয় নিলে অলংকারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের মধ্যস্ততায় চাবি এনে গ্রামের লোকজনের হাতে দেওয়া হলে মুসল্লীরা নামাজ শুরু করেন। ঐদিন মধ্যরাতের পর আব্দুন নূর গ্রামের লোকজনের বিরুদ্ধে বিশ্বনাথ থানায় এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। তার এই কার্যকলাপের প্রতিবাদে ২৬ মে গ্রাম ও এলাকার লোকজন বিশ্বনাথ থানার সামনে মানববন্ধন করেন। তবে পুলিশ তার অভিযোগের সত্যতা না পেয়ে মামলা রেকর্ড করেনি। মামলা দায়েরে ব্যর্থ হয়ে তিনি সংবাদ সম্মেলন করে এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে কুৎসা করেন। এ সময় সে পুলিশের বিরুদ্ধেও অভিযোগ করেন। এরপর গন্যমান্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে সালিশে আব্দুন নূর ক্ষমা প্রার্থনাও করেন। তবে গত ৮ই জুন তার চাচা হাবিবুর রহমানকে বাদি করে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৃতীয় আদালতে চুরি, হামলা, চাদাবাজির মামলা দায়ের করে। আদালত তার মামলা গ্রহন করেছেন। তার অভিযোগ তদন্ত করছে গোয়েন্দা পুলিশ। পরে একইি ব্যাক্তিকে দিয়ে ১৩ জুন সিলেটের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১০৭ ধারায় আরও একটি দরখাস্ত মামলা দায়ের করেন।
এতেও ক্ষান্ত হননি তিনি। সিলেটের পুলিশ সুপারের কাছে মৌখিক অভিযোগ করেন। পুলিশ সুপারের নির্দেশে এসআই রাজিব এলাকায় গিয়ে তার অভিযোগের কোনো সত্যতা পায়নি। এসআই রাজিব উল্টো পুলিশকে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগে আবদুন নূরের বিরুদ্ধে জিডি করেন। গত ২৯ শে জুন সিলেটের কোতোয়ালি থানায় সে গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে একটি জিডি (নং-২২০২) করেছে। ওই জিডিতে সে এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে চাদাবাজির অভিযোগ তুলে। এরপর সংবাদ সম্মেলন করে মিথ্যাচার করেছে।
এরপর তিনি বলেন, আব্দুন নূর সুস্থ কোনো মানুষ নয়। কারন- আমরা মুসলমানরা সামাজিকভাবে একটি নিয়মের ভেতরে ধর্মীয় রীতি-নীতিতে চলি। এটি আমাদের পূর্ব পুরুষ থেকে পাওয়া ধর্মীয় নীতি। তার ভ্রান্ত ধারনা থেকে সে গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। তার উপর এলাকার কেউ হামলা তো দুরের কথা গালিও দেয়নি। তার অত্যাচার মুখ বুঝে সয়েছে। কিন্তু সে এখন মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রশাসনকে বিভ্রান্ত করে এলাকাবাসীকে হয়রানি করছে। এ কারনে আমরা ১৯ শে জুন বিশ্বনাথ থানায় জিডি করেছি। এরপর গত ২৯শে জুন সিলেটের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৃতীয় আদালতে ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাতের ঘটনায় আব্দুন নূর ও তার চাচা হাবিবুর রহমানকে আসামি করে মামলা করেছি। মামলাটির তদন্ত করছেন সিলেট ইসলামী ফাউন্ডেশনের। সংবাদ সম্মেলনে গ্রামের ১০/১২ জন মুরব্বি উপস্থিত ছিলেন। প্রেস-বিজ্ঞপ্তি