সিলেট সুরমা ডেস্ক : সিটি কর্পোরেশন এলাকার ট্রেড লাইসেন্স ও নবায়ন ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত পুণর্বিবেচনরার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সিলেট চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক মুকির হোসেন চৌধুরী। বুধবার নিজ অফিসে এক মতবিনিময় সভায় আগামী বাজেটেই বিষয়টি পুণর্বিবেচনার আহ্বান জানান এই ব্যবসায়ী নেতা। মুকির জানান, ট্রেড লাইসেন্স ফি এক ধাপে কয়েকগুণ বৃদ্ধিকে ‘অযৌক্তিক ও অসামঞ্জন্যপূর্ণ’ দাবি করে এ ব্যাপারে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা চেয়ে একটি রীটও পিটিশন করেন তিনি। পিটিশন নং ৯৫৫৫/২০১৫। মুকির হোসেন বলেন, বর্তমান সরকার ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসারে কাজ করে যাচ্ছে। সরকারের বলিষ্ট পদক্ষেপে দেশ এগিয়ে চলছে। তবে ব্যবসায়ীদের সাথে কোনো আলোচনা না করেই ট্রেড লাইসেন্স ফি কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেওয়ার ফলে এই অগ্রযাত্রা ব্যাহত হবে। ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। ফি বৃদ্ধির নেতিবাচক প্রভাব পড়বে ব্যবসা বাণিজ্যে। তিনি ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষায় সিটি কর্পোরেশন আদর্শ কর তপসিল ২০১৫ ইং পূনর্বিবেচনার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। জানা যায়, স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন ২০০৫ অনুযায়ী দেশের সবকটি কর্পোরেশন থেকে কর আদায় করা হতো। বছর কয়েক আগে স্থানীয় সরকার আইন (সিটি কর্পোরেশন) ২০০৯ এর ৮৪ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতা বলে সিটি কর্পোরেশন কর তফসিল ২০১৫ জারি করে সরকার। ২০১৬ সালের ২ জানুয়ারি তা গেজেট আকারে প্রকাশিত হয় যা গত ২০১৫-১৬ অর্থ বছর থেকে তা কার্যকর করে সিলেট সিটি কর্পোরেশন সহ অন্যান্য কর্পোরেশনসমূহ। এর আগে ‘সিলেট সিটি কর্পোরেশন আদর্শ কর তফসিল আইন ২০০৫ এর খসড়া’ এর তালিকা অনুযায়ী ট্রেড লাইসেন্স ও নবায়ণ ফি আদায় করা হতো। নতুন আইন গেজেট আকারে প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই নতুন নিয়মে ফি আদায় করছে এসসিসি। যদিও শুরু থেকে সরকারের এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন ব্যবসায়ীরা। ফি আদায়ে প্রকাশিত গেজেট অনুযায়ী আদায়কৃত ফি’র পরিমাণ কয়েকগুণ বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে দাবি করেন মুকির হোসেন চৌধুরী। তিনি জানান, ২০০৫ সালের আদর্শ কর তফসিল অনুযায়ী জুয়েলারী দোকানের ফি নির্ধারিত ছিল এক হাজার টাকা। বর্তমানে তা বাড়িয়ে প্রকারভেদে ১০ হাজার টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। ফর্মেসী নবায়ন ফি আগে ৩শ’ টাকা হলেও বর্তমানে ২ হাজার থেকে ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা, কাপড়ের দোকান আগে ছিল ৩শ’ টাকা, বর্তমানে ২ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা, মোটর পার্টসের দোকান ৩শ’ থেকে বাড়িয়ে ২হাজার টাকা, মোটর ভেহিকেল শোরুম আগে ছিল ১হাজার টাকা, বর্তমানে তা বাড়িয়ে ১০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা হারে আদায় করা হচ্ছে। দর্জি দোকান ৩শ’ থেকে ২ হাজার টাকা, ফল বা সবজি দোকানও ৩শ’ থেকে ১ হাজার এবং বিউটি পার্লারের ট্রেড লাইসেন্স ফি ৩শ’ এর জায়গায় ২ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা আদায় করা হচ্ছে। মুকির হোসেন জানান, তার দায়েরকৃত রিটের প্রেক্ষিতে গত বছরের ৯ আগস্ট স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার প্রতি কারণ দর্শাও নোটিশ জারি করেন আদালত।