• ২৮শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১৩ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৫শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

চাঞ্চল্যকর সোহেল হত্যা মামলায় দুই জনের ফাাঁসি

sylhetsurma.com
প্রকাশিত এপ্রিল ৬, ২০১৭

স্টাফ রিপোর্টার:::: দক্ষিণ সুরমার গোটাটিকর এলাকার চাঞ্চল্যকর লন্ড্রি কর্মচারী সোহেল আহমদ হত্যা মামলায় দুই জনের ফাঁসি (মৃত্যুদন্ড) ও ৭ জনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি দন্ডপ্রাপ্ত আসামীদের ১০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে সিলেটের বিশেষ দায়রা জজ (জননিরাপত্তা বিঘœকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল) আদালতের বিচারক মো: মফিজুর রহমান ভূঞা এ রায় ঘোষনা করেন।  দন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হচ্ছে- সিলেট সদর উপজেলার ৭ নং মোঘলগাঁও ইউনিয়নের বানাগাঁও গ্রামের আব্দুল মন্নানের ছেলে কাজল (২৩) ও একই এলাকার মনফর আলী ওরফে মনু মিয়ার ছেলে ইসলাম ওরফে ইসলাম উদ্দিন (২২)। রায় ঘোষনার সময় দন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। খালাসপ্রাপ্তরা হচ্ছেন- সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার বাওনপুরের বদরুল (২৫), সিলেট সদর উপজেলার ৭ নং মোঘলগাঁও ইউনিয়নের বানাগাঁওয়ের কয়েছ (২২), একই এলাকার ছমরু মিয়া ওরফে আবু তাহের (২২), ময়না মিয়া (২২), হোসাইন ওরফে হোছন (২১), ছাইম উদ্দিন (২২) ও মানিক ওরফে আব্দুল মালিক (২৩)।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, ইসলাম উদ্দিনের বোন মিলন আক্তার মিলিকে বিয়ে করেছিলেন সিলেটের দক্ষিণ সুরমার গোটাটিকর এলাকার বাসিন্দা লন্ড্রীব্যবসায়ী সোহেল আহমদ (২৪)। ইসলাম উদ্দিন এ বিয়ে মেনে নেননি। এ ক্ষোভ থেকে ইসলাম তাঁর বন্ধু কাজলকে নিয়ে ২০১১ সালের ১৭ এপ্রিল রাতেরবেলা সোহেলকে শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে বানাগাঁও এলাকার ঢালুয়াবন্দ হাওরে নিয়ে যান। সেখানে ইসলাম ও কাজল মিলে সোহেলকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। পরে মরদেহ থেকে মস্তক বিচ্ছিন্ন করেন। মস্তকটি বানাগাঁও গ্রামের এক জনের পুকুরে ফেলে দিয়ে লাশে পেট্টোল দিয়ে পুড়িয়ে ফেলেন ঘাতকরা। পরদিন পুলিশ সোহেলের লাশটি ওই হাওর থেকে উদ্ধার করে। খবর পেয়ে সোহেলের পরিবার ওসমানী হাসপাতালের মর্গে গিয়ে তার লাশ সনাক্ত করেন। পুলিশ এ ঘটনায় ওইদিন কাজল, ইসলাম উদ্দিন ও বদরুলকে গ্রেফতার করে। পরে কাজলের তথ্য অনুযায়ী সোহেলের মস্তুকটি ওই পুকুর থেকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। এ হত্যাকান্ডের পেছনে শ্বশুরবাড়ির কেউ জড়িত থাকতে পারে-এ ধারণায় ইসলাম ও তাঁর বন্ধু কাজলসহ ৯ জনকে আসামি করে সোহেলের পিতা জয়নাল আবেদীন ১৯ এপ্রিল সিলেটের কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। পুলিশ ইসলাম ও কাজলকে গ্রেপ্তার করলে এক পর্যায়ে তাঁরা হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী প্রদান করে। ইসলাম তাঁর বোনকে বন্ধু কাজলের কাছে বিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। এ চাওয়া পূরণ না হওয়ায় দুজন মিলে সোহেলকে হত্যা করেন।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১১ সালের ২৬ জুন কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো: আবদুর রহিম মামলার তদন্ত করে আদালতে ইসলাম ও কাজলসহ ৯ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন এবং ২০১২ সালের ১৩ জুন থেকে এ মামলার বিচারকায্য শুরু করেন আদালত। দীর্ঘ শুনানী ও ৩০ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আসামী কাজল ও ইসলাম উদ্দিনকে ৩০২/৩৪ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে ফাঁসি (মৃত্যুদন্ড)  অপর ৭ আসামীকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়।  রায় ঘোষণার সময় আদালতে সোহেলের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রপক্ষের স্পেশাল পিপি এডভোকেট নওসাদ আহমদ চৌধুরী ও আসামীপক্ষে এডভোকেট নাহিদা চৌধুরী, এডভোকেট অশেষ কর ও এডভোকেট ফখরুল ইসলাম মামলাটি পরিচালনা করেন।