• ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২১শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

দুটি জঙ্গি আস্তানায় জিম্মি নেই কেউ ! ঘটনাস্থলে র‌্যাব আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী

sylhetsurma.com
প্রকাশিত মার্চ ২৯, ২০১৭

সিলেট সুরমা ডেস্ক ::: মৌলভীবাজারে দুটি জঙ্গি আস্তানার কোনওটিতে সাধারন মানুষকে জিম্মি করতে পারেনি জঙ্গিরা। জেলা পুলিশের একজন উর্ধবতন পুলিশ কর্মকর্তা তেমনটাই দাবি করে জানিয়েছেন, অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তার সাথে, জঙ্গিরা কোনওকিছু বুঝে ওঠার আগেই সাধারন বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ।  রাত থেকেই মৌলভীবাজার পৌরসভার বড়হাট এলাকার একটি ডুপ্লেক্স বাড়ি ও সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়নের সরকার বাজারের কাছে বাহাদুরপুর গ্রামের একটি একতলা বাড়ি ঘিরে ফেলে পুলিশ। প্রথমেই আশেপাশে সাধারণ মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়।
ওই পুলিশ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে  জানান, আগে থেকেই সদরের জঙ্গি আস্তানাটির খবর ছিলো গোয়েন্দাদের কাছে। সে অনুযায়ী তিন দিন রেকি করে আস্তানাটির বিষয়ে যখন নিশ্চিত হয়ে তা ঘেরাওয়ের প্রস্তুতি নেওয়া হয়, তখনই জানা যায় ফতেপুরের আস্তানাটির খবর। তখন সেখানে দ্রুত পুলিশ চলে যায় এবং দ্রুত কৌশলে আশে পাশের মানুষকে সরিয়ে নেয়। ভোররাতের দিকে পুলিশের অবস্থান টের পেয়ে জঙ্গিরা তৎপর হয়ে ওঠে। তারা গ্রেনেড ছুড়ে মারে ও গুলি চালায়।
আত্মরক্ষার্থে নিরাপদ অবস্থান নিয়ে পুলিশও গুলি চালাতে থাকে। একই সময়ে শুরু হয় দুই জঙ্গি আস্তানায় পুলিশের অভিযান।
তখন থেকেই উভয় আস্তানায় জঙ্গিরা বেশ কয়েকবার গ্রেনেড চার্জ করে। এছাড়া গুলি ছোড়ে। পাল্টা গুলি ছুড়ছে পুলিশও।
মৌলভীবাজার জেলা পুলিশের সাথে এই অভিযানে শুরু থেকেই রয়েছেন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সদস্যরা। এদিকে  দু’টি জঙ্গি আস্তানার অভিযানস্থলে এসেছে এলিট ফোর্স র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নসহ (র‌্যাব) আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য। এসেছে ফায়ার সার্ভিসও। জঙ্গি আস্তানা হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার পর থেকেই সেখানে মৌলভীবাজার পুলিশের পাশাপাশি আছে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট।
মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) দিনগত রাত থেকে মৌলভীবাজার শহরের বড়হাট ও সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়নের সরকার বাজারের কাছে ফতেহপুর গ্রামের ওই দু’টি জঙ্গি আস্তানা ঘেরাও করে রেখেছে পুলিশ। বড়হাটের আস্তানাটি একটি ডুপ্লেক্স বাড়িতে, আর ফতেহপুরের আস্তানাটি একটি একতলা বাড়িতে।
বেলা সাড়ে ১০টার পর ঘটনাস্থলে পৌঁছে র‌্যাব-৯ এর বিপুলসংখ্যক সদস্য। যোগ দেয় ফায়ার সার্ভিস। আগে থেকেই বাড়ি দু’টির আশপাশের লোকজনকে সরিয়ে দেয় পুলিশ। র‌্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য আরও বাড়ানোর পর অভিযানস্থল সংলগ্ন এলাকা থেকেও উৎসুক লোকজনকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে মৌলভীবাজারের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রাশেদুল ইসলাম জানান, দু’টি আস্তানাতেই জঙ্গিরা অবস্থান নিয়েছে। পুলিশ রাত থেকেই আস্তানা দু’টি ঘেরাও করে রাখে। ভোররাতের দিকে অভিযান শুরু করলে জঙ্গিরা গুলি করতে থাকে। সকালে একের পর এক গ্রেনেড ছুঁড়েও মারে তারা।
সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যেও দু’টি জঙ্গি আস্তানায় বিস্ফোরণ ও গুলির শব্দ শোনা যায়। সাড়ে ১০টার দিকে বড়হাটের ‍আস্তানার ভেতরে বিকট শব্দে তিনটি গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটায় জঙ্গিরা।
রাশেদুল ইসলাম বলেন, রাত থেকে কৌশলে আমরা এলাকাবাসীকে সরিয়ে নিতে পেরেছি। এখন জঙ্গিদের কব্জা করার সব চেষ্টা চলছে।
মৌলভীবাজারজুড়ে চলছে তুমুল বৃষ্টি। এরমধ্যেও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী জঙ্গিদের পাকড়াও করতে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান রাশেদুল।