সিলেট সুরমা ডেস্ক : ‘অপারেশন টোয়ালাইট’। পুরো শিববাড়ি এলাকার প্রকম্পিত গুলির শব্দে। বারুদের গন্ধ ছড়াচ্ছে বাতাসে বাসা-বাড়িতে। পটাশ-পটাশ, ধিড়িম-ধাড়িম বোমা ও গুলির শব্দ। কখনো থেমে থেমে, কখনো অনবরত গুলিবর্ষণ চলে। গত শনিবার সকাল ৮টা ২৮ মিনিটে ‘অপারেশন টোয়ালাইট’ শুরু থেকে এভাবেই চলে গুলিবর্ষণ ও বোমা বিস্ফোরণ। ফলে বারুদের গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে পুরো এলাকায়।
এরই মধ্যে জঙ্গি আস্তানা ‘আতিয়া মহল’র চারপাশের দেড় কিলোমিটারের অভ্যন্তরের বাসিন্দাদের বাড়ি থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। দিনে বা রাতে কখনোই থেমে নেই গুলির শব্দ। কখনো জঙ্গিদের ছোঁড়া বোমা বিস্ফোরণের শব্দে প্রকম্পিত হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা। এভাবে অভিযানের তিনদিন পেরিয়ে গতকাল সোমবার চতুর্থ দিনে গড়ায়।
স্থানীয়রা বলছেন, বাতাসে বারুদের গন্ধ ভেসে আসায় আমরা আতঙ্কে রয়েছি। মনে হয়, এই বুঝি গুলি ছুটে এলো। এমনটি বলেছেন শিববাড়ি সংলগ্ন জৈনপুর এলাকার বাসিন্দা পোল্ট্রি ব্যবসায়ী আব্দুল খালিক (৬৫)। তিনি বলেন, গত শুক্রবার ভোর থেকে আতিয়া মহল নামে উস্তার মিয়ার বাড়িটি ঘেরাও করে পুলিশ। পরদিন পরদিন শনিবার সকাল থেকে গুলিবর্ষণ ও বোমা বিস্ফোরণের শব্দ। আতঙ্কে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে অন্য এলাকায় আত্মীয়ের বাড়িতে অবস্থান করছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময়ও এভাবে গুলির শব্দ শুনেননি বলে মন্তব্য করেন। আব্দুল খালিকের মতো এভাবে বাড়ি ছাড়া শিববাড়ি সংলগ্ন জৈনপুর, তালুকদারপাড়া, মাঝেরহাট, পশ্চিমপাড়া, পৈত্যপাড়া, কিষণপুর ও পাঠানপাড়া এলাকার বাসিন্দারা।
শুক্রবার সকাল থেকে এসব এলাকায় গ্যাস সংযোগও বিচ্ছিন্ন রয়েছে বলে জানিয়েছেন শিববাড়ি এলাকার বাসিন্দা তাঁরা মিয়া। তিনি বলেন, নিজেদের ঘরবাড়ি থাকার পরও আমরা নির্বাসিত। এখন আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে অবস্থান করছি। প্রায় তিন কিলোমিটারের মধ্যে লোকজনকে চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না। এ কারণে এলাকার বাসিন্দারা সওদা করতেও যেতে পারছেন না। স্থানীয় নিহা রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী ছিদ্দেক আলী বলেন, অভিযানের কারণে ব্যবসা বন্ধ। দোকানে বসতে পারিনি, বারুদের গন্ধ আসে। কয়েকদিন ধরে আমরা এখন আতঙ্কে আছি। গতকাল সোমবার বেলা পৌনে ১১টায় একটি গ্রেনেড বিস্ফোরণের শব্দ প্রকম্পিত করে পুরো এলাকা।