সিলেট সুরমা ডেস্ক : সিলেটে জঙ্গি আস্তানায় অপারেশন ‘ টুইলাইট’ শুরু করেছে সেনা কমান্ডরা। লে. কর্নেল ইমরুল কায়েসের নেতৃত্বে এই বিশেষ অভিযানে অংশ নিয়েছেন সেনাবাহিনীর প্যারা-কমান্ডো সদস্যরা। সিলেট ১৭ পদাতিক সেনাবাহিনীর প্যারা-কমান্ডোদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ভবনের বাইরে রয়েছেন সোয়াত,পুলিশ, র্যাব, পিবিআই, ডিবি, এসবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কয়েক শত সদস্য।
শনিবার (২৫ মার্চ) সকাল ৮টা ২৮ মিনিটে দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি উস্তার মিয়ার মালিকানাধীন ভবন ‘আতিয়া মহলে’ এ অভিযান শুরু হয়। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) জেদান আল মুসা এ খবর নিশ্চিত করেন। ‘আতিয়া মহল’র চারতলা থেকে ২০ বাসিন্দাকে উদ্ধার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ১৩ জন পুরুষ এবং ৭ জন নারী রয়েছেন। দু’টি ভবনের সবক’টি ফ্লাটে ২৮টি পরিবারের লোকজন জিম্মি অবস্থায় রয়েছেন। ভেতরে থাকা লোকজনকে কিভাবে বের করে আনা যায়, সে চেষ্টায় রয়েছে সেনাবাহিনীর প্যারা-কমান্ডো সদস্যরা ।
অভিযানে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বিভিন্ন গ্রুপের রক্ত ও রক্তদাতাদেরও ব্যবস্থা করে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র। এর আগে পৌনে ৯টায় অভিযান শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে। আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শুরুতেই আতিয়া মহলের সামনের বাসা থেকে আটকে পড়া লোকজনকে উদ্ধার করা হবে। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার রোকন উদ্দীর এ ব্যাপারে জানান, ‘এই মুহূর্তে আতিয়া মহল সেনা কমান্ডোদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তারা অভিযান পরিচালনা করেছেন।’
গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত থেকে আতিয়া মহল নামক ভবনটি ঘিরে রেখেছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
পুলিশের আহ্বানের পরও আত্মসমর্পণে সাড়া না দেওয়ায় অভিযানে নামে সেনাবাহিনীর প্যারা-কমান্ডো ইউনিট।
শনিবার সকাল আটটার দিকে পৌঁছে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো ফোর্স। ঘটনাস্থল থেকে এক কিলোমিটার দূরে এলাকার জনসাধারণ ও সংবাদকর্মীকে সরে যেতে বলা হয়েছে। এলাকার বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে
ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি, পুলিশের সাঁজোয়া যান, কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স রাখা হয়েছে।
উল্লেখ্য,জঙ্গিরা অবস্থান করছে, এমন তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে পাঁচতলা বাড়িটি ঘেরাও করে পুলিশ। গতকাল দিনভর বারবার মাইকে আহ্বান জানিয়েও ভেতরে থাকা জঙ্গিদের আত্মসমর্পণ করাতে পারেনি পুলিশ। উল্টো ভেতর থেকে গুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়। অভিযান চালাতে ঢাকা থেকে পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট সোয়াতের একটি দল গতকাল বিকেলে সিলেটে পৌঁছায়। রাতভর সোয়াত ও স্থানীয় পুলিশ বাড়িটি ঘিরে রাখে।
সন্ধ্যার পর ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর দুটি গাড়ি যায়। পুলিশ কমিশনার গোলাম কিবরিয়া গতকাল জানান, পুলিশকে সহায়তা দিতে সেনাসদস্যরা এসেছেন।
পুলিশের ধারণা, আতিয়া মহল নামের বাড়িটির নিচতলার একটি ফ্ল্যাটে সন্দেহভাজন জঙ্গিরা অবস্থান করছে। ভেতরে একজন নারী থাকার কথা নিশ্চিত হলেও মোট কতজন আছে, সেটা জানা যায়নি। তবে পুলিশের ধারণা, ভেতরে নব্য জেএমবির গুরুত্বপূর্ণ নেতা মাইনুল ওরফে মুসা রয়েছেন।