সিলেট সুরমা ডেস্ক ::: নগরীর ছোট বড় সব বাজারেই এখন নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগের ব্যাপক ছড়াছড়ি। কিন্তু দেখার কেউ নেই। নিষিদ্ধ এই বস্তুটি জব্দ করতে আগে ডিবি পুলিশ তৎপর ছিল। রহস্যজনক কারণে গত দুবছরে সিলেটে বড় ধরনের কোনো পলিথিন ব্যাগের চালান জব্দ করেনি পুলিশ। অথচ রাতের আঁধারে সিলেটে প্রবেশ করছে ট্রাক বোঝাই পলিথিন। এতে ড্রেনে-মাটিতে মিশে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, সিলেটের নিষিদ্ধ পলিথিনের মূল উৎস হচ্ছে লালদিঘিরপার হকার্স মার্কেট ও কালীঘাট। এখানে একটি কালোবাজারি চক্র ঢাকা থেকে পলিথিন ব্যাগের চালান সিলেটে আনছে। ঢাকা থেকে ট্রাক বোঝাই করে পলিথিনের চালান প্রথমে দক্ষিণ সুরমার ফরিদপুরের রাস্তার মুখের একটি সেন্টার ও বদিকোনার সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক লাগোয়া মেঠোপথের পাশের এক বাড়িতে মজুদ করা হয়। আবার কখনো এই পলিথিন চালান টুকেরবাজার এলাকার তেমুখী সেতুর নিচের একটি বাড়িতেও মজুদ রাখা হয়। বর্তমানে সরাসরি ঢাকা থেকে নিষিদ্ধ এ পলিথিন সিলেটে এসে প্রবেশ করছে। কিন্তু যখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা থাকে, তখন বড় বড় চালানগুলো মৌলভীবাজার ও দক্ষিণ সুরমার কুশিঘাটের এক বাড়িতে গুদামজাত করা হয়। পরে এসব চালান থেকে ছোট ছোট পিকআপে করে নগরীর কালীঘাটের কয়েকটি দোকানে ও লালদীঘিরপার হকার্স মার্কেটে মুরগির ফিডের বস্তায় পুরে দোকানগুলোতে এনে রাখা হয়।
পুলিশ সূত্র জানায়, সিলেটে পলিথিনের ৭ গডফাদারদের এক তালিকা আছে পুলিশের কাছে। অতীতে এই তালিকাভুক্তরা একাধিকবার হাতে আটক হয়েছেন। নগরীর কালীঘাটে প্রবেশের সময় ট্রাকসহ জব্দ হয় পলিথিনের চালান। ওই সময় এসব গডফাদার অন্ত:কলহে জড়িয়ে পড়ায় একজন অন্যজনের চালানের খবর পৌঁছে দিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে। ধরপাকড় আতঙ্কে ও নিজেদের কোন্দলে তালিকাভুক্ত পলিথিনের চোরাকারবারিরা নগর ছেড়েছিলেন। গত দুবছর ধরে আবার তারা সিলেটে ফিরে এসেছেন। আইনশঙ্খলা বাহিনীর কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার সঙ্গে সোর্সদের মাধ্যমে মাসোহারায় আঁতাত করে এরা পলিথিন ব্যবসায় ফের সক্রিয় হয়েছেন। নগরীতে এখন দেদারসে মিলছে পলিথিন ব্যাগ। বাজারে মাছ-তরকারির সঙ্গে প্রকাশ্যে এসব পলিথিন ছড়াচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়। ড্রেনে-মাটিতে মিশে পরিবেশের ক্ষতি করছে। কিন্তু টনক নড়ছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও পরিবেশ অধিদপ্তরের।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এসএমপির গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার সারোয়ার শামিম জানান, পলিথিনের চোরাকারবারিদের তথ্য সংগ্রহ চলছে। পুরোনো গডফাদারদেরও শনাক্ত করে তাদের সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। শিগগিরই এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে গোয়েন্দা পুলিশ।