সিলেট সুরমা ডেস্ক ::: নিজের উপর হামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন কলেজছাত্রী খাদিজা বেগম নার্গিস। বুধবার তাকে হত্যা চেষ্টা মামলার রায়ে বদরুল আলমকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। সিলেটের মহানগর দায় জজ আদালতে রায় প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন না খাদিজা। পরে গণমাধ্যমের কাছে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, এই রায়ের আমি সন্তুষ্ট। দ্রুত মামলার বিচারকার্য শেষ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী, পুলিশসহ বিচারবিভাগের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা। একইসাথে তাঁর চিকিৎসার সাথে জড়িত সকল চিকিৎসকের প্রতি ধন্যবাদ জানান মৃত্যুরমুখ থেকে ফিরে আসা এই কলেজ ছাত্রী। খাদিজা বলেন, আমার মতো আর কোনো নারী যেনো এভাবে হামলার শিকার না হন। সকলে যেনো নিরাপদ থাকেন, এই প্রত্যাশা করি। সুস্থ হয় নারীদের জন্য কাজ করতে চান বলেও জানান তিনি। খাদিজা বলেন, আমি আবার পড়াশুনা শুরু করতে চাই। আমার স্বপ্ন পূরণ করতে চাই। সমাজে আলো ছড়াতে চাই।
রায় ঘোষণার দিন বাড়িতে ছিলেন না খাদিজার বাবা মাসুক মিয়া। কর্মক্ষেত্র সৌদি আরব ফিরে গেছেন তিনি। বড় ভাইও চীনে। সেখানকার মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী তিনি। মা ও ছোট ভাইকে সাথে নিয়ে নিজ বাড়িতে সাংবাদিকদের কাছে এমন কথা বলেন খাদিজা। খাদিজার মা মনোয়ারা বেগম এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করলেও তার ভাই শরনান হক শাহীন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি সন্তুষ্ট না। কারণ ওর ফাঁসি হওয়া উচিত ছিল। তার যদি ফাঁসি হত, তাহলে আমি সন্তুষ্ট থাকতাম।’
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক বদরুল এক সময় খাদিজাদের বাড়িতে লজিং মাস্টার হিসেবে থাকতেন। তখন থেকেই খাদিজাকে তিনি উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন।
গত বছর ৩ অক্টোবর সিলেটের এমসি কলেজ কেন্দ্রে স্নাতক পরীক্ষা দিয়ে বের হয়ে হামলার শিকার হন সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের স্নাতক শ্রেণীর ছাত্রী খাদিজা। বদরুলের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তার মাথার খুলি ভেদে করে মস্তিষ্কও জখম হয়।
খাদিজাকে কোপানোর রোমহর্ষক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে তিন দফা অস্ত্রোপচারের পর মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসেন খাদিজা। তবে শরীরের বাঁ পাশ স্বাভাবিক সাড়া না দেওয়ায় তাকে সাভারের সিআরপিতেও তিন মাস চিকিৎসা নিতে হয়।
চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার পাঁচ মাস পর আজ রায়ে একমাত্র আসামী বদরুল আলমের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন সিলেটের মহানগর দায়রা জজ আকবর হোসেন মৃধা।