জালিয়াতকারী, পুলিশের তালিকাভ’ক্ত অপরাধী নজরুল গংদের হয়রানী থেকে রক্ষার আর্তি জানিয়েছেন সুনামগঞ্জের ছাতক এলাকাবাসী। শনিবার জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে করে জালিয়াতচক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনসহ সকল মহলের সহযোগীতা চেয়েছেন ছাতকের বৌলা গ্রামের মরহুম আব্দুর রহিমের ছেলে পাথর ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য আব্দুল ওদুদ।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, নিজের অপকর্ম ঢাকতে ছাতকের ব্যবসায়ী, মুরব্বী ও সালিশ ব্যাক্তিগণের বিরুদ্ধে বানোয়াট কাল্পনিক মনগড়া ভুল তথ্য দিয়ে ইতোপূর্বে সংবাদ সম্মেলন করেছেন একই গ্রামের মৃত নুরুল হকের ছেলে ভ’মি জালিয়াতকারী নজরুল হক।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, সম্প্রতি ছাতক ভূমি অফিসে বেশ কয়েকটি নামজারির কাগজ জাল ধরা পড়ে। তখন উপজেলা প্রশাসন জালিয়াতকারী চক্রকে ধরতে নানা রকম কৌশল অবলম্বন করে। ১৭ ফেব্রুয়ারি ছাতকের সহকারি কমিশনার (ভূমি) শেখ হাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা নজরুলের বাড়িতে অভিযান চালায়। তবে নজরুল পালিয়ে গেলেও তার কক্ষ থেকে ভূমি জাল-জালিয়াতি সংক্রান্ত কাগজ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নাম-পদবীসহ জাল সীলমোহর, জাল ডিসিআর কপি, ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের জাল রশিদ উদ্ধার করা হয়। এ ব্যাপারে ভূমি অফিসের পক্ষ থেকে নজরুলকে আসামী করে মামলা করা হয়। পরদিন ১৮ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন সংবাদপত্রে এ খবর গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করা হয়। অসংখ্য ভুয়া নামজারী দিয়ে নজরুলের নেতৃত্বে জালিয়াতচক্র সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে তাদের তৎপরতা চালিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার তথ্য প্রমাণ পায় অভিযানিক দল। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে প্রকৃত সত্য ঘটনা তুলে ধরে তিনি বলেন, ছাতক শহরের প্রতারক ও জালিয়াতি চক্রের মূলহোতা নজরুল একাধিকবার চোরাই মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন সময় আটক হয়। এমনকি ছাতক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় অভিযুক্ত নজরুল কয়েকটি ডাকাতি মামলায় ইতোমধ্যে কারাবরণ করেছে।
তথ্য প্রমাণ হিসেবে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার মীরেরচর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা শফিক আহমদের সাড়ে ২৬ শতক জমি রয়েছে ছাতক শহরের মন্ডলীভোগ এলাকায়। বাড়ি তৈরীর জন্য সাউথইস্ট ব্যাংক সিলেট শাখা থেকে প্রায় ১২ লাখ টাকা ঋণ নেন। ২০০০ সালে তিনি পৌরসভার অনুমোদন সাপেক্ষে বাড়ি নির্মাণ কাজ শুরু করেন। ২০১০ সালে এসে বাড়ির কাজ অসমাপ্ত রেখেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন। কিছুদিন পর তার পরিবারের সদস্য ব্যাংকের ঋণের বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত হন। ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ এবং পরিবারের অর্থনৈতিক সংকটের কারণে টাকার প্রয়োজন হওয়ায় মুক্তিযোদ্ধা শফিক আহমদের স্ত্রী সুরতুন নেছা ও জো¯œা বেগম, মেয়ে হেনা বেগম ও রোশনা বেগম আমি আব্দুল অদুদ গংকে ২০১৫ সালে স্থায়ী আমমোক্তার নিযুক্ত করেন। কিন্তু নজরুল হক ও তার সঙ্গীয় ভূমি জালিয়াত চক্র শফিক আহমদের সাড়ে ২৬ শতক ভ’মি আত্মসাতের চেষ্টায় জাল কাগজ সৃজন করে অপতৎপরতা চালায়। এ নিয়ে ২০১৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর মুক্তিযোদ্ধা শফিক মিয়ার মেয়ে হেনা বেগম বাদী হয়ে সুনামগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নজরুল হক, বিলাল আহমদ গংদের বিরুদ্ধে দরধাস্ত মামলা (নং- ১০৪/২০১৩) দায়ের করেন। এ সংক্রান্ত বিষয়ে উচ্চ আদালতের রায়ও রায় নজরুল হক গংদের বিপক্ষে যাওয়ায় গত ২৫ ফেব্রুয়ারি তারা সংবাদ সম্মেলনে সঠিক তথ্য গোপন করে ওদুদসহ অন্যান্য মুরব্বি-ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করেছে। তাদের এমন হয়রানি ও মিথ্যাচার থেকে ছাতকের মানুষকে রক্ষায় সংবাদ সম্মেলনে প্রশাসনসহ সকল মহলের সহযোগীতা কামনা করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ভ’মির মালিক মরহুম শফিক মিয়ার মেয়ে হেনা বেগম, নাতনি আয়শা খাতুন, ফারুক মিয়া ও আবুল হোসেন। প্রেস-বিজ্ঞপ্তি