• ২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২৫শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

জাফলংয়ে ব্যক্তি মালিকানা জমিতে পাথর খেকোদের তান্ডব

sylhetsurma.com
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৭

সিলেট সুরমা ডেস্ক ::: গোয়াইনঘাটের জাফলংয়ে এবার এক প্রবাসীর ব্যক্তি মালিকানা জমিতে পাথরখেকোদের তান্ডব চলছে। প্রবাসীর প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের জোরপূর্বক সরিয়ে দিয়ে এবং পাথর উত্তোলনে উচ্চ আদালতের আদেশকে অগ্রাহ্য করে ওই পাথরখেকো চক্র নির্দ্বিধায় পাথর উত্তোলন করে পরিবেশকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে।

রবিবার বেলা ২ টায় সিলেট জেলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এমন অভিযোগ করেছেন সিলেট নগরীর ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের ঝেরঝেরি পাড়াস্থ ৭ নম্বর এভারগ্রীণ বাসার বাসিন্দা বর্তমানে প্রবাসে বসবাসরত দেলোয়ার হোসেনের স্বজনরা।

সংবাদ সম্মেলনে দেলোয়ার হোসেনের স্বজনদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তার ভাতিজা চৌধুরী। তিনি বলেন- গোয়াইনঘাট থানার অন্তর্গত চৈলাখেল ২য় খন্ড মৌজায় তার চাচা দেলোয়ার হোসেনের ব্যক্তি মালিকানাধীন ১৪ দশমিক ৫৬ একর ভূমি রয়েছে। তিনি উক্ত ভূমির খরিদাসূত্রে মালিক।

সারাদেশের পাহাড় টিলা ও জাফলংয়ে অবৈধ বোমা মেশিনসহ বিভিন্ন পন্থায় অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন বন্ধে উচ্চ আদালতের নির্দেশের পর থেকে সেই নির্দেশকে শ্রদ্ধা জানিয়ে, মান্য করে তার চাচা দেলোয়ার হোসেনের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান মেসার্স পিয়াইন স্টোন ক্রাশার মিল বন্ধ রয়েছে।

রাজা চৌধুরী বলেন- ‘‘এই বন্ধ অবস্থায় উক্ত প্রায় ১৫ একর ভূমিতে পাথর থাকায় ৮/১০ পাথর খেকো গত ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করে যাচ্ছে। ওই সন্ত্রাসীচক্র ১৩ ফেব্রুয়ারি সকালে আমার চাচার প্রতিষ্ঠানের দু’জন ম্যানেজার ও কর্মচারীদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে তাড়িয়ে দিয়ে সেখান থেকে পাথর উত্তোলন করছে। তারা আদালতের সকল নিষেধাজ্ঞাকে অবজ্ঞা আর অমান্য করে আমার চাচার মালিকানাধীন ভূমি থেকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে বোমা মেশিন, শ্যালো মেশিন, পে-লোডার, স্ক্যা-ভেটর দিয়ে পাথর উত্তোলন করে পরিবেশের ক্ষতি করে যাচ্ছে।’’

এই সন্ত্রাসীরা হচ্ছে জাফলংয়ের মামার দোকানের মৃত আছদ্দর আলীর ছেলে ফয়জুল ও কামরান, মামার দোকানের (বল্লাপুঞ্জি) মৃত আলতাফ আলীর ছেলে সুমন, কান্দুবস্তির মৃত ইলিয়াসের ছেলে তাহের, একই এলাকার মৃত ছিফাত আলীর ছেলে আব্দুস সালাম, মামার দোকানের সুমন উরফে জামাই সুমন, বি-বাড়ীয়ার নাসিরনগরের সিদ্দিক আলীর ছেলে বর্তমানে মামার দোকানের বাসিন্দা মতিউর রহমান ও একই এলাকার আব্দুর রহমান ও মামার দোকানের মুজিব।

লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়- গত ১৪ ফেব্রুয়ারি দেলোয়ার হোসেনের প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার তরিক উল্লাহ সন্ত্রাসী চক্রের পাথর উত্তোলনসহ সম্পূর্ণ বিষয় অবগত করে এবং সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র সংযুক্ত করে গোয়াইনঘাট থানায় একটি সাধারণ ডায়রি (জিডি) করতে লিখিত আবেদন নিয়ে যান। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য অজ্ঞাত কারণে গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ উক্ত সাধারণ ডায়রি গ্রহণ করেনি।

এতে নিরুপায় হয়ে ম্যানেজার তরিক উল্লাহ ১৬ ফেব্রুয়ারি গোয়াইনঘাট থানা নির্বাহী অফিসারের কাছে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের বিষয়টি লিখিতভাবে জানান। কিন্তু প্রশাসন এখনো এসব দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে, পাথর খেকোদের বিরুদ্ধে এবং মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে পাথর উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে কোনরূপ আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ না করেনি।

রাজা চৌধুরী জানান- ‘থানা, প্রশাসনসহ কোনো মাধ্যমে কোন সমাধান না পাওয়ায় পাওয়ায় তাই তারা সাংবাদিকদের মাধ্যমে বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের প্রতি, প্রশাসনের প্রতি আবারো তুলে ধরছেন। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তা ও দায়িত্বশীলদের প্রতি তাদের জোরালো দাবি অবৈধ পাথর উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হোক।’

পাশাপাশি গোয়াইনঘাট থানার অন্তর্গত চৈলাখেল ২য় খন্ড মৌজার জে এল নং এস, এ- ১০৩, আর, এস/বি, এস-৮১, খতিয়ান নং- এস, এ-১০০, আর, এস/বি, এস -১৭৬, দাগ নং-এস, এ-২৬৪, ২৬৩, ৩০৩, ২৭৭, ২৭৫, ২৭৬, ৩০৩, ৩০৬, ৩০৭, ২৯০, ২৮৯, ২৮৫, ২৮৬, ৩২৭, ২৯৩, আর, এস/বি, এস-১৪৪, ১৪৫, ৪০৪, মোট ১৪ দশমিক ৫৬ একর ভূমি থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন কারীদের উচ্ছেদ করা হোক।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দেলোয়ার হোসেনের ভাতিজা রাজা চৌধুরী। উপস্থিত ছিলেন দেলোয়ার হোসেনের ছেলে ফাহিম হোসেন, ম্যানেজার তরিক উল্লাহ ও ইলিয়াস।