স্টাফ রিপোর্টার
তারাপুর চা বাগান দখলে প্রতারণার মাধ্যমে দেবোত্তর সম্পত্তিতে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের মাধ্যমে হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ মামলায় রাগীব আলীসহ ছয় আসামিদের বিরুদ্ধে আরো ৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
বুধবার আদালতে সাক্ষী দিলেন যারা তারা হচ্ছেন- হবিগঞ্জ বাহুবল থানার পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) মোঃ মনিরুজ্জামান, সিলেট পিবিআই’র পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ), দিলীপ কান্ত নাথ সিলেট রেভিনিউ ডেপুটি কারেক্টরেটের মুহাঃ মাসুম বিল্লাহ ও নরসিংদী জেলার শিবপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক সৈয়দুজ্জামান।
এদিকে, পলাতক থেকে পত্রিকা সম্পাদনা করে প্রতারণার অভিযোগে করা এক মামলায় ‘দৈনিক সিলেটের ডাক’-এর প্রকাশক ও সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি সিলেটের শিল্পপতি রাগীব আলী এবং তার ছেলে পত্রিকাটির সাবেক সম্পাদক আব্দুল হাইয়ের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেছে আদালত। বুধবার সিলেট মুখ্য মহানগর হাকিম মোঃ সাইফুজ্জামান হিরোর আদালতে তারা সাক্ষ্য প্রদান করেন। এর আগে এ মামলায় ১৬ জন সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। আলোচিত এই মামলায় এ নিয়ে ২০ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হল।
এ মামলার আসামিরা হলেন, রাগীব আলী, তার ছেলে আবদুল হাই, জামাতা আবদুল কাদির, মেয়ে রুজিনা কাদির, রাগীব আলীর আত্মীয় মৌলভীবাজারের দেওয়ান মোস্তাক মজিদ, তারাপুর চা বাগানের সেবায়েত পংকজ কুমার গুপ্ত। আদালতের এপিপি মাহফুজুর রহমান জানান, আদালতে ৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ নিয়ে মোট ২০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ২৩ ফেব্রুয়ারী।
সিলেটের তারাপুর চা-বাগান বন্দোবস্তে ভূমি মন্ত্রণালয়ের স্মারক জালিয়াতির সংক্রান্ত মামলায় রাগীব আলী ও তার ছেলে আবদুল হাইয়ের বিরুদ্ধে ১৪ বছর করে কারাদন্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।
এদিকে, বুধবার সিলেটের মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক সাইফুজ্জামান হিরো শুনানি শেষে পলাতক থেকে পত্রিকা সম্পাদনা মামলার চার্জ গঠনের আদেশ দেন। গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর তাদের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন নগরীর উপশহরের বাসিন্দা ও ছাতক প্রেসক্লাবের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য গিয়াস উদ্দিন তালুকদার।
পলাতক থেকে সম্পাদনাজনিত প্রতারণার জন্য রাগীব আলীর ৫৮ বছর ও তার ছেলে আবদুল হাইয়ের ২৯ বছরের কারাদন্ডের আবেদন করেন মামলার বাদি। ওই দিন মামলাটি আমলে নিয়ে দন্ডবিধির ৪১৭ ধারায় তাদের বিরুদ্ধে সমন জারির আদেশ দেন বিচারক। তবে সমন পাওয়ার পর জবাব না দেওয়ায় পরের মাসে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
মামলায় বাদি পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন এডভোকেট শহীদুজ্জামান চৌধুরী, এডভোকেট আবুল হাসান, এডভোকেট সফিকুল ইসলাম, এডভোকেট সাইফুল ইসলাম, এডভোকেট সৈয়দ মুজিবুল হক, ও এডভোকেট শহীদুল হক শাহীন।
মামলার বাদি তার আরজিতে উল্লে¬খ করেন, কোনো পলাতক আসামি আইনের সুবিধাভোগী হতে পারে না। সংবাদপত্র একটি আইনি প্রকাশনা। সিলেটের ডাক-এর সম্পাদক ও প্রকাশক আদালতে আত্মসমর্পণ না করে স্বীয় নাম ব্যবহার করে পত্রিকা প্রকাশ করতে পারেন না। আইন লঙ্ঘন করে নাম ব্যবহার করে পাঠকদের সঙ্গে ফাঁকিবাজি ও প্রতারণা করা হচ্ছে। গত ১১ আগস্ট থেকে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাগীব আলী ও তার ছেলে আবদুল হাই তাদের নাম যুক্ত করে দৈনিক সিলেটের ডাক প্রকাশক্রমে প্রতারণার অপরাধ করে চলেছেন। পলাতক অবস্থায় সম্পাদনাজনিত প্রতারণার জন্য আবদুল হাই ২৯টি সংখ্যা প্রকাশ করে ২৯টি শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। অন্যদিকে রাগীব আলী প্রকাশক ও মুদ্রক হিসেবে দ্বৈত সত্ত্বায় প্রতিদিন দুটি করে অপরাধের দায় বহন করায় অপরাধের পরিমাণ দাঁড়ায় ৫৮টি।
প্রতিদিনের অপরাধের জন্য রাগীব আলীর ৫৮ বছর ও তার ছেলে আবদুল হাইয়ের ২৯ বছর কারাদন্ডের আবেদন করেন বাদী।